Samakal:
2025-10-03@04:07:24 GMT

ডায়াবেটিসে অন্ধত্ব ও করণীয়

Published: 26th, June 2025 GMT

ডায়াবেটিসে অন্ধত্ব ও করণীয়

ডায়াবেটিসের শুরুতেই রোগের লক্ষণ হিসেবে অনেকের ঝাপসা দৃষ্টি থাকতে পারে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সিকিভাগের বেশি রোগীর রোগ নির্ণয়ের সময় জটিলতা থাকে। এসব জটিলতার মধ্যে চোখের জটিলতা তথা রেটিনোপ্যাথি সবচেয়ে বেশি। ডায়াবেটিস বেড়ে গেলেও ঝাপসা দৃষ্টি তৈরি হতে পারে।

দৃষ্টিশক্তি হ্রাস, সোজা রেখা বাঁকা দেখা, দৃষ্টিসীমানার ভেতরে কালো কালো দাগ দেখা, আকস্মিক অন্ধত্ব– এগুলো সব হতে পারে রেটিনার ব্যাধিতে। মাঝেমধ্যে দৃষ্টিশক্তির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে রক্তে গ্লুকোজের তারতম্যের কারণে।

চোখের সবচেয়ে সংবেদনশীল স্তর হচ্ছে রেটিনা। ডায়াবেটিসের কারণে রেটিনার রক্তনালিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কখনও রেটিনায় ঘটে রক্তক্ষরণ। এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে রেটিনা বিচ্ছিন্ন পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় রেটিনা ও অক্ষিগোলকের জেলিসদৃশ পদার্থের ভেতর নতুন নতুন রক্তনালি তৈরি হতে থাকে। এসব গজিয়ে ওঠা নবীন রক্তনালি থাকে ভঙ্গুর। এখান থেকে হতে পারে রক্তক্ষরণ। এমনটি ঘটলে দৃষ্টিশক্তি চিরদিনের জন্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ডায়াবেটিক রোগীদের অন্যদের তুলনায় দ্বিগুণ ছানি পড়ার প্রবণতা তৈরি হয়। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের গ্লুকোমা বা চোখের চাপ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি।

ডায়াবেটিসের ধরন, সময়কাল, ব্যক্তির বয়স, গ্লুকোজের মাত্রা, উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তে কোলেস্টেরল বা চর্বির উপস্থিতি রেটিনার ব্যাধি সৃষ্টির জন্য নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। দীর্ঘদিনের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস সবচেয়ে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।

চোখের জটিলতা কমাতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। শরীরচর্চা, ওষুধ এবং প্রয়োজন বোধে ইনসুলিনের চিকিৎসা নিতে হবে। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জানতে হবে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কেমন।

প্রতিবছর অন্তত একবার চক্ষু চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়ে চোখের জটিলতা নির্ণয় করে চিকিৎসা নিতে হবে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নির্ণিত হওয়ার পর প্রতিবছর চক্ষু পরীক্ষা করা জরুরি। টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের পাঁচ বছর পর থেকে প্রতিবছর এমনটি করতে হবে। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

রেটিনার এসব রোগের জন্য বর্তমানে বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। একজন বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসক এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে পারবেন। কখনও এর জন্য প্রয়োজন হতে পারে লেজারথেরাপি কিংবা কখনও চোখের ভেতরে ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। এসব নির্ভর করে রেটিনার অবস্থার ওপর। 

লেখক : মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ, ঢাকা

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ