ভারতের সেনাবাহিনীর যে দুই নারী অফিসার ‘অপারেশন সিঁদুর’ ঘোষণা করেছিলেন, তাঁদের একজন হিন্দু ও একজন মুসলমান। তাঁদের দিয়ে অভিযানের ঘোষণা দেওয়ানোর ঘটনাকে ভারত জাতীয় কর্মযজ্ঞে নারীর অন্তর্ভুক্তি হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছে।

খাকি পোশাক পরা এই দুই নারী যখন যুদ্ধের ফ্রন্টলাইন থেকে সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলছিলেন; যখন তাঁরা ভারতের ২৬ জন সাধারণ পুরুষ মানুষকে হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলছিলেন এবং যখন তাঁরা প্রতীকীভাবে বিধবাদের সিঁদুরের সম্মান রক্ষার বার্তা দিচ্ছিলেন, তখন অনেকেই এই দৃশ্যকে দেশের সেবায় নিয়োজিত একটি নারীবাদী চিত্র বলে প্রশংসা করেছিলেন।

দুই নারী অফিসারের ঘোষণাপর্ব শেষ হওয়ার পর ভারত সরকার এটিকে নারী ক্ষমতায়নের এক বিরাট উদাহরণ হিসেবে আখ্যায়িত করল। তাঁদের ছবি সবখানে ছড়িয়ে পড়ল। সবাই বলল, ‘দেখো, নারীরাও আজ সম্মুখসমরে লড়াই করছে!’

এই ঘটনা ইতিহাসের আরেকটি ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেয়। সেটি হলো, ১৯৭১ সালের যুদ্ধে যখন ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছিল, তখন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে অনেকেই হিন্দুদের যুদ্ধদেবী দুর্গার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। দুর্গা দেবীকে নারী শক্তি ও দেশপ্রেমের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। দুর্গার সঙ্গে ইন্দিরার তুলনা দেওয়া হয়েছিল কারণ, ইন্দিরা সে সময় বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। দুর্গার সঙ্গে ইন্দিরার এই তুলনা থেকে বোঝা যায়, ভারতে রাজনীতি অনেক সময়ই নারীর পরিচয় ও ধর্মীয় কল্পনার সঙ্গে মিশিয়ে ব্যাখ্যা করা হয় এবং রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়টি ধর্মীয় প্রতীকের সঙ্গে জড়িয়ে যায়।

কিন্তু কোনো নারী যুদ্ধের নেতৃত্ব দিলেই কি সেটিকে নারীবাদের অগ্রগতি বলা যায়?

অনেক দিন ধরেই নারীবাদী গবেষকেরা বলে আসছেন, ‘নেশন বিল্ডিং’ বা ‘দেশ গড়ার’ মতো বড় কাজ আসলে পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গিতেই চলে। সেখানে নারী-পুরুষকে সমানভাবে দেখা হয় না। বরং, নারীদের এমন সব ভূমিকা দেওয়া হয়, যেখানে তারা দেশের জন্য কিছু ত্যাগ করে। যেমন নারী মা হিসেবে সন্তান উৎসর্গ করে, বিধবা হিসেবে শোক করে—ইত্যাদি।

নীরা ইউভাল-ডেভিস নামের একজন গবেষক বলছেন, নারীদের অনেক সময় দেশের সম্মান আর সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাঁদের হাতে খুব কমই থাকে।

সামিতা সেন ও মৈত্রেয়ী চৌধুরীর মতো কয়েকজন ভারতীয় গবেষক বলছেন, ‘আমাদের দেশে নারীরা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নিলেও তাঁদের সেই অংশগ্রহণ সর্বার্থে স্বাধীন থাকে না। বরং সমাজের নিয়মকানুন, মানে পুরুষদের বানানো নিয়ম মেনে তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে হয়।’

তাই শুধু নারীরা সামনে এসেছে মানেই সব ঠিক হয়ে গেছে, এমন ভাবাটা ঠিক হবে না। আমাদের দেখতে হবে নারীদের সত্যিকার অর্থে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, নাকি শুধু লোকদেখানোর জন্য দেখানো হচ্ছে যে তাঁরাও অংশ নিচ্ছেন।

আজকের যেসব নারী যুদ্ধক্ষেত্রে কাজ করছেন বা সামরিক বাহিনীতে সামনে আসছেন, সেটিকে অনেক সময় একধরনের নারীবাদ হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এর মধ্য দিয়ে নারীদের এমনভাবে তুলে ধরা হয় যেন তাঁরা ‘পুরুষদের মতো’ হতে পারছেন। অথচ সামরিক বাহিনীর যে পুরুষতান্ত্রিক মূল কাঠামো, সেটিকে কিন্তু আগের মতোই রেখে দেওয়া হয়।

এই বিষয়টি আমরা পরিষ্কারভাবে অপারেশন সিঁদুরের মধ্যে দেখতে পেয়েছি। এখানে ইউনিফর্ম পরা দুই নারী অফিসারকে সামনে এনে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেন এটি নারীদের অগ্রগতির একটি ছবি। কিন্তু তাঁরা যে ভূমিকা পালন করেছেন, তার পুরোটাই পুরুষতান্ত্রিক চিন্তার ওপর তৈরি। এই পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোয় নারীদের দেশের জন্য লড়াই করে এবং পুরুষদের মতো জাতীয়তাবাদ দেখিয়ে নিজেদের ‘বীরত্ব’ প্রমাণ করতে হয়।

এই ধরনের নারীবাদের ছবিগুলো ভারতের এক বিশেষ আদর্শের সঙ্গে মিলে যায়। সেটি হলো আরএসএসের (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ) চিন্তাধারা। ১৯২৫ সালে গঠিত এই সংগঠন হিন্দু জাতীয়তাবাদের পক্ষে কাজ করে। সংগঠনটি ভারতের শাসক দল বিজেপির আদর্শগত ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

আরএসএস মনে করে, ভারতের একটি হিন্দুরাষ্ট্র হওয়া উচিত, যেখানে হিন্দুধর্মের রীতিনীতিই থাকবে সবার ওপরে। গবেষক ক্রিস্টোফ জ্যাফরেলো বলছেন, এই সংগঠন সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের প্রাধান্য দেয় এবং ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে দুর্বল করে।

আরএসএসের যে কাঠামো, সেখানে নিয়মশৃঙ্খলা আর জাতীয়তাবাদের ওপর অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেখানে পুরুষদের নেতৃত্বকেই বেশি জায়গা দেওয়া হয়। তাই এটা আসলে সমাজের ভেতরে পুরুষের আধিপত্য আর স্তরভিত্তিক বৈষম্যকে আরও পোক্ত করে।

আরএসএসের নারী শাখা (যেমন ‘রাষ্ট্রীয় সেবিকা সমিতি’ ও ‘দুর্গা বাহিনী’) আসলে পুরুষতান্ত্রিক ভাবনারই প্রতিফলন। এই সংগঠনগুলো অনেক বছর ধরে নারীদের মার্শাল আর্ট শেখাচ্ছে আর আদর্শগত প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। কিন্তু এসব নারীর মুক্তির জন্য করা হচ্ছে না, করা হচ্ছে ‘হিন্দুরাষ্ট্রকে রক্ষা করার’ জন্য।

অপারেশন সিঁদুরের চেহারাও এই ভাবনার সঙ্গে মিলে যায়। গেরুয়া রঙের ছাপ, যুদ্ধজয়ী নারীর চেহারা আর সাজানো-গোছানো সাহসিকতার প্রদর্শন—এর সবই এই পুরোনো চিন্তার ধারাবাহিকতা।

দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধ ও লিঙ্গবিষয়ক প্রখ্যাত গবেষক বিনা ডি’কস্টা দেখিয়েছেন, কীভাবে নারীর দেহকে অনেক সময় জাতীয় গৌরবের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

এই অপারেশন সিঁদুরের মধ্যে এক মুসলমান নারী অফিসারকে রাখা হয়েছে। এটি দেখে মনে হতে পারে, এটি ধর্মনিরপেক্ষতার ইঙ্গিত। কিন্তু ডি’কস্টা বলছেন, এটি আসলে একধরনের ওপর-চালাকি। কারণ, এই একজন মুসলমান নারীকে দেখিয়ে বলা হয়, ‘দেখো, আমরা সবাইকে সুযোগ দিচ্ছি।’ অথচ বাস্তবে ভারতে অনেক মুসলমানের প্রতি বৈষম্য দেখানো হচ্ছে, অনেককে অপমান করা হচ্ছে বা ভয় দেখানো হচ্ছে।

এই একজন মুসলমান নারীকে সামনে আনা হচ্ছে যেন এটা প্রমাণ করতে যে সবাইকেই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের চিন্তাভাবনাকেই আরও পোক্ত করা হচ্ছে আর মুসলমানদের বঞ্চনাকে ঢেকে রাখা হচ্ছে।

সিঁদুর হিন্দু বিবাহিত নারীরা মাথার মাঝখানে সিঁথিতে লাগান। এটি সাধারণভাবে বিবাহিত অবস্থার চিহ্ন, স্বামীর প্রতি ভক্তি এবং ‘ভালো স্ত্রী’ হওয়ার প্রতীক। সিঁদুরের সঙ্গে দেবী দুর্গার ভাবনাও জড়িয়ে থাকে।

ইতিহাসবিদ তনিকা সরকার তাঁর ‘হিন্দু ওয়াইফ, হিন্দু নেশন’ বইয়ে দেখিয়েছেন কীভাবে জাতীয়তাবাদী কথা বা ভাবনা স্ত্রীর পবিত্রতা আর মাতৃভূমির পবিত্রতাকে একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলে।

অপারেশন সিঁদুর নামটাই সিঁদুরের প্রতীককে একধরনের অস্ত্র বানিয়ে ফেলেছে। এই নামের মধ্য দিয়ে বলা হয়েছে পাকিস্তানের ওপর সামরিক হামলার মাধ্যমে বিধবাদের ভেঙে যাওয়া বৈবাহিক সম্পর্কের প্রতিশোধ নেওয়া হবে, তার মধ্য দিয়ে হিন্দু বিধবাদের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

এই পুরো অপারেশন একধরনের ছবি তৈরি করেছে, যেখানে দেখানো হয়েছে কিছু নারী বিধবা হয়ে গেছেন (মানে তাঁরা সিঁথির সিঁদুর হারিয়েছেন) আর তাঁদের কষ্টকে প্রতিশোধের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

নারীবাদী ইতিহাসবিদ উর্বশী বুতালিয়া বলেছেন, যুদ্ধের সময় নারীর দেহ, অনুভূতি আর প্রতীকগুলোকে (যেমন সিঁদুর, শোক, মাতৃত্ব ইত্যাদি) ‘যুদ্ধের চিহ্ন’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যুদ্ধ যখন হয়, তখন তা কেবল গোলাবারুদ দিয়ে হয় না। তার জন্য একটি ‘গল্প’ বা ‘ব্যাখ্যা’ দাঁড় করানো হয়, যাতে মানুষ বুঝতে পারে কেন যুদ্ধটা জরুরি। সেই গল্প বানাতে নারীদের দুঃখ, কষ্ট, চোখের জল—এসব ব্যবহার করা হয়।

যখন কোনো নারীর স্বামী মারা যান, তাঁকে বলা হয় বিধবা। তখন তাঁর মাথা থেকে সিঁদুর মুছে যায়। এই বিধবার কান্না, তাঁর হারানো সিঁদুর, তাঁর দুঃখ এসব অনুষঙ্গ ব্যবহার করে বলা হয়, ‘দেখো, কত কষ্ট। এর প্রতিশোধ নেওয়া দরকার।’

অর্থাৎ, নারীর কষ্টকে একটা জাতীয়তাবাদী অনুভূতির জ্বালানি বানিয়ে ফেলা হয় যেন দেশের জন্য যুদ্ধ করাটা ন্যায্য প্রমাণিত হয়।

উর্বশী বুতালিয়া বলছেন, অপারেশন সিঁদুরের সিঁদুর আসলে নারীদের কাছে এখন আর কোনো ভালো কিছুর প্রতীক নয়; এটি সেই কষ্টের স্মৃতি, যা তাঁরা হারিয়েছেন। সিঁদুর বলতে এখানে সম্মান হারানো, সামাজিক মর্যাদা হারানো ও নিরাপত্তা হারানোকে বোঝানো হয়েছে। বুতালিয়া মনে করেন, নারীর দুঃখকে সম্মান দিতেই তাঁর পাশে দাঁড়াতে হবে, তাঁর দুঃখকে ব্যবহার করতে নয়।

এই দুই নারী অফিসারকে এখানে স্বাধীন ব্যক্তি হিসেবে দেখানো হয়নি; বরং এক কল্পনার ‘মাতৃভূমির’ সৈনিক হিসেবে দেখানো হয়েছে। তাঁদের দেখানো হয়েছে সেই পুরোনো চিন্তার ধারাবাহিকতায়, যেখানে নারীদের মূলত ঘর আর পূজার আসনের মধ্যেই আটকে রাখা হতো।

এখানে আসলে যেটা উদ্‌যাপন করা হচ্ছে, সেটা নারীদের মুক্তি নয়। বরং তাদের এমন একটি ভূমিকার মধ্যে নিয়ে আসার বিষয়কে উদ্‌যাপন করা হচ্ছে, যা কিনা পুরুষদের মতো যুদ্ধকেন্দ্রিক এবং আক্রমণাত্মক।

নারীদের এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যেন তারা যুদ্ধ করতে পারে, অস্ত্র ধরতে পারে এবং সেটাকেই নারীর অগ্রগতি বলে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু এর মাধ্যমে মূলত রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যুদ্ধ ও সহিংসতাকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে, নারীবাদকে নয়।

এই প্রতীকগুলো (যেমন নারী অফিসার, সিঁদুর, যুদ্ধ) আসলে পুরোনো ক্ষমতার কাঠামোকে টিকিয়ে রাখে। তাই আমাদের দরকার এই প্রতীকগুলোর মানে নিয়ে প্রশ্ন তোলা। এসবের মাধ্যমে সরকার কী বোঝাতে চায়, কাকে সুবিধা দিতে চায়, সেই প্রশ্ন তোলা দরকার।

প্রশ্ন হচ্ছে যখন নারী অফিসাররা যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন, তখন মানুষ কী উদ্‌যাপন করে? যুদ্ধকে? নাকি মানুষ কেবল এই কারণে খুশি হয় যে নারীরাও এতে অংশ নিচ্ছে?

এই দৃশ্যপটের ভেতরে যে বার্তাটি সূক্ষ্মভাবে দেওয়া হচ্ছে, সেটি হলো নারীরা ‘পুরুষদের মতো’ না হলে তাঁদের যোগ্যতা প্রমাণিত হয় না। তাঁরা পুরুষের মতো শক্তিশালী না হলে তাঁদের নেতৃত্বকেও গুরুত্ব দেওয়া হয় না।

এই দুই নারী অফিসারকে সম্মান জানিয়ে রাষ্ট্র আসলে নারী নেতৃত্বকে ব্যবহার করছে, যেন যুদ্ধ ও সহিংসতাকে আরও জোরালোভাবে বৈধতা দেওয়া যায়। কিন্তু যে কাঠামো নারীদের প্রতি সহিংসতা চালায়, সেটাকে ভাঙার কোনো চেষ্টাই এখানে নেই।

প্রকৃত নারীবাদ চায় নারীরা নিজেরা ঠিক করুক তাঁরা কোথায়, কীভাবে অংশ নেবেন। কিন্তু এখানে সেই সিদ্ধান্তও নারীদের নয়। বরং এখানে আরএসএসের মতো পুরুষতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদ ঠিক করে দিচ্ছে তাঁদের ভূমিকা কী হবে।

এই দুই অফিসার আসলে পুরোনো সেই চিত্রনাট্যে অভিনয় করেছেন, যেখানে নারী মানেই দেশের জন্য স্ত্রীর মতো দায়িত্বশীল হওয়া।

এখানে একজন মুসলমান নারী অফিসারকেও রাখা হয়েছে। এটা ইচ্ছাকৃত; যেন বলা যায়, ‘আমরা সবাইকে সমান সুযোগ দিচ্ছি।’ কিন্তু এর মধ্য দিয়ে দুর্গা বাহিনীর চিন্তাধারা ফুটে উঠেছে। সেই চিন্তাধারা হলো হিন্দু পরিবারকে রক্ষা করতে চাইলে ‘অহিন্দু’ নারীদেরও ব্যবহার করা যায়।

শুধু এই কারণেই একজন মুসলমান নারীকে সামনে আনা হয়েছে। এটি লোকদেখানো বহুত্ববাদ। বাস্তবে মুসলমানদের প্রতি বৈষম্য ও অবহেলা সমাজে ঠিকই চলছে।

নারীবাদী আন্দোলন শুধু দেখে না যে কারা যুদ্ধ করছে, বরং যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা, কারণ এবং পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন তোলে। যদি আমরা মেনে নিই দেশ গড়ার পুরো কাজটাই পুরুষদের নিয়ন্ত্রণে চলে, তাহলে শুধু নারীদের সেই পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোর ভেতর ঢুকিয়ে দিলেই সমাধান হয় না। বরং আমাদের সেই চিন্তাকেই বদলাতে হবে, যেখানে নারীর সম্মান শুধু স্ত্রীসুলভ আচরণ বা যুদ্ধক্ষেত্রে আত্মোৎসর্গের সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়া হয়।

নারীর সত্যিকারের নেতৃত্ব হওয়া উচিত শান্তি প্রতিষ্ঠা, সাধারণ মানুষের সুরক্ষা, পুনর্বাসন এবং নীতিনির্ধারণের জায়গায়—যেখানে সিঁদুর বা বাহাদুরি দিয়ে নারীর মূল্য যাচাই করা হয় না। নারী যুদ্ধ করছেন কি না তার ওপর তাঁর মর্যাদা নির্ভর করে না; বরং তিনি নিজের শর্তে সমাজে কীভাবে অবদান রাখছেন, তার ওপর তাঁর মর্যাদা নির্ভর করে।

সত্যিকারের লিঙ্গসমতা মানে হলো সেই নারীদের মূল্য দেওয়া, যাঁরা পুরুষতান্ত্রিক প্রতীকের ভেতরে ঢুকতে চান না। সত্যিকারের লিঙ্গসমতা মানে হলো সেই নারীদের মূল্য দেওয়া, যাঁরা যুদ্ধের বদলে শান্তির পক্ষে কথা বলেন, যাঁরা বিধবাদের পাশে থাকেন এবং যাঁরা মনে করেন, ‘স্ত্রী’ বা ‘সিঁদুর’ দিয়ে নারীর সম্মান মাপা উচিত নয়।

অমৃতা দত্ত বিলফেল্ড ইউনিভার্সিটির বিলফেল্ড গ্র্যাজুয়েট স্কুল ইন হিস্ট্রি অ্যান্ড সোশিওলজির প্রভাষক

অরণি বসু হাইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটির হাইডেলবার্গ সেন্টার ফর ট্রান্সকালচারাল স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক

আল–জাজিরা থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ: সারফুদ্দিন আহমেদ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর দ শ র জন য আরএসএস র অন ক সময় একধরন র য দ ধ কর এই প র র ভ তর এই দ ই ইন দ র আম দ র অফ স র র ওপর বলছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পাঁচ দ্বীপে বাড়ি কিনলেই পাবেন পাসপোর্ট, দেড় শতাধিক দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশ সুবিধা

ছবি: Antigua and Barbuda

ক্যাপশন:

বডিতে যাবে ছবি: Grenada

ক্যাপশন: গ্রেনাডার সৈকত। ফাইল ছবি: এএফপি

ছবি বডিতে যাবে: St. Kitts

ক্যাপশন: যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক তাঁর সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের পাসপোর্ট দেখাচ্ছেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলের কয়েকটি দেশ এখন শুধু মনোমুগ্ধকর সৈকত আর নির্ঝঞ্ঝাট জীবনযাপনের নিশ্চয়তা দিয়ে সেসব দেশে বাড়ি বা সম্পদ কেনার জন্য ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে না; বরং ওই সব দেশে বাড়ি কিনলে বা বিনিয়োগ করলেই আপনি পেয়ে যাবেন পাসপোর্টও।

ওই অঞ্চলের পাঁচ দেশ অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, ডোমিনিকা, গ্রেনাডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস ও সেন্ট লুসিয়া এমন প্রস্তাব দিয়েছে। এ প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে সিটিজেনশিপ বাই ইনভেস্টমেন্ট (সিবিআই)।

সিবিআইয়ের অধীন কমপক্ষে দুই লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে একটি বাড়ি কিনলেই আপনি পেয়ে যাবেন এ পাসপোর্ট। এতে ইউরোপের শেনজেন অঞ্চল, যুক্তরাজ্যসহ ১৫০টির বেশি দেশে পাবেন ভিসামুক্ত প্রবেশের সুবিধা।

ধনীদের জন্য এসব দ্বীপরাষ্ট্রগুলোতে রয়েছে করছাড়–সংক্রান্ত আরও বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা, যেমন মূলধনি মুনাফা পাওয়া এবং উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদের ওপর থেকে কর অব্যাহতি। কয়েকটি ক্ষেত্রে আয়করেও রয়েছে ছাড়। এ পাঁচ দেশেই সিবিআই প্রকল্পের বিনিয়োগকারীরা দেশগুলোর নাগরিকত্ব পাবেন।

ধনীদের জন্য এসব দ্বীপরাষ্ট্রগুলোতে রয়েছে করছাড়–সংক্রান্ত আরও বেশকিছু সুযোগ-সুবিধা, যেমন মূলধনি মুনাফা পাওয়া এবং উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদের ওপর কর অব্যাহতি। কিছু ক্ষেত্রে আছে আয়করেও ছাড়।

প্রকল্পে দারুণ সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন অ্যান্টিগুয়ার লাক্সারি লোকেশনসের মালিক নাদিয়া ডাইসন। তিনি বলেন, ‘অ্যান্টিগুয়ায় সম্পত্তি বিক্রেতারা চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ মুহূর্তে ক্রেতাদের প্রায় ৭০ শতাংশই নাগরিকত্ব চাইছেন। আর তাঁদের বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা।’

প্রকল্পে সাড়া পাওয়ার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে নাদিয়া আরও বলেন, ‘(যুক্তরাষ্ট্রের) অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে একটি বড় কারণ, তা স্পষ্ট। গত বছর এ সময়ে শুধু ভালো আবহাওয়া ও অবকাশ কাটানোর সুবিধা বিবেচনায় বাড়ি কিনতে চাওয়া কিছু ক্রেতা ছিলেন। সঙ্গে অল্প কয়েকজন ছিলেন সিবিআই প্রকল্পের ক্রেতা। এখন সবাই বলছে, ‘‘আমি নাগরিকত্বসহ একটি বাড়ি চাই।’’ আমরা আগে কখনো এত বাড়ি বিক্রি করিনি।’

অ্যান্টিগুয়া এ কর্মসূচিতে বসবাস করার বিষয়ে কোনো শর্ত রাখেনি। তা সত্ত্বেও কয়েকজন ক্রেতা সারা বছর সেখানে থেকে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে জানান নাদিয়া। তিনি বলেন, কয়েকজন ক্রেতা ইতিমধ্যে সেখানে স্থানান্তরিত হয়েছেন।

গত এক বছরে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সিবিআই কর্মসূচির আবেদনকারীদের সবচেয়ে বড় অংশ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এমনটাই জানিয়েছে বিনিয়োগভিত্তিক অভিবাসনসংক্রান্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। ইউক্রেন, তুরস্ক, নাইজেরিয়া ও চীনের নাগরিকেরাও উল্লেখযোগ্য হারে এ প্রকল্পে আবেদন করছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান।

প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, ২০২৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিক থেকে ক্যারিবীয় অঞ্চলের সিটিজেনশিপ বাই ইনভেস্টমেন্ট কর্মসূচিতে মোট আবেদনপত্রের সংখ্যা ১২ শতাংশ বেড়েছে।

অ্যান্টিগুয়ায় সম্পত্তি বিক্রেতারা চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ মুহূর্তে ক্রেতাদের প্রায় ৭০ শতাংশই নাগরিকত্ব চাইছেন আর তাঁদের বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা।-নাদিয়া ডাইসন, অ্যান্টিগুয়ার লাক্সারি লোকেশনসের মালিক।

হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের পরামর্শক ডমিনিক ভোলেক বলেন, বন্দুক সহিংসতা থেকে শুরু করে ইহুদিবিদ্বেষ—সবকিছুই মার্কিনদের চরম উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

ভোলেক আরও বলেন, (সিবিআই গ্রহণকারীদের) প্রায় ১০ থাকে ১৫ শতাংশ স্থানান্তরিত হন। অধিকাংশের কাছে এটি তাঁদের উদ্বেগ থেকে বাঁচার একটি বিমার মতো। দ্বিতীয় নাগরিকত্ব থাকা মানে একটা ভালো বিকল্প হাতে থাকা…।

ক্যারিবীয় পাসপোর্টের মাধ্যমে সহজ ভ্রমণের সুবিধাও ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করছে বলে মনে করেন ভোলেক। তিনি বলেন, অনেক মার্কিন ক্রেতা রাজনৈতিকভাবে অধিকতর নিরপেক্ষ পাসপোর্টে ভ্রমণ করতে বেশি পছন্দ করেন।

কোভিড মহামারির আগপর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের তালিকাতে ছিল না বলে জানান ভোলেক। সে সময়ে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে অবাধে ভ্রমণে অভ্যস্ত ধনীদের জন্য চলাচলে ওই বিধিনিষেধ ছিল এক ‘বড় ধাক্কা’। আর এটাই প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে সিবিআই কর্মসূচিতে আগ্রহ বাড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ২০২০ ও ২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনের পর সেই আগ্রহ আবারও ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।

২০২৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিক থেকে ক্যারিবীয় অঞ্চলের সিটিজেনশিপ বাই ইনভেস্টমেন্ট কর্মসূচিতে মোট আবেদনপত্রের সংখ্যা ১২ শতাংশ বেড়েছে।

ভোলেক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে দুই বছর আগেও তাঁদের কোনো কার্যালয় ছিল না। অথচ গত দুই বছরে দেশটির বড় বড় শহরে তাঁরা আটটি কার্যালয় খুলেছেন। কয়েক মাসের মধ্যে আরও দুই থেকে তিনটি কার্যালয় চালু হতে যাচ্ছে।

কানাডার হ্যালিফ্যাক্সের রবার্ট টেইলর অ্যান্টিগুয়ায় একটি সম্পত্তি কিনেছেন। অবসর কাটাতে এ বছরের শেষ দিকে তিনি সেখানে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।

গত বছরের গ্রীষ্মে আবাসনে ন্যূনতম বিনিয়োগের শর্ত তিন লাখ ডলার করার ঠিক আগে দিয়ে টেইলর এ খাতে দুই লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছিলেন। নাগরিকত্ব পাওয়া গেলে আরও বেশকিছু সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়।

বন্দুক সহিংসতা থেকে শুরু করে ইহুদিবিদ্বেষ—সবকিছুই মার্কিনদের চরম উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।ডমিনিক ভোলেক, হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের পরামর্শক

বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে টেইলর বলেন, নাগরিক হলে অবস্থান করার সময়সীমার বিধি এড়িয়ে যাওয়া যায়। এর ওপর ব্যবসায়িক সুযোগগুলো কাজে লাগানোর স্বাধীনতাও থাকে। তিনি বলেন, ‘আমি অ্যান্টিগুয়া বেছে নিয়েছি, কারণ, এখানে চমৎকার জলরাশি আছে, মানুষ খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ এবং আমার বাকি জীবন কাটানোর জন্য এখানকার আবহাওয়া দারুণ উপযোগী।’

তবে এসব কর্মসূচি একেবারে বিতর্কহীন নয়। ২০১২ সালে তৎকালীন অ্যান্টিগুয়া সরকার দেশের অর্থনীতি সচল রাখার উপায় হিসেবে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে পাসপোর্ট বিক্রির ধারণা উত্থাপন করলে কেউ কেউ এর নৈতিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।

সিবিআই কর্মসূচি নেই, ক্যারিবীয় অঞ্চলের এমন কয়েকটি দেশের নেতারাও এর সমালোচনা করেছেন। তাঁদের একজন সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রেনাডাইনসের প্রধানমন্ত্রী রালফ গনসালভেস। তিনি বলেন, ‘নাগরিকত্ব বিক্রির পণ্য হওয়া উচিত নয়।’

এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের আশঙ্কা, অপরাধীরা এসব শিথিল শর্তের সুযোগ নিতে পারেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ক্যারিবীয় অঞ্চলের যেসব দেশ সিবিআই কর্মসূচি চালু করেছে, তাদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র এসব কর্মসূচি কর ফাঁকি ও আর্থিক অপরাধের জন্য ব্যবহার হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।

ইউরোপীয় কমিশনের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, তাঁরা ক্যারিবীয় অঞ্চলের ওই পাঁচ দেশের সিবিআই কর্মসূচি ‘পর্যবেক্ষণ’ করছেন এবং ২০২২ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ক্যারিবীয় অঞ্চলের যেসব দেশ সিবিআই কর্মসূচি চালু করেছে, তাদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র এসব কর্মসূচি কর ফাঁকি ও আর্থিক অপরাধের জন্য ব্যবহার হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।

মুখপাত্র আরও বলেন, এ মূল্যায়নের মাধ্যমে এটা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে, ওই কর্মসূচির অধীন নাগরিকত্ব দেওয়ার বিনিময়ে যেন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার ব্যবস্থার অপব্যবহার না হয়। সেই সঙ্গে এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে কি না, তা-ও যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

এ নিয়ে ডোমিনিকার প্রধানমন্ত্রী রুজভেল্ট স্কেরিট তাঁর দেশের সিটিজেনশিপ বাই ইনভেস্টমেন্ট কর্মসূচিকে ‘নির্ভরযোগ্য ও স্বচ্ছ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এর গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ কঠোর পরিশ্রম করেছে।

সেন্ট লুসিয়ায় প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ জে পিয়েরে বলেন, তাঁদের দ্বীপপুঞ্জের এ কর্মসূচি যেন কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ডের সহায়ক না হয়, তা নিশ্চিত করতে তাঁরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মানদণ্ড মেনে চলেন।

অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টন ব্রাউন বলেন, গত এক দশকে এ কর্মসূচি থেকে অর্জিত অর্থ তাঁর দেশকে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে এনেছে।

সম্পত্তি কেনা ছাড়াও বিনিয়োগের মাধ্যমে ক্যারিবীয় দেশগুলোতে নাগরিকত্ব পাওয়ার অন্যান্য সাধারণ উপায়ের মধ্যে রয়েছে জাতীয় উন্নয়ন তহবিল বা অনুরূপ কোনো খাতে এককালীন অর্থ প্রদান।

ডোমিনিকায় একজন একক আবেদনকারীর জন্য এ অর্থের পরিমাণ শুরু হয় দুই লাখ ডলার থেকে। আর ডোমিনিকা ও সেন্ট কিটসে মূল আবেদনকারী এবং তাঁর সঙ্গে সর্বোচ্চ তিনজন নির্ভরশীল সদস্যের জন্য এটি বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত।

ডোমিনিকায় একজন একক আবেদনকারীর জন্য এ অর্থের পরিমাণ শুরু হয় দুই লাখ ডলার থেকে। আর ডোমিনিকা ও সেন্ট কিটসে মূল আবেদনকারী এবং তাঁর সঙ্গে সর্বোচ্চ তিনজন নির্ভরশীল সদস্যের জন্য এটি বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত।

অন্যদিকে, অ্যান্টিগুয়ায় বিনিয়োগকারীরা চাইলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ লাখ ৬০ হাজার ডলার অনুদান দেওয়ার বিকল্প সুযোগও পান।

আন্তর্জাতিক চাপে ওই দ্বীপপুঞ্জগুলো নজরদারি শক্ত করার জন্য নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে মান নির্ধারণ, কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ এবং নিয়মনীতি মেনে চলা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন।

বর্তমানে পাসপোর্ট বিক্রি দ্বীপপুঞ্জগুলোর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ থেকে ৩০ শতাংশ অবদান রাখে।

সেন্ট কিটসের সাংবাদিক আন্দ্রে হুই বলেন, তাঁর দেশের সিবিআই কর্মসূচি ব্যাপক জনসমর্থিত। লোকজন অর্থনীতিতে এর গুরুত্ব বোঝেন এবং তাঁরা সরকার যে কাজগুলো এ অর্থ দিয়ে সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছেন, তা কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করেছেন।

আরও পড়ুনদেশে দেশে এখন নাগরিকত্ব বিক্রির জমাটি ব্যবসা২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্কিন ব্যাংকে পর্যাপ্ত ত্বক থাকলে ৪০ শতাংশের বেশি দগ্ধ রোগীকেও বাঁচানো যায়
  • রাগ নিয়ন্ত্রণে হাদিসের ৭ উপদেশ
  • চুলে গুঁজে দিলেন ৭১১ গলফ ‘টি’
  • বাবা হারালেন চিত্রনায়িকা মিষ্টি জান্নাত
  • ‘নতুন একটি দলের কয়েকজন মহারথী’ বলার পর বক্তব্য বদলালেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু
  • ভাসানীরা না থাকলে শেখ মুজিব কখনো তৈরি হতেন না: নাহিদ
  • কাভার্ড ভ্যানের পেছনে ধাক্কা দিয়ে দুমড়েমুচড়ে গেল যাত্রীবাহী বাস
  • নিউ ইয়র্কে নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে যা জানা গেলো
  • পাঁচ দ্বীপে বাড়ি কিনলেই পাবেন পাসপোর্ট, দেড় শতাধিক দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশ সুবিধা