প্রেমিকের সঙ্গে রিয়ামনিকে পুলিশে দিল এলাবাসী, আদালতে প্রেরণ
Published: 22nd, June 2025 GMT
আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমের স্ত্রী রিয়ামনি ও আরেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও বার ডান্স্যার ম্যাক্স অভি রিয়াজকে আটকের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। গতকাল রিয়া মনি ও ম্যাক্স অভিকে হাতেনাতে ধরার অভিযোগ করেন হিরো আলম। এ সময় হিরো আলমকে মারধরও করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এরপরই এলাকাবাসী পুলিশে সোপর্দ করেছে রিয়া মনি ও ম্যাক্স অভি রিয়াজকে।
সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে ম্যাক্স অভি রিয়াজকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলছে পুলিশ। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে গাড়িতে তোলা হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে রিয়া মনিকেও গাড়িতে তোলা হয়।
বিষয়টি নিয়ে হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজ্জাদ হোসেন সমকালকে জানান, হ্যাঁ, কালকে উভয়কেই থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় তাদের উভয়কে আজকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত এপ্রিল মাসে, বাবার মৃত্যুর সময় হিরো আলম অভিযোগ তোলেন, তার বাবার দেখভাল করেন না স্ত্রী রিয়ামনি। এ জন্য তিনি রিয়ামনিকে ডিভোর্সের ঘোষণা দেন। তখনই সামনে ম্যাক্স অভি রিয়াজের অধ্যায়। অন্যদিকে ম্যাক্স অভির স্ত্রী ইতিও অভিযোগ করেন, তার স্বামীর সঙ্গে রিয়া মনির অবৈধ সম্পর্কের কারণেই ঘর ভেঙেছে তারও। হিরো আলম ও ইতি একসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনও করেন। রিয়া মনির সঙ্গে ডিভোর্সের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে হিরো আলমের।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গানে–আবৃত্তিতে রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা
জমিদারির কাজে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, শাহজাদপুর, নওগাঁর পতিসরে বহুবার ভ্রমণ করেছিলেন। পদ্মায় বোটে করে ভাসতে ভাসতে দেখেছেন বাংলার সজল সবুজ প্রকৃতি। নদীর দুই পারের মানুষের জীবনযাত্রা। বাউল, ভাটিয়ালি গানের সুরে মোহিত হয়েছে কবির চিত্ত। কবি সেই সব দেখা ও শোনার অভিজ্ঞতা, আবেগ, অনুভব প্রকাশ করেছেন গানে, কবিতায়, গল্পে আর ‘ছিন্নপত্র’ নামের চিঠিতে। কবির প্রয়াণ দিবসের আয়োজনে সেই রচনা থেকে পাঠ আর গানে গানে শ্রদ্ধা নিবেদন করল ছায়ানট।
গতকাল বুধবার ২২ শ্রাবণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবসে ‘অন্তরতর হে-বাংলাদেশের রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। সন্ধ্যা সাতটায় ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি–ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল সম্মেলক কণ্ঠে ‘অন্তর মম বিকশিত কর অন্তরতর হে’ গানটি দিয়ে। পরে ইফফাত বিনতে নাজি গেয়েছেন ‘চিত্ত পিপাসিতরে গীত সুধার তরে’। গানের ফাঁকে ফাাঁকে পদ্মাপারের জীবনযাত্রা নিয়ে কবির লেখা থেকে পাঠ ও কবিতা আবৃত্তি করেছেন সুমনা বিশ্বাস ও জহিরুল হক খান। এরপর আবার সম্মেলক কণ্ঠের গান ‘হৃদয় আমার নাচে রে আজিকে ময়ূরের মতো নাচে রে’।
একদা পদ্মাঘাটে লেগেছিল কবির বোট। পাশেই গ্রামের কোনো এক বধূকে বিদায় দিতে সমবেত হয়েছিল তাঁর বিভিন্ন বয়সী আত্মীয়স্বজন। নানা কথোপকথনে মেতে উঠেছিলেন তাঁরা। কবি সেই বর্ণনা লিখেছিলেন তাঁর অনন্য কাব্যময় ভাষায়। সেটি পাঠ করা হলো। তারপর দুটি একক কণ্ঠের গান। ‘ওলো সই, ওলো সই আমার ইচ্ছা করে তোদের মতো মনের কথা কই’ গানটি গেয়ে শোনালেন মাসকুরা আখতার। অমেয়া প্রতীতি পরিবেশন করলেন ‘তোমার গোপন কথাটি, সখী, রেখো না মনে’।
এবার এক ধবল জ্যোৎস্নার বর্ণনা। পদ্মার জনমানবহীন, বৃক্ষ–তৃণশূন্য, দিগন্তবিস্তৃত ধু ধু বালুচর। কোজাগর পূর্ণিমার জ্যোৎস্নাস্নাত সেই চর দেখে কবির মন ভরে উঠেছিল ভাবাবেগে। তাঁর রচনা থেকে সে রাতের বর্ণনা পাঠের পর অভয়া দত্ত গেয়ে শোনালেন ‘আজি যে রজনী যায়’। দীপ্র নিশান্ত শোনালেন ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা তুমি আমার সাধের সাধনা।’
অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছিল পাঠ আবৃত্তি আর গানে গানে। গান নির্বাচন করা হয়েছিল পাঠ ও আবৃত্তির বিষয়ের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে। ‘দুই পাখি’ কবিতাটি আবৃত্তির পরে কবিতাটির গান পরিবেশন করেন তাহমিদ ওয়াসীফ। ‘বঁধু মিছে রাগ করো না’ গেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
পূর্ব বাংলায় এসে বাউলগানের সুর, মরমি ভাবধারায় কবি গভীরভাবে আকৃষ্ট হয়েছিলেন। সে কথা তিনি লিখেছেনও নানা রচনা ও চিঠিতে। তার খানিকটা পাঠ করে শোনানো হলো শ্রোতাদের। তারপর ‘আমি কান পেতে রই’ গানটি পরিবেশন করলেন অভিজিৎ দাস।
কবির অন্তরের যে আধ্যাত্মিক ভাব ও ভাবনা, সেসব নিয়েই তিনি নৈবেদ্য কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলো রচনা করছিলেন। এই কবিতাগুলো নিয়ে তখন স্তুতি ও সমালোচনা, চারপাশের নানা রকম কোলাহল। সেসবের কোনো কিছুতেই তিনি বিচলিত বোধ করছিলেন না। বন্ধু বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুকে তাঁর ভাব–ভাবনার কথা জানিয়ে পত্র রচনা করেছিলেন কবি। পত্র থেকে পাঠ করা হলো। পরে ‘কোলাহল তো বারণ হলো’ গানটি গাইলেন মনীষা সরকার। আজিজুর রহমান তুহিন শোনালেন ‘জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ’। শেষে সম্মেলক কণ্ঠে ‘আজ বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ পরিবেশনা। আর সমাপ্তি হলো বরাবরের মতোই জাতীয় সংগীত দিয়ে।