যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাওয়ার পথে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন আজমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে বন্দর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ইমিগ্রেশন পুলিশ।

গ্রেপ্তার শাহাবুদ্দিনের নামে গোপালগঞ্জ ও যাত্রাবাড়ী থানায় একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ সময় শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ছিলেন। স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ সাড়ে ১১টার দিকে শাহাবুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী ভারতে যাওয়ার জন্য বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আসেন। কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের পর যাত্রাবাড়ী ও গোপালগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা থাকার বিষয়টি জানতে পেরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। তবে তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াছ মুন্সী প্রথম আলোকে বলেন, বেনাপোল দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ ও যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা আছে। তাঁকে গোপালগঞ্জ সদর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এখন বেনাপোল বন্দর থানার হাজতে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে গোপালগঞ্জ থেকে পুলিশের একটি দল বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর গ প লগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে কন্যাসন্তানকে স্বাগত জানিয়ে গ্রামজুড়ে ফলের গাছ বিতরণ

নিজেদের ঘর আলো করে আসা কন্যাসন্তানকে স্বাগত জানাতে গ্রামজুড়ে বাড়ি বাড়ি বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ গাছের চারা উপহার দিয়েছেন এক দম্পতি। গতকাল শুক্রবার ও আজ শনিবার গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের মধ্যে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, বেল, কতবেল, কালো জাম, সফেদা, আপেল কুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা তুলে দেন এই দম্পতি।

সন্তানকে স্বাগত জানিয়ে ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ নিয়েছেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কালশিরা গ্রামের মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম ও তাঁর স্ত্রী সাথী ঢালী।

চলতি বছরের ২০ মে এই দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় এক কন্যাসন্তান। নাম রাখা হয় সম্প্রীতি ব্রহ্ম। সন্তানের জন্মের আনন্দকে শুধু নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সমাজ ও প্রকৃতির সঙ্গে ভাগ করে নিতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান সম্প্রীতির মা–বাবা।

মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম বলেন, ‘সম্প্রীতির জন্মের পর আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিই। আমাদের মেয়ে যে গ্রামে বড় হবে, সেই গ্রামের আলো-বাতাস যেন নির্মল থাকে—এই ভাবনা থেকেই এই উদ্যোগ। গাছগুলো যেমন আমাদের সন্তানের সঙ্গে বড় হবে, তেমনি একদিন ফলের ছায়ায় ভরে উঠবে আমাদের গ্রাম। আমরা চাই, আমাদের মেয়ের জন্ম যেন শুধু আমাদের আনন্দেই সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং প্রকৃতি ও সমাজের জন্যও কিছু রেখে যায়।’

সাথী ঢালী বলেন, ‘এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমরা একটু একটু করে টাকা জমিয়েছি। এর সঙ্গে সন্তান জন্মের পর বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে পাওয়া উপহারের টাকা মিলিয়ে আমরা গাছগুলো কিনেছি।’

কালশিরা গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা নারদ রায় বলেন, মাধব তাঁদের গ্রামের সবার কাছের মানুষ এবং অত্যন্ত প্রিয়। সবার কাছে তিনি জ্ঞানের বাতিওয়ালা নামে পরিচিত।

নিজেদের বাড়িতে তিনি একটি পাঠাগার গড়ে তুলেছেন। সপ্তাহে দুই দিন তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই দেন, সবাইকে বই পড়তে উৎসাহিত করেন। কেউ পড়াশোনায় সমস্যায় পড়লে সাহায্য করেন। এবার মেয়ের জন্ম উপলক্ষে তিনি যে গাছ বিতরণ করলেন, তাতে গ্রামের পরিবেশ যেমন সমৃদ্ধ হবে, তেমনি শিশু জন্মের আনন্দটাও সমাজের সঙ্গে ভাগ হলো। তাঁর মতো করে সবাই ভাবলে দেশের ভালো হতো।

২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে চিতলমারী সদর ইউনিয়নের কালশিরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাখন লাল ব্রহ্মর ছেলে মাধব চন্দ্র ব্রহ্মর সঙ্গে রায়গ্রামের অমল ঢালীর মেয়ে সাথী ঢালীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর নিজেদের বউভাতের খরচ বাঁচিয়ে এলাকার স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ করেন এই দম্পতি। বাড়িতে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বই বিতরণ ও বই পড়ায় উৎসাহিত করতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণসহ নানা উদ্যোগ নেন তাঁরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ