বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবতী ইউনিয়নের দুটি পাড়ায় সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে চারটি গাদা বন্দুক ও সরঞ্জামসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ শুক্রবার সকালে চালানো এ অভিযানে আটক ব্যক্তিরা পার্বত্য আঞ্চলিক সংগঠন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস-মূল) সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

আলীকদম সেনা জোন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আলীকদম জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো.

মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। এতে টংকাবতী ইউনিয়নের পুনর্বাসন চাকমাপাড়া থেকে ছয়জন এবং ইমানুয়েল ত্রিপুরাপাড়া থেকে তিনজনকে আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন পুনর্বাসন চাকমাপাড়ার আনন্দ মোহন চাকমা (৭২), শান্তিরাম চাকমা (৩৩), চাতুই চাকমা (৩৫), শান্তিরঞ্জন চাকমা (৩৫), কল্পরঞ্জন চাকমা (৪৫) ও জ্যোতি বিকাশ চাকমা (২৮) এবং ইমানুয়েল ত্রিপুরাপাড়ার পাখিরাম ত্রিপুরা (৩১), ছতিয় ত্রিপুরা (৬০) ও জুয়েল ত্রিপুরা (২৬)।

সেনাবাহিনী জানায়, তাঁদের কাছ থেকে চারটি গাদা বন্দুক, তিনটি ছুরি, দুটি মুঠোফোনসহ নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে জেএসএস (মূল)-এর সদস্য হিসেবে চাঁদাবাজি, ডাকাতি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়ানোর মতো কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।

এ ব্যাপারে জেএসএসের কোনো নেতার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। টংকাবতী ইউনিয়নের কয়েকজন জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আনন্দ মোহন চাকমা পুনর্বাসন চাকমাপাড়ার কার্বারি (পাড়াপ্রধান)। বাকিরা পাড়ার বাসিন্দা।

আলীকদম সেনা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের চাঁদা দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেউ চাঁদা দাবি করলে তাৎক্ষণিকভাবে সেনা জোনে জানানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শুভ মহালয়া আজ, এবার দুর্গাপূজার মণ্ডপ বাড়ছে

বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজার পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া আজ রোববার। এর মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষ শুরু হলো।

শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। এই ‘চণ্ডী’তেই রয়েছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা এবং দেবীর প্রশস্তি।

দেশের অন্যান্য পূজামণ্ডপের মতো ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে মহালয়ার অনুষ্ঠান হবে আজ। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, দেবীপক্ষের সূচনালগ্নে আজ সকাল ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সকাল সাড়ে সাতটায় হবে পূর্বপুরুষের আত্মার শান্তি কামনায় তিল-তর্পণ অনুষ্ঠান। আর সকাল সাড়ে আটটায় মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা হবে।

এবার দেবী দুর্গার আসার বাহন হবে গজে (হাতি), যা শুভ লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়। আর বিদায় হবে দোলায় (পালকি), যা অশুভ লক্ষণ হিসেবে পরিচিত।

ঢাকেশ্বরী দুর্গাপূজা মণ্ডপের পুরোহিত বরুণ চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, মহালয়ার মাধ্যমে দুর্গোৎসবের ক্ষণগণনা শুরু হয়। মহালয়ায় দেবী দুর্গার ঘট বসানো হয়। ঘট বসানোর মাধ্যমে দেবী দুর্গা বেলতলায় অবস্থান নেন। অর্থাৎ কৈলাস (স্বর্গলোক) থেকে মর্ত্যে (বেলতলায়) আসবেন দেবী দুর্গা।

এবার দেবী দুর্গার আসার বাহন হবে গজে (হাতি), যা শুভ লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়। আর বিদায় হবে দোলায় (পালকি), যা অশুভ লক্ষণ হিসেবে পরিচিত।

২৮ সেপ্টেম্বর দুর্গাষষ্ঠী

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি জানায়, মহালয়ার ছয় দিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর (আগামী রোববার) শ্রীশ্রী দুর্গাষষ্ঠী। এর মাধ্যমেই মূলত আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্গাপূজা শুরু হবে। সেদিন দেবী দুর্গার ষষ্ঠাদি কল্পনারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা হবে। সেই সঙ্গে হবে দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাস। দুর্গোৎসবে ২৯ সেপ্টেম্বর হবে মহাসপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর মহাঅষ্টমী, ১ অক্টোবর মহানবমী এবং ২ অক্টোবর বিজয়া দশমী।

দুর্গাপূজা মণ্ডপের সংখ্যা বাড়ছে

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সারা দেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপ ও মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। আর ঢাকা মহানগর এলাকায় গত বছর ২৫২টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা হয়েছিল।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, এ বছর সারা দেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীর ২৫৮টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

দুর্গাপূজায় সরকারের অনুদান ৫ কোটি টাকা

অন্তর্বর্তী সরকার দুর্গাপূজার জন্য এবার সব মিলিয়ে ৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। এই তথ্য গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানিয়েছেন হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, প্রতি মণ্ডপে ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। তবে সব মণ্ডপে হয়তো বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হবে না। এ ছাড়া যেসব মন্দিরের নামে ব্যাংক হিসাব নেই, সেখানে বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না।

প্রতিমায় রঙের কাজ চলছে

ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজার জন্য প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। গতকাল বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পর্দা দিয়ে ঢেকে প্রতিমা তৈরির কাজ করা হচ্ছে। ঢাকেশ্বরী দুর্গাপূজা মণ্ডপের পুরোহিত বরুণ চক্রবর্তী বলেন, দুর্গাপ্রতিমায় মাটির কাজ করা হয়ে গেছে। রং ও সাজসজ্জার কাজ বাকি আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ