ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
Published: 7th, November 2025 GMT
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে আজ শুক্রবার বিকেলে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশের ৩ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের সময় বিএনপির এক পক্ষের একটি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। আগুন দেওয়া হয় অন্তত ১০টি মোটরসাইকেলে। এ ছাড়া আশপাশের কয়েকটি দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শামসুদ্দীন মিয়ার নেতৃত্বে বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত। দুই নেতাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-১ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী, তবে বিএনপি এখনো এই আসনে কাউকে মনোনয়ন দেয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বেলা তিনটার দিকে শামসুদ্দীন মিয়ার সমর্থকেরা ওয়াপদার মোড় এলাকায় ও নাসিরুল ইসলামের সমর্থকেরা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজ মোড়ে জড়ো হন। তাঁদের হাতে বাঁশের লাঠির মাথায় ধানের শীষ বাঁধা ছিল। বিকেল চারটার দিকে নাসিরুল ইসলামের অনুসারীরা মিছিল নিয়ে ওয়াপদার মোড়ের দিকে এগোতে থাকেন। তখন শামসুদ্দীনের সমর্থকেরা কলেজের দিকে যেতে থাকেন। উভয় পক্ষ বোয়ালমারী পৌরসভার সামনে এলে পরস্পরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। তবে নাসিরুল ইসলামের সমর্থকেরা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় শামসুদ্দীনের সমর্থকেরা পিছু হটে ওয়াপদার মোড়ে হারুন শপিং কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান নেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এ সময় বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি আগুন নেভাতে এলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়। পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে অবস্থান নিলে ফায়ার সার্ভিস আবার এসে আগুন নেভায়।
জানতে চাইলে বিএনপি নেতা শামসুদ্দীন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশাসনকে জানিয়ে আমরা ওয়াপদার মোড়ে অনুষ্ঠান করছিলাম। এ সময় নাসিরুলের লোকজন আওয়ামী লীগের লোকদের সঙ্গে নিয়ে অতর্কিতে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। তাঁরা ১০টি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে। আমার কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। এ ঘটনায় আমার ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। কার্যালয়ে থাকা খালেদা জিয়ার ছবি ভাঙচুর করা হয়েছে।’
তবে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ছিলাম মধুখালী। আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করা হয়েছে। একজনকে কুপিয়ে জখম করেছে। ওরা হারুন শপিং কমপ্লেক্সের ওপরে উঠে আমার সমর্থদের ওপর ইট ছুড়ে মারলে চার-পাঁচজন আহত হন। এতে জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে শপিং কমপ্লেক্সে হামলা করেন।’
এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান সন্ধ্যা ছয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন স র ল ইসল ম কমপ ল ক স ব এনপ র স ঘর ষ এ সময় র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
শামীম ওসমানদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা সাহসী তরুণরা লড়াই করেছে নূর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে অসংখ্য সংগ্রামী এবং সাহসী তরুণ রয়েছে যারা এই নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে হাসিনার পতনের জন্য লড়াই করেছে। মানুষের সমর্থন পেলে তারাই আগামীর জনপ্রতিনিধি হবে।
শুক্রবার(৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের আয়োজনে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজবিরোধী তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য সংগঠনের মত কেউ কেউ চাঁদাবাজি করে দাবি করে তিনি নুরু বলেন,মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই মাদকের ব্যবসা-বাণিজ্য চলে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায়। শুধুমাত্র ব্যক্তি পাল্টায় দৃশ্যপট পাল্টায় না।
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন কল-কারখানা, শিল্প মালিকদের কাছ থেকে আগে শামীম ওসমানের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের লোকের চাঁদা নিতো। এখনো কেউ না কেউ চাঁদা নিচ্ছে। চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সন্ত্রাস বন্ধে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট দরকার। কিন্তু কেউ সেটি চায় না। কারণ সবাই ভোটকেন্দ্র দখল করার জন্য, গুন্ডামি, মাস্তানি করার জন্য তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে চায়।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামীতে বাংলাদেশ কোন দিকে এবং কীভাবে পরিচালিত হবে তার ফয়সালা হবে এই নির্বাচনে। তাই ছাত্র-জনতাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনারা নির্বাচনে কাদেরকে ভোট দিবেন। ভালো মানুষকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে দেশের ভালো হবে। পেশিশক্তি, কালো টাকার মাফিয়া, দুর্বৃত্তদের পেছনে স্লোগান দিয়ে রাজনীতি করার দিন শেষ।
গণঅধিকার পরিষদ এখন পর্যন্ত কারও সঙ্গে নির্বাচনী জোট করেনি দাবি করে নুরুল হক বলেন, রাষ্ট্র ব্যবস্থা, দেশের পরিবর্তনের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা বিবেচনার পর জোটের কথা ভাববেন।
নুরুল হক আরও বলেন, ক্ষমতা জনগণের কাছে। কাজেই জনগণ যদি সিদ্ধান্ত নেয় তাহলেই কেবলমাত্র পরিবর্তন সম্ভব। শুধুমাত্র টেলিভিশনে টকশো কিংবা রাজনীতির মাঠে বক্তব্য দিয়ে দেশ পরিবর্তন হবে না। মানুষকে পরিবর্তন হতে হবে।
নুরুল হক বলেন, ৫ আগস্টের আগে যে স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষা নিয়ে তরুণরা জীবন বাজি রেখে রাজপথে নেমেছে গণঅভ্যুন্থানের পরের ১৫ মাসেও পূরণ হয়নি।
৫ই আগস্টের পূর্বে যেই স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তরুণরা নিজের জীবন বাজি রেখে রাজপথে নেমেছে এই ২৪শের গণঅভ্যুন্থানের পরের মাসে সেই স্বপ্ন এবং পরিবর্তন কতটুকুপূরণ হয়েছে? পূরণ কি হয়েছে? পূরণ হয় নাই। কাজেই ওই যে আমরা রাজপথে বারবার স্লোগান দেই। দিয়েছি তো রক্ত। আরো দেব রক্ত। আমরা আর রক্ত দিতে চাই না। আমরা আর রক্ত দিব না।
রক্ত ২৪শে জুলাই গণহত্যা পর্যন্ত যা দিয়েছি সেই রক্তের শপথ গড়া এই শহীদদের স্বপ্নের সারা বাংলাদেশ নির্মাণ করবো। ২৪শে জুলাই পরবর্তী এটাই হোক আমাদের দীপ্ত শপথ। ঠিক। আমরা যারা রাজপথে বারবার স্লোগানে বলি শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না।
কিন্তু বাংলাদেশের গত ৫০ বছরে শহীদের রক্ত অনেক ক্ষেত্রেই বৃথা গিয়েছ। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা যেই লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি সেটি পূরণ হয় নাই