ধর্ষণ মামলায় কারাগারে কৃষক দলের নেতা, পদ স্থগিত
Published: 24th, June 2025 GMT
যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল পৌর কৃষক দলের সভাপতি জসিম উদ্দীনকে ধর্ষণের অভিযোগ করা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার জামিন চেয়ে আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে ধর্ষণ মামলায় কারাগারে যাওয়ায় জসিমের পদ স্থগিত করেছে কৃষক দল। আজ মঙ্গলবার সংগঠনের যশোর জেলা শাখার আহ্বায়ক মকবুল হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ২৫ এপ্রিল যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন যশোর পৌরসভার এক নারী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, জসিমের সঙ্গে ভুক্তভোগী ওই নারীর পাঁচ মাস আগে ফেসবুকে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েক দিনের মধ্যেই জসিম তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং তাতে রাজি হন ওই নারী। এরপর হোটেলে ও আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন জসিম। পরবর্তী সময়ে জসিম বলেন, তিনি বিয়ে করবেন না।
এ ব্যাপারে যশোর জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মকবুল হোসেন বলেন, জসিম উদ্দীনের পদ স্থগিত করা হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে বহিস্কার করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আগ্রহ বেশি শহরের কলেজে, মফস্সলে খালি থাকবে আসন
শিক্ষার্থী ভর্তি না হওয়া ও আসন ফাঁকা থাকার প্রবণতা অব্যাহত থাকায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এ বছর একাদশ শ্রেণির ১৭ হাজার ৮৭৫টি আসন কমানো হয়েছে। গত বছর বোর্ডের অধীন ২৯০ কলেজে আসন ছিল ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৪টি, এ বছর কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫১ হাজার ৬৪৯টিতে। আসন কমানো হলেও এবারও প্রায় ৩৩ শতাংশ আসন খালি থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা। গত বছরও খালি ছিল ৩৫ শতাংশ আসন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, পরিচিত ও ভালো কলেজগুলোয় ভর্তির চাপ বেশি থাকলেও মফস্সল এলাকার অনেক কলেজে আসন ফাঁকা থেকে যায়। এ বছর বোর্ডের অধীন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলা—রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির কলেজগুলোয় মোট পাস করেছে ১ লাখ ১ হাজার ১৮১ জন শিক্ষার্থী। পাস করা সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও অন্তত ৫০ হাজার আসন খালি থাকবে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এই পাঁচ জেলায় ভর্তি হয়েছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৭৩১ শিক্ষার্থী, খালি ছিল ৫৮ হাজার ৭৯৩টি আসন।
চট্টগ্রাম বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মোহাম্মদ ছরওয়ার আলম বলেন, অনেক কলেজ আসন বাড়ানোর আবেদন করেছিল। যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, কোথাও ভর্তি অর্ধেক বা তারও কম। তাই আসন কমানো হয়েছে।
পাস করা সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও অন্তত ৫০ হাজার আসন খালি থাকবে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এই পাঁচ জেলায় ভর্তি হয়েছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৭৩১ শিক্ষার্থী, খালি ছিল ৫৮ হাজার ৭৯৩টি আসন।চট্টগ্রামে আসন বেশি, চাপও বেশি
বোর্ডের হিসাবে, চট্টগ্রাম জেলা একাই ধারণ করছে ১ লাখ ৯ হাজার ১৯৪টি আসন। পাস করা সব শিক্ষার্থী এখানকার কলেজে ভর্তি হলেও আট হাজারের বেশি আসন খালি থাকবে। বাস্তবে অনেকে জেলার বাইরে বা অন্য বোর্ডের কলেজে চলে যান।
ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই চট্টগ্রাম নগরের সরকারি কলেজগুলোর দিকে ঝোঁকেন। সম্প্রতি চকবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অনেক শিক্ষার্থী দোকানে বসে কলেজ ভর্তির আবেদন করছেন। তাঁদের পছন্দের তালিকায় চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, সিটি কলেজ ও সরকারি কমার্স কলেজ শীর্ষে।
নগরে সরকারি কলেজ ৮টি, আসন সাড়ে ৯ হাজারের বেশি। কলেজগুলোয় প্রতিবছর আসনের দ্বিগুণ আবেদন পড়ে। চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির আগ্রহ বেশি, ব্যবসায় শিক্ষায় সরকারি কমার্স কলেজ এগিয়ে। সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরই আসনের দ্বিগুণ আবেদন আসে। জিপিএ এবং প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি চূড়ান্ত হয়।
ঢাকায় যান ৭-১০ শতাংশ শিক্ষার্থী
বোর্ডের হিসাবে প্রতিবছর ৭ থেকে ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী অন্য বোর্ডের কলেজে ভর্তি হন, বিশেষ করে ঢাকায়। ২০২৪ সালে পাস করেছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৮৭ জন, ভর্তি হননি প্রায় ৮ শতাংশ। এ বছর পাসের হার কমায় এই হার আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শিক্ষকেরা।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ভৌত অবকাঠামো, শিক্ষকসংকট ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে মফস্সলে ভর্তি আগ্রহ কম। তাই সেখানে আসন বেশি ফাঁকা থাকে। নিয়ম মেনে এবার স্বল্পসংখ্যক আসন কমানো হয়েছে।
ভৌত অবকাঠামো, শিক্ষক-সংকট ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে মফস্সলে ভর্তি আগ্রহ কম। তাই সেখানে আসন বেশি ফাঁকা থাকে। নিয়ম মেনে এবার স্বল্পসংখ্যক আসন কমানো হয়েছেইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ, চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডআসন তালিকা অনুযায়ী, চট্টগ্রাম ছাড়া বাকি চার জেলায় মোট আসন ৪২ হাজার ৪৭৫টি—এর মধ্যে কক্সবাজারে ১৮ হাজার ৬৮৫, খাগড়াছড়িতে ৯ হাজার ৫২০, রাঙামাটিতে ৮ হাজার ৭৯৫ ও বান্দরবানে ৫ হাজার ৪৭৫টি।
চট্টগ্রাম বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে আসন ৩২ হাজার ৪৮৯, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৫২ হাজার ২৭৫ ও মানবিক বিভাগে ৬৬ হাজার ৮৩৫টি। গার্হস্থ্যবিজ্ঞানে আছে মাত্র ৫০টি আসন, যা নগরের হালিশহরের গার্হস্থ্য অর্থনীতি সিটি করপোরেশন কলেজে। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম ধাপের আবেদন চলবে ১১ আগস্ট পর্যন্ত।