‘কারাগার থেকে মাদক সম্পূর্ণ নির্মূল করা রাতারাতি সম্ভব নয়’
Published: 21st, June 2025 GMT
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেছেন, কারাগার থেকে মাদক সম্পূর্ণ নির্মূল করা রাতারাতি সম্ভব নয়। তবে কারা কর্তৃপক্ষ মাদক বিস্তার রোধে কঠোরভাবে কাজ করছে এবং এই বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করা হচ্ছে।
শুক্রবার (২০ জুন) বিকেলে যশোর কারাগার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘‘মাদকের সঙ্গে জড়িত জেল পুলিশসহ বন্দিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে মাদকের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বেশ কয়েকজন জেল পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিটি স্তরে সংস্কারের জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘‘এরই ধারাবাহিকতায় কারাগারে কী কী সংস্কার আনা প্রয়োজন, সেগুলোর বিষয়ে আমরা কাজ করছি। সেজন্য প্রতিটি জেলখানায় গিয়ে সরেজমিনে পরিদর্শন করা হচ্ছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘জেল পুলিশের স্লোগান ‘রাখিব নিরাপদ, দেখাবো আলোর পথ’-বন্দিদের সেই আলোর পথ দেখানোর জন্য আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করছি। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে দ্রুত এই সংস্কার কাজ শেষ হবে এবং বন্দিরা কারাগারে আরও ভালো পরিবেশ পাবে।’’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় নরসিংদীর কারাগার থেকে পালানো আসামিদের বিষয়ে জানতে চাইলে কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘‘পলাতক বন্দীদের সবাইকে এখনো ধরা সম্ভব হয়নি। তাদের ধরতে বাংলাদেশ পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে। তবে এই মুহূর্তে তাদের আটক করতে যে পরিমাণ ফোর্স নামানো প্রয়োজন, সেটি তারা পারছেন না।’’
তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, ‘‘আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কোনো অপরাধী বেশিদিন থাকতে পারবে না এবং পলাতক আসামিরা দ্রুত আটক হবে।’’
যশোর কারাগারের সংস্কারের বিষয়ে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক জানান, ১৮৭৫ সালে নির্মিত এই কারাগারটির এরপর বড় ধরনের কোনো সংস্কার হয়নি। কারাগারটি পুনর্নির্মাণের ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে যশোর কারাগারের কাঠামোগত বড় সংস্কার হবে। পাশাপাশি, কারাগার পরিদর্শনে এখানকার বর্তমান ব্যবস্থাপনা দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
ঢাকা/রিটন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা জাতি হিসেবে অত্যন্ত বেহায়া-নির্লজ্জ: শবনম ফারিয়া
ছোট ও বড় পর্দার অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। এতদিন নাটক-টেলিফিল্মের কাজ নিয়েই অধিকাংশ সময় ব্যস্ত থাকতেন। তবে তুলনামূলক এখন কাজ কমিয়ে দিয়েছেন। স্বভাবে অনেকটা—ঠোঁটকাটা। যার কারণে প্রায় সময়ই আলোচনায় থাকেন তিনি।
গত বছর গণঅভ্যত্থানে ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান শবনম ফারিয়া। কিন্তু কিছু মানুষের আচরণে ভীষণভাবে আহত তিনি। কেবল তাই নয়, জাতি হিসেবে অত্যন্ত বেহায়া, নির্লজ্জ বলে উপলদ্ধি তার। বুধবার (১৮ জুন) শবনম ফারিয়া তার ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে কখনো অভিমান, কখনো ক্ষোভ প্রকাশ করেন এই অভিনেত্রী।
একটি গল্প দিয়ে লেখা শুরু করেন শবনম ফারিয়া। তিনি লেখেন, “একটা গল্প আছে না, শীতের সকালে একজন ইমাম আর একজন চোরের! ইমাম ভাবে, কি ভালো একটা মানুষ এই ঠান্ডায় ফজরের নামাজ পড়তে এসেছে। চোর ভাবে, কি ভদ্রলোক দেখতে, দাড়িদুড়ি রেখে আবার চুরি করে! এই গল্প থেকে আমরা কি শিখেছিলাম? শিখেছিলাম যে যেমন, যার চিন্তাধারা যেমন, অন্যদেরও তাদের সেইম মনে হয়!”
আরো পড়ুন:
নরমাল ডেলিভারির ‘মিশন’ নিয়ে থাইল্যান্ডে স্বাগতা
‘মিমির মানবিক আচরণে চোখে পানি চলে এসেছিল’
শবনম ফারিয়ার দাবি, পৃথিবীর সব মানুষ টাকার জন্য নীতি বিক্রি করেন না। তার মতে, “বিশ্বাস করেন, পৃথিবীর সব মানুষ ‘টাকার’ (ডলারও পড়তে পারেন) কাছে তাদের ‘এথিক্স’ বিক্রি করে না। দুনিয়ার ‘সব মানুষের’ কাছে টাকাই ‘সব’ না। কিন্তু মানুষ নিজস্বতায় বিশ্বাস করে! স্রোতের বিপরীতেও যায়! রিস্ক নেয়!”
গণঅভ্যত্থানের সময়ের একটি ঘটনা বর্ণনা করে শবনম ফারিয়া লেখেন, “জুন মাসে যখন আন্দোলন তুঙ্গে, ইন্টারনেট চলে যাওয়ার পরপর যেসব সেলিব্রিটিদের কাছে, মেট্রোরেল/বিটিভিতে আগুন দেয়ার প্রতিবাদ করার জন্য ভিডিও বানাতে বলা হয়, আমিও তাদের মধ্যে একজন। আমি প্রথমে সময় চেয়ে বলি, ভেবে জানাব! স্বাভাবিক, সে সময় ডাইরেক্ট না করার মতো সাহস যোগার করতে পারিনি। তারাও বলে সময় নেন, আপাতত এমনেতেই ইন্টারনেট নাই। যেহেতু হোয়াটসআপ বন্ধ, তাও সিয়ামকে ডাইরেক্ট মেসেজ দেই, তুমি কি ‘এস’ ভাইয়ের কল পেয়েছো? ও রিপ্লাই করে, ‘হ্যাঁ পেয়েছি এবং না বলেছি।’ তখন সাহস পাই এবং আমিও তখন না বলি।”
এই ঘটনা প্রকাশ করার কারণ জানিয়ে শবনম ফারিয়া লেখেন, “এইসব কথা অযথা বলে বেড়ানোর কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না! সেসময় এইটাই করার কথা, না বলেছি বলে আমি বিশেষ কোন ক্রেডিট নিতে চাইনি। যেহেতু আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ কোনোভাবেই জড়িত না, অদূর ভবিষ্যতেও কোনো ইচ্ছা কিংবা পরিকল্পনা নেই তাও যখন দেখি কেউ লেখে, ‘এরা তো ডলার খাইছে’ মার্কা কল্পনিক গল্প, হাসা ছাড়া কিছু করার থাকে না। ভাই, আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি, যারা মন থেকে আওয়ামীলীগ ভালোবাসে কিন্তু জুলাইতে লাল ডিপি দিসিলো! হয়তো জুলাইকে আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে যেভাবে সে সময় পোট্রে করা হইছে এখন বিষয়টা তেমন নাই, কিন্তু সেসময় আপনি যদি মানুষ হয়ে থাকেন, অমানুষ না হন তাহলে আপনি কোনো মানুষকে হত্যা করার প্রতিবাদ না করে থাকতে পারতেন না, আপনার রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা মতাদর্শ যাই হোক!”
আর রাজনৈতিক কোনো স্ট্যাটাস দেবেন না শবনম ফারিয়া। তার কারণ ব্যাখ্যা করে এই অভিনেত্রী লেখেন, “এই স্ট্যাটাস দিয়ে বাংলাদেশের পলিটিক্স নিয়ে স্ট্যাটাস দেয়া বন্ধ করলাম! কারণ ফাইনালি আমি বুঝে গেছি, জাতি হিসেবে আমরা অত্যন্ত বেহায়া এবং নির্লজ্জ, আমরা কক্ষনো ভালো হবো না, যত আন্দোলন হোক, সরকার পরিবর্তন হোক, যতই শান্তিতে নোবেল পাওয়া মানুষ আসুক, আমাদের কেউ দুর্নীতি এবং চুরি করা থেকে আটকাতে পারবে না! শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ যেই ক্ষমতা পাবে সেই অসৎভাবে ব্যবহার করবে। আমি আর আমার নিজ দেশের কাছে আর কোনো প্রত্যাশা রাখি না! পরিশেষে বলতে চাই, সত্যি সত্যি ডলার পেলে আসলে ভালোই লাগতো! শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে ২৫ হাজার ৩০০ টাকা দিয়ে ২০০ ডলার পাসপোর্টে এন্ডোরর্স করতে খুবই কষ্ট হইছে।”
ঢাকা/শান্ত