ব্যাপক আলোচনা চললেও কোনো বিষয়েই ঐকমত্য হচ্ছে না: এবি পার্টি
Published: 19th, June 2025 GMT
রাষ্ট্রের সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার টানা তৃতীয় দিনের বৈঠক শেষে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, তিন দিন ধরে ব্যাপক আলোচনা-বিশ্লেষণ চলছে, কিন্তু কোনো বিষয়েই ঐকমত্য হচ্ছে না। ইতিমধ্যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসহ কোনো বিষয়েই চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। এটি খুব দুঃখজনক।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যে যত কথাই বলি না কেন, জনগণ চায় আমরা একটা ঐকমত্যে পৌঁছাই। নাগরিকেরা এত দিন যাদের প্রচলিত রাষ্ট্রব্যবস্থার কাছে ভয়ংকরভাবে নির্যাতিত হতে দেখেছেন, তারা যখন কার্যত ক্ষেত্রে সংস্কারে অনাগ্রহী হয়, তখন জনগণ কিছুটা হলেও আশাহত হয়।’
বৈঠক শেষে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, ৩২টি রাজনৈতিক দল নিয়ে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। এর আগে দলগুলো কয়েক মাস ধরে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করার জন্য আলাদা আলাদা বৈঠক করার সুযোগ পেয়েছিল। তারপরও তিন দিন ধরে ব্যাপক আলোচনা-বিশ্লেষণ চলছে, কিন্তু কোনো বিষয়েই ঐকমত্য হচ্ছে না। ইতিমধ্যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসহ কোনো বিষয়েই চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি, যা খুব দুঃখজনক।
এর আগে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে দেওয়া বক্তব্যে মজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে দলের অভিমত তুলে ধরেন। বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার চেয়েও মর্যাদার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি রাষ্ট্রের ঐক্যের প্রতীক। প্রচলিত পদ্ধতিতে একজনকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করলেই রাষ্ট্রপতি হওয়া যায়। সে জন্য আমরা চাই প্রচলিত পদ্ধতির পরিবর্তন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সংসদ সদস্যের বাইরে একটা ইলেকটোরাল কলেজ গঠনের প্রস্তাবকে এবি পার্টি সমর্থন করে।’
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদবিষয়ক আলোচনায় দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনকাঠামো আর যাতে ফিরে আসতে না পারে, সে জন্য বাংলাদেশে একজন ব্যক্তি যাতে দুবারের বেশি বিরামহীনভাবে বা অন্য যেকোনোভাবে প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা প্রবর্তন করা প্রয়োজন।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা প্রবর্তনের বিষয়ে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা বাংলাদেশে প্রবর্তনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুপস্থিত বলে মনে করলেও জাতীয় ঐকমত্যের স্বার্থে এবি পার্টি তার অবস্থান পরিবর্তন করে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা প্রবর্তনের পক্ষে মত দিয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াতকে বেশি কথা বলতে দেওয়ায় গণফোরাম-সিপিবির সংলাপ থেকে ওয়াক আউট
জামায়াতে ইসলামীকে বেশি কথা বলতে দেওয়ায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে ওয়াক আউট করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটি (সিপিবি) ও গণফোরাম। অবশ্য মিনিট দশেক পর দলগুলো আবার সংলাপে ফিরে যায়।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় দ্বিতীয় দফার সংলাপের তৃতীয় দিনের আলোচনা শুরু হয়। মধ্যাহ্ন বিরতির পর বেলা পৌনে তিনটায় আবার সংলাপ শুরু হয়। এক ঘণ্টা পর সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বেরিয়ে আসেন।
রুহিন হোসেন প্রিন্স নীচতলায় নেমে বলেন, ‘এখানে বৈষম্য হচ্ছে, জামায়েতের তিনজনকে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। আমাদের একজন বক্তব্য দিতে গেলেও বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ জানালে, কমিশন তা নোট করে। তাই আবার সংলাপে ফিরে যাচ্ছি।’
এর আগে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশন নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। তারা নিরপেক্ষ না হলে কমিশন সংলাপে ফিরবে না।’
সিপিবি এবং গণফোরাম নেতাদের সংলাপে ফিরিয়ে নিতে নেমে আসেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। ছিলেন বিএনপির সমমনা দল বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহছান হুদা।
শাহাদাত সেলিম বলেন, উনাদের জামায়াত বলেছেন, আপনারা তো ১০ জন মানুষের প্রতিনিধিত্বও করেন না। আমরা কতজনের প্রতিনিধিত্ব করি। সেলিম আরও জানান, তিনি ওয়াক আউট করেননি। সমঝোতা করেছেন।
এরপর দলগুলো সংলাপে ফিরে যায়।