অপ্রত্যাশিত নাটকীয়তা আর দুর্দান্ত ফুটবলের এক রাত। ঠিক এমনই এক স্মরণীয় সন্ধ্যায় ইংল্যান্ডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে সেনেগাল। মঙ্গলবার (১০ জুন) সিটি গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে এই জয়ের মধ্য দিয়ে আফ্রিকার কোনো দেশ প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডকে হারালো। যা ২২ ম্যাচের মধ্যে একেবারেই অভূতপূর্ব ঘটনা।

ম্যাচের শুরুটা ছিল ইংল্যান্ডের জন্য স্বপ্নের মতো। ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই অধিনায়ক হ্যারি কেইনের গোলে এগিয়ে যায় থ্রি লায়নসরা। দর্শকদের মধ্যে তখন জয়ের স্বপ্ন বোনা শুরু হয়ে গেছে। তবে আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন সেনেগাল ছিল সেই স্বপ্নভঙ্গের জন্য প্রস্তুত।

ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সেনেগাল। ৪০তম মিনিটে নিকোলাস জ্যাকসনের নিখুঁত ক্রসে গোল করেন ইসমাইলা সার। নতুন কোচ থমাস টুখেলের অধীনে এটিই ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা প্রথম গোল। যা টিমের রক্ষণভাগে দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়।

আরো পড়ুন:

দারুণ জয়ে বিশ্বকাপে ব্রাজিল

কলম্বিয়ার সঙ্গে ১০ জনের আর্জেন্টিনার নাটকীয় ড্র

এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরে আসার মরিয়া চেষ্টা চালায় ইংল্যান্ড। পিছিয়ে থাকার সময় জুদ বেলিংহ্যাম বল জালে পাঠালেও ভিএআর রিপ্লেতে আগের মুহূর্তে হ্যান্ডবলের প্রমাণ মেলায় তা বাতিল হয়ে যায়। ফলে হতাশা আরও বেড়ে যায় স্বাগতিক শিবিরে।

৬২তম মিনিটে সেনেগালকে এগিয়ে দেন হাবিব দিয়ারা। আর ম্যাচের যোগ করা সময়ে বদলি খেলোয়াড় চেইখ সাবালি গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে দেন ৩-১-এ। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই ইংলিশ দর্শকদের অসন্তোষ ধ্বনিতে ভরে ওঠে গোটা গ্যালারি।

এই জয়ের ফলে টানা ২৪ ম্যাচে অপরাজিত রইল সেনেগাল। যা তাদের ধারাবাহিকতা এবং দলীয় সংহতির এক উজ্জ্বল প্রমাণ। অন্যদিকে, টুখেলের অধীনে প্রথম হার নিয়েই ইংল্যান্ডে কোচিং অধ্যায় শুরু হলো, যা ভক্তদের মুখে হাসি নয়, বরং ভ্রু কুঁচকে দিয়েছে।

এই ঐতিহাসিক জয় শুধু সেনেগালের ফুটবল ইতিহাসে একটি সোনালি অধ্যায় হিসেবেই যুক্ত হলো না, বরং আন্তর্জাতিক মঞ্চে আফ্রিকান ফুটবলের ক্রমবর্ধমান শক্তির স্পষ্ট বার্তাও দিল বিশ্বকে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ