মোহাম্মদপুরে ‘পাটালি গ্রুপের’ দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ ১৬ জন গ্রেপ্তার
Published: 25th, June 2025 GMT
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিশেষ অভিযানে কিশোর গ্যাং ‘পাটালি গ্রুপের’ দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইয়াসিন ও শরীফসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ইয়াসিন (২০), শরীফ (২৪), সাবিত ইবনে (৩৩), রফিকুল ইসলাম (১৮), ফারুক (২৭), আরিফ (২৬), সাজ্জাদ (২২), আলামিন (২৮), রাকিব মিয়া (৩০), মেহেদি হাসান বাপ্পি (২৪), সলেমান (২০), আখতারুজ্জামান টিটপ (৫৭), বায়োজিদ ওরফে রানা (২৫), রায়হান (২৭), রাজু (৩০) এবং সুজন (২৫)। এঁদের মধ্যে পাটালি গ্রুপের দুজনকে জাফরাবাদ এলাকায় একই পরিবারের ছয়জনকে কোপানোর ঘটনায় এবং বাকি ১৪ জনকে বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মোহাম্মদপুর থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ মে রাত দেড়টার দিকে মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ এলাকায় কথা–কাটাকাটির জেরে পাটালি গ্রুপের নেতা হাসান, ইয়াসিন, পিঁপড়া রাজিবসহ ১০-১২ জনের একটি দল একই পরিবারের ছয়জনকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হলে পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করে পাটালি গ্রুপের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ সাহিন ও পিঁপড়া রাজিবকে গ্রেপ্তার করে।
একই মামলায় গত ২৩ মে রাত সাড়ে নয়টার দিকে রায়েরবাজার বোটঘাট এলাকা থেকে ইয়াসিনকে চাপাতিসহ গ্রেপ্তার করা হয়। ইয়াসিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে কাদিরাবাদ এলাকায় আত্মগোপনে থাকা শরীফকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে শরীফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বোটঘাট খালপাড় থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত আরেকটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়। দুই আসামিকেই ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা দেখে শনাক্ত করা হয়। পাটালি গ্রুপের অন্যান্য সদস্যকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানায় মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র থ ন গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ”: অর্থ ও ফজিলত
ইসলামে জিকির মুমিনের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ, যা আল্লাহর সঙ্গে আধ্যাত্মিক সংযোগ দৃঢ় করে এবং মনকে শান্তি প্রদান করে। এর মধ্যে “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” একটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ জিকির, যা কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত।
এই জিকিরটি মানুষের দুর্বলতা ও আল্লাহর সর্বশক্তিমান ক্ষমতার প্রতি ঈমান প্রকাশ করে। এটি কঠিন পরিস্থিতিতে, দুশ্চিন্তায় বা কোনো কাজ শুরুর আগে পড়া হয়, যা মুমিনকে আল্লাহর উপর ভরসা করতে উৎসাহিত করে।
অর্থ“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” এর অর্থ:“কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই আল্লাহর শক্তি ও ক্ষমতা ছাড়া।”
অর্থাৎ, এটি মানুষের সীমাবদ্ধতা নির্দেশ করে যে, কোনো কিছুই মানুষের নিয়ন্ত্রণে নয়; সবকিছু আল্লাহর হাতে। এই কথার মাধ্যমে একজন মুমিন স্বীকার করে যে, সকল শক্তি ও সাফল্যের উৎস একমাত্র আল্লাহ।
এই জিকির মানুষকে আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হতে শেখায় এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে উৎসাহিত করে। (তাফসির মা’আরিফুল কুরআন, মুফতি শফি উসমানী, পৃষ্ঠা: ৮/২৪৫, মাকতাবাতুল আশরাফ, ২০১০)
আরও পড়ুনসর্বশ্রেষ্ঠ জিকির লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ফজিলতহাদিসে এই জিকিরের গুরুত্ব ও পুরস্কার সম্পর্কে বর্ণনা পাওয়া যায়। আবু মুসা আল-আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ পড়ে, তা জান্নাতের ধনসম্পদের মধ্যে একটি।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪২০২)
এই জিকিরের ফজিলতের মধ্যে রয়েছে:
গুনাহ মাফ: এটি পড়ার মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয় এবং আল্লাহর রহমত অর্জিত হয়।
মানসিক শান্তি: কঠিন পরিস্থিতিতে এই জিকির মনের উদ্বেগ দূর করে এবং আল্লাহর উপর ভরসা বাড়ায়।
জান্নাতের পথ: হাদিস অনুযায়ী, এটি জান্নাতে প্রবেশের একটি মাধ্যম।
সুরক্ষা: এটি শয়তানের ক্ষতি ও বদ নজর থেকে রক্ষা করে। (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৭১)
আরও পড়ুনতাওহিদ বলতে কী বোঝায়১২ জুলাই ২০২৫কখন পড়তে হবে?এই জিকিরটি যেকোনো সময় পড়া যায়, তবে নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে এটি বিশেষভাবে উপকারী:
কঠিন পরিস্থিতিতে: দুশ্চিন্তা, ভয় বা চাপের সময় এটি পড়া মানসিক শক্তি প্রদান করে।
কাজ শুরুর আগে: যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার আগে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা।
সকাল-সন্ধ্যার জিকির: প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়মিত পড়া।
নামাজের পর: ফরজ নামাজের পর জিকিরের অংশ হিসেবে পড়া। (ফিকহুস সুন্নাহ, সাইয়্যিদ সাবিক, পৃষ্ঠা: ২০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০১৮)
“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু গভীর তাৎপর্যপূর্ণ জিকির, যা মানুষকে আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হতে শেখায়। এর অর্থ—“কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই আল্লাহর শক্তি ও ক্ষমতা ছাড়া”—মুমিনের ঈমানকে দৃঢ় করে এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনার গুরুত্ব তুলে ধরে। এই জিকির জান্নাতের ধনসম্পদ, গুনাহ মাফের কারণ এবং মানসিক শান্তির উৎস। আধুনিক জীবনে ব্যস্ততা, উদ্বেগ ও চাপের মাঝে এই জিকির নিয়মিত পড়ার মাধ্যমে আমরা আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করতে পারি।
আরও পড়ুনধৈর্য গড়ে তুলতে কোরআনের ৬ শিক্ষা১৩ জুলাই ২০২৫