সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প বন্ধের কারণে নারীদের কর্মসংস্থান কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আজ বুধবার এক বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এ উদ্বেগ জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিমূলক ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের মেয়াদ শেষে নারী তথ্য সেবিকাদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১ হাজার ৯৮০ জন নারী চাকরিচ্যুত হবেন, যা নারীর ক্ষমতায়নের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এর আগে দেশের সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিল করা হয়েছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘জয়িতা’ প্রকল্পেও রাজধানীর ধানমন্ডির রাপা প্লাজায় ৯৪টি স্টলে কর্মরত জয়িতাদের পুনর্বাসন না করে চিঠি দিয়ে তাঁদের ২৪ মার্চের মধ্যে নিজ উদ্যোগে স্টল খালি করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। এ ছাড়া পোশাকশিল্পেও বিভিন্ন কারণে নারীদের অংশগ্রহণ ক্রমেই কমছে। কিন্তু নারীদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরির উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে না।

মহিলা পরিষদ বলছে, নারীদের কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার এসব প্রক্রিয়া অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ পরিস্থিতিতে তথ্য সেবিকাদের চাকরিচ্যুত করায় একদিকে যেমন নারীর কর্মসংস্থানের সংকোচন ঘটাবে, অন্যদিকে ডিজিটাল তথ্যসেবা থেকে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিশেষত গ্রামীণ ও প্রান্তিক নারীদের সেবাপ্রাপ্তি ব্যাহত হবে।

তথ্য আপা প্রকল্পটির তৃতীয় পর্যায়ে কর্মরত এত বিপুলসংখ্যক নারীকে চাকরিচ্যুত না করার অনুরোধ জানিয়েছে মহিলা পরিষদ। তারা বলছে, একের পর এক নারীদের কর্মসংস্থানের পথ সংকুচিত করার মাধ্যমে শুধু নারীদের অগ্রযাত্রাকে পিছিয়ে দেওয়াই হচ্ছে না, বরং দেশের সার্বিক উন্নয়নকেও ব্যাহত করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রায় প্রত্যাখ্যান আওয়ামী লীগের

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “আজ যে রায় ঘোষণা করেছে এ রায় বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করে। বাংলার জনগণ এ রায় মানে না, মানবে না।”

আরো পড়ুন:

রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি

তিনি বলেন, “অবৈধ আদালত যে মামলার রায় দিয়েছে সেটি ১৪ অগাস্ট শুরু করে ১৭ নভেম্বর মামলা শেষ করেছে। ৮৪ জন সাক্ষীকে সামনে রেখে ৫৪ জনকে হাজির করে ২০ দিনে মামলা শেষ করেছে। এই দুই মাসের মধ্যে মাত্র ২০ দিন আদালত চলেছে।”

“এর প্রধান বিচারক গত এক মাস অনুপস্থিত ছিলেন। তারপরেও প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে মানুষের প্রিয় নেত্রীর বিরুদ্ধে যে রায় দিয়েছে।”

জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “অচিরেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব”।

এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ২ নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া মামলার অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়। দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় ঘোষণা হলো আজ।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ