উদ্বোধনের আগেই ৩৩ লাখ টাকার কালভার্টে ভাঙন
Published: 14th, June 2025 GMT
নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে মাত্র দুই সপ্তাহ আগে। এখনো উদ্বোধন করা হয়নি। অথচ এরই মধ্যে ভাঙন দেখা দিয়েছে ৩৩ লাখ টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত একটি কালভার্টে। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নে ঘটেছে এমন ঘটনা। চরম্বা ইউনিয়নের নোয়ারবিলা ও রাজঘাটা এলাকার সীমান্তে ওসমানাবাদ সড়কের করমুর ছড়া খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এই কালভার্ট।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে তিন মাস আগে এই বক্স কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কালভার্টটির দৈর্ঘ্য ৩০ ফুট এবং প্রস্থ ১২ ফুট। দুই সপ্তাহ আগে কালভার্টটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। কালভার্ট নির্মাণে ব্যয় হয় ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৯৫১ টাকা।
কালভার্টটির নির্মাণকাজ পরিচালনার দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মা এন্টারপ্রাইজ। তবে প্রতিষ্ঠানটির হয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন স্থানীয় ঠিকাদার ও চরম্বা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিন।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে ৩ কিলোমিটার উত্তরে বার আউলিয়া গেট। সেখান থেকে বার আউলিয়া সড়ক ধরে ১১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে গেলেই চরম্বা নাফারটিলা বাজার। সেখান থেকে আরও ৪০০ মিটার উত্তরে গিয়ে ডানে কওমি মাদ্রাসা রোড নামে পরিচিত একটি গ্রামীণ সরু সড়ক। সেটি ধরে ৫০০ মিটার পূর্বে গেলেই ওসমানাবাদ সড়কের শুরুতে সদ্য নির্মিত কালভার্টটি চোখে পড়ে।
কালভার্টটি নির্মাণে অনিয়ম হয়ে থাকতে পারে। তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হোক—মনির উদ্দিন, সদস্য (৯ নম্বর ওয়ার্ড), চরম্বা ইউনিয়ন পরিষদগত বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালভার্টটির উত্তর পাশের প্রতিরক্ষাদেয়ালসহ পিলারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ওই অংশ সংযোগ সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন। সরেজমিনে কথা হয় কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে। তাঁরা বলেন, নির্মাণকাজ শেষ করার পর গত মঙ্গলবার দুই পাশে মাটি ভরাট করে সংযোগ সড়কের সঙ্গে যুক্ত করা হয় কালভার্টটি। এ সময় মাটির চাপে কালভার্টটির উত্তর পাশের পিলার ও প্রতিরক্ষাদেয়ালে বড় ফাটল তৈরি হয়। কালভার্ট থেকে প্রতিরক্ষাদেয়াল অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে ওই পাশটিতে মাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। মাটি সরানোর পর দেয়ালের রডও দেখা যাচ্ছে।
কালভার্টটির উত্তর পাশের প্রতিরক্ষা দেয়ালসহ পিলারে ভাঙন দেখা দিয়েছে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চরম ব
এছাড়াও পড়ুন:
সোয়া ২ কোটি টাকার চেক নেন সাবেক এমপির কাছ থেকে
সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে চাঁদা নেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদের নাখালপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চারটি চেক উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে চেক উদ্ধারের বিষয়টি জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তবে এই চেক কোন প্রতিষ্ঠান দিয়েছে, তা তিনি জানাননি।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ওই সোয়া দুই কোটি টাকার চেক নেওয়া হয়েছে রংপুর-৬ আসনে (পীরগঞ্জ) আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘ট্রেড জোন’ থেকে। ট্রেড জোনের পোশাক কারখানাসহ নানা ব্যবসা রয়েছে।
ট্রেড জোনের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সোয়া দুই কোটি নয়, মোট ৫ কোটি টাকার ১১টি চেক নিয়েছিলেন আবদুর রাজ্জাকসহ ছয়জন। তবে একটি চেকের বিপরীতেও তাঁরা টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। কারণ, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলোতে ট্রেড জোন কর্তৃপক্ষ টাকা রাখেনি। তিনি বলেন, টাকা উত্তোলন করতে না পেরে রাজ্জাকসহ অন্যরা ট্রেড জোনের মালিককে হুমকি দিচ্ছিলেন।
রাজ্জাকসহ অন্যরা কীভাবে চেক নিয়েছিলেন, তা প্রথম আলোকে বিস্তারিত জানিয়েছেন সাইফুল ইসলাম।
শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরের কাছ থেকে প্রথম দফায় ১০ লাখ টাকা নেওয়ার পর দ্বিতীয়বার টাকা নিতে গিয়ে ১৭ জুলাই হাতেনাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন আবদুর রাজ্জাকসহ পাঁচজন। বাকি চারজন হলেন ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন। প্রাপ্তবয়স্ক চার আসামির এখন রিমান্ড চলছে। ঘটনাটিতে মামলা করেছেন সিদ্দিক আবু জাফর।
ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ছিলেন। আবদুর রাজ্জাক ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক। পরে তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার সদস্য। গ্রেপ্তারের পর সবাইকে বহিষ্কার করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় বাদে অন্য সব কমিটি স্থগিত করা হয়েছে।
চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার আব্দুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদ