বাগেরহাটে ৩ পৌরসভার ১৪ কর্মচারী বদলি
Published: 17th, June 2025 GMT
বাগেরহাটের তিন পৌরসভার ১৪ কর্মচারীকে একযোগে বদলি করা হয়েছে।
বাগেরহাট স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মো. ফকরুল হাসান এই বদলির আদেশ দিয়েছেন। বদলি হওয়া কর্মচারীদের আগামী ১৯ জুনের মধ্যে পরবর্তী কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
বাগেরহাট জেলার এই তিন পৌরসভার ইতিহাসে এবারই প্রথম একযোগে এতোজন কর্মচারীকে বদলি করা হলো। কোনো কোনো কর্মচারী তাদের দীর্ঘ কর্মজীবনে এবারই প্রথমবারের মতো বদলি আদেশ পেলেন। এই বদলি আদেশ পৌরসভাগুলোর কাজকে ত্বরান্বিত করবে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
গত ১৫ জুন (রবিবার) স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মো.
আদেশে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর-১ শাখার ১৫ জুন ২০২৫ তারিখের ৪৬০০০০০০০৬৩৯৯০০৩২৪-৯ নম্বর পরিপত্র অনুযায়ী বাগেরহাট পৌরসভা, মোংলাপোর্ট পৌরসভা ও মোরেলগঞ্জ পৌরসভায় কর্মরত কর্মচারীদের প্রশাসনিক কাজে গতিশীলতা আনতে জনস্বার্থে এই বদলি করা হল।
বদলি করা কর্মচারীদের মধ্যে বাগেরহাট পৌরসভার সর্বোচ্চ ১০ জন, মোরেলগঞ্জের ২ জন এবং মোংলা পোর্ট পৌরসভার ২ জন কর্মচারী রয়েছে।
বদলি কর্মচারীরা হলেন- বাগেরহাট পৌরসভার প্রধান সহকারী মো. রফিকুল ইসলাম, বাজার পরিদর্শক এ কে এম সেলিম, সহকারী কর নির্ধারক মো. সেলিম ফকির, স্বাস্থ্য সহকারী প্রভাত চন্দ্র সাহা, উচ্চমান সহকারী মো. নাসিরউদ্দিন হাওলাদার, বনমালা পাল, নিন্মমান সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক হাওয়া খাতুন, আশীষ কুমার হোড়, সাঁট মুদ্রাক্ষরিক শেখ শহীদুল কবির, রোড রোলার চালক দীপু বিশ্বাস।
মোরেলগঞ্জ পৌরসভার কর নির্ধারক মো. ফাহাদ হোসেন, স্যানিটারি পরিদর্শক এস এম বাদল। মোংলা পোর্ট পৌসভার নিন্মমান সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক মো. হাসান ও রোড রোলার চালক মো. সিদ্দিক।
বাগেরহাট স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মো. ফকরুল হাসান বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এই কর্মচারীরা একই স্থানে কাজ করছেন। যার ফলে কাজে কিছু স্থবিরতা ছিল। স্থানীয় সরকারের পরিপত্র অনুযায়ী তাদের বদলি করা হয়েছে। এর ফলে কাজে গতিশীলতা বাড়বে।”
ঢাকা/শহিদুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স থ ন য় সরক র ট প রসভ র ম র লগঞ জ ব গ রহ ট র চ লক ম ন সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
তেহরানে রয়েছেন ৪০০ বাংলাদেশি, স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু
ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থানরত প্রায় ৪০০ বাংলাদেশির নিরাপত্তা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। এঁদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন বাংলাদেশি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এসব তথ্য জানান। ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি হওয়া পরিস্থিতি এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা বিষয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইরানে বসবাসকারী বাংলাদেশির সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে বড় সংখ্যক বাংলাদেশি ইরানিদের বিয়ে করে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। আরেক দল বাংলাদেশি ওখানকার সমুদ্র অঞ্চলে মাছ ধরাসহ ছোটখাটো কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে অনেকের বৈধ কাগজপত্র নেই। কিছু বাংলাদেশি ইরানের ডিটেনশন সেন্টারে (আটককেন্দ্র) আছেন। এর বাইরে কিছু বাংলাদেশি আছেন পেশাজীবী, যাঁরা গণমাধ্যম ও চিকিৎসাসেবা খাতে কাজ করছেন। কিছু বাংলাদেশি ইরানে ভ্রমণে গেছেন। কিছু গেছেন পড়তে।
রুহুল আলম সিদ্দিকী জানান, তেহরানে থাকা বাংলাদেশিরা নিরাপদ স্থানে যেতে চান। তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৪০০ জন। ইতিমধ্যে ১০০ জন যোগাযোগ করেছেন। সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হবে। এরই মধ্যে ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কূটনীতিকসহ দূতাবাসের ৪০ জনকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, গতকাল সোমবার রাতে ইরানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা রাষ্ট্রদূতের নির্ধারিত বাসভবন ছেড়ে গেছেন। তিনি এখন নিরাপদে অন্য একটি স্থানে অবস্থান করছেন। কারণ, ইসরায়েলি আক্রমণে তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাসের চ্যান্সারি ভবন এবং রাষ্ট্রদূতের ভবন ঝুঁকিতে রয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘এতটুকু বলতে পারি এ দুটোতে (বাংলাদেশের চ্যান্সারি ভবন, যেটা অফিস এবং রাষ্ট্রদূতের ভবন) নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি।’
পররাষ্ট্রসচিব জানান, সবাইকে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তেহরান ছাড়াও আশপাশের দেশের শহরগুলোতে খোঁজখবর রাখছে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানকার বাংলাদেশিদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এখনকার সিদ্ধান্ত হলো, তেহরান থেকে যতটুকু দূরত্বে গেলে নিরাপদে থাকতে পারা যায়, তাঁরা যেন ততটা নিরাপদ স্থানে সরে যান। এই মুহূর্তে ইরান ত্যাগ করার কোনো ব্যবস্থা নেই। বিমান যোগাযোগ বন্ধ এবং স্থলপথে যাওয়া হয়তো সম্ভব, কিন্তু তা নিরাপদ হবে না। এ জন্য তাঁদের তেহরান থেকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তাঁদের জন্য ভাড়ায় বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরে তাঁরা যদি পাকিস্তানে যেতে চান বা তুরস্কে যেতে চান, তখন তাঁদের পৌঁছে দেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতিতে দূতাবাসের কর্মকাণ্ড কীভাবে চলছে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, দূতাবাস যুদ্ধাবস্থায়ও সেবামূলক কাজ করছে। বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। দূতাবাস প্রতিনিয়ত যুদ্ধের আপডেট (হালনাগাদ তথ্য) জানাচ্ছে। পাশাপাশি অন্য দেশ কীভাবে তাদের নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছে, সেসব তথ্য নিয়মিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাচ্ছে দূতাবাস।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া দূতাবাসে থাকা অর্থ দিয়ে করা হচ্ছে। তবে ব্যাংকিং চ্যানেল কাজ না করায় পরে টাকা পাঠানো বেশ কষ্টসাধ্য হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব জানান, অর্থ প্রেরণ কষ্টসাধ্য। স্থানান্তরের জন্য যে অর্থ লাগবে আমরা পাঠানোর চেষ্টা করছি। ওখানে ব্যাংকিং চ্যানেল কাজ করে না। সে জন্য একটু বিলম্ব হচ্ছে। অর্থ পাঠানোর চ্যালেঞ্জের সমাধান নিয়ে রুহুল আলম বলেন, ‘আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অতিরিক্ত টাকা পাঠাব। আমাদের কিছু টাকা মিশনের কাছে আছে। এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আমরা যতটা সম্ভব বন্ধুরাষ্ট্রগুলো থেকে সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করছি। ইরানের কাছ থেকেও আমরা সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের যতগুলো চ্যানেল খোলা আছে, সবগুলোতে চেষ্টা করছি। তবে মনে রাখতে হবে, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কোনো কিছু এত স্মুথলি (মসৃণভাবে) হয় না।’