হাইভ্যালু কৃষিপণ্য উৎপাদনে সক্ষম করে তুলতে জয়পুরহাটে প্রায় এক হাজার ক্ষুদ্র কৃষককে কৃষি উপকরণ ও প্রশিক্ষণসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কৃষিভিত্তিক ফিনটেক প্ল্যাটফর্ম উইগ্রোর সহায়তায় এ কৃষকদের মধ্যে অনেকেই ঋণসুবিধা নিয়ে সফলভাবে মৌসুমভিত্তিক চাষাবাদ সম্পন্ন করেছেন; বাকিরা এখনো এ প্রকল্পের অধীনে চাষাবাদ ও গবাদিপশু পালনের সঙ্গে যুক্ত।

গত সোমবার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় উইগ্রোর সহায়তা পাওয়া ৫০ জনের বেশি কৃষক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে গত দুই বছরে প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। উল্লেখ্য, আক্কেলপুরের প্রায় ১৩০ কৃষক উইগ্রোর সহায়তা লাভ করেছেন।

অনুষ্ঠানে কৃষকদের উদ্দেশে উইগ্রোর চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) ফাইয়াজ সাফির বলেন, ‘এই উদ্‌যাপনের অংশ হতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমরা কৃষকদের জীবন ও জীবিকায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাশাপাশি দেশের কৃষি খাতের ইতিবাচক রূপান্তরে ভূমিকা রাখতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।’

কৃষিপণ্য উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে আরও লাভজনক ও টেকসই করে তুলতে ঋণসহায়তার পাশাপাশি কৃষকদের উন্নত মানের বীজ, সার ও কীটনাশক প্রদান করেছে উইগ্রো। পাশাপাশি, এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কৃষকদের চাষাবাদে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কেও ধারণা প্রদান করা হয়। দেশের ৪০টির বেশি উপজেলায় প্রায় ১২ হাজার কৃষকের সঙ্গে কাজ করছে উইগ্রো প্ল্যাটফর্ম।

এ পর্যন্ত কৃষকদের প্রায় ১ কোটি ২ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে উইগ্রো। এর মধ্যে সফল কার্যক্রমের ফলে কৃষকেরা ৭৮ লাখ ডলার পরিশোধ করে দিয়েছেন। উইগ্রোর কার্যক্রম নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট আরিফ রহমান জানান যে কৃষকদের জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম মূল চালিকা শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করাই উইগ্রোর লক্ষ্য। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আলম আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ভবিষ্যতেও কৃষকদের যাত্রায় পাশে থাকবে উইগ্রো।

২০২৩ সালে উইগ্রো ‘বাংলাদেশ ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডস’-এ বেষ্ট স্টার্টআপ ইনোভেশন ও কৃষি খাতে বেস্ট ইনোভেশন পুরস্কার লাভ করে এবং ২০২৪ সালে সিঙ্গাপুর ফিনটেক ফেস্টিভ্যালে উইনার হিসেবে পুরস্কার লাভ করে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ক ষকদ র সহ য ত

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাটজিপিটির স্বাস্থ্য পরামর্শ মানতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে

ওপেনএআইয়ের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি এখন দৈনন্দিন নানা কাজে ব্যবহার করছেন অনেকেই। কেউ আবার চ্যাটজিপিটির কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে থাকেন। তবে সম্প্রতি চ্যাটজিপিটির পরামর্শে দৈনন্দিন খাবার থেকে লবণ প্রায় পুরোপুরি বাদ দিয়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাসিন্দা ৬০ বছরের এক ব্যক্তি। এরপর বাধ্য হয়ে হাসপাতালে তিন সপ্তাহ চিকিৎসা নেন তিনি। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, রোগী কয়েক সপ্তাহ দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা থেকে সোডিয়ামের মাত্রা প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনেন। এতে তাঁর শরীরে ‘হাইপোনাট্রেমিয়া’ নামের বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হয়। এর ফলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়।

ওই ব্যক্তির পরিবারের দাবি, চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই তিনি সম্পূর্ণভাবে এআইভিত্তিক হেলথ প্ল্যানের ওপর নির্ভর করেছিলেন। তিন সপ্তাহ হাসপাতালে থাকার পর তিনি সুস্থ হন । ঘটনাটি সম্প্রতি আমেরিকান কলেজ অব ফিজিশিয়ানসের সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, সোডিয়ামের মতো অপরিহার্য খনিজ এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানসম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান ছাড়া এআইয়ের পরামর্শ অনুসরণ করা গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কীভাবে খাবার থেকে সম্পূর্ণভাবে সোডিয়াম ক্লোরাইড বা সাধারণত খাবার লবণ বাদ দেওয়া যায়, তা ওই ব্যক্তি চ্যাটজিপিটিকে জিজ্ঞাসা করেন। উত্তরে চ্যাটজিপিটি তাঁকে বিকল্প হিসেবে সোডিয়াম ব্রোমাইড ব্যবহারের পরামর্শ দেয়। চ্যাটজিপিটির পরামর্শ মেনে তিনি অনলাইনে সোডিয়াম ব্রোমাইড কিনে প্রায় তিন মাস রান্নায় ব্যবহার করেন। এর ফলে ধীরে ধীরে বিভ্রম, সন্দেহপ্রবণতা, অতিরিক্ত তৃষ্ণা, এমনকি পানি পান করতে অনীহার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এমনকি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় তিনি বিভ্রান্ত ছিলেন এবং পানিকে দূষিত মনে করতেন।

চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর শরীরে ‘ব্রোমাইড টক্সিসিটি’ বা ব্রোমিজম ধরা পড়েছে, যা এখন অত্যন্ত বিরল হলেও একসময় উদ্বেগ, অনিদ্রা ও নানা স্নায়বিক সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো। তাঁর শরীরে ব্রোমিজমের অন্যান্য উপসর্গও দেখা যায়। এর ফলে ত্বকে ব্রণের মতো ফুসকুড়ি এবং ‘চেরি অ্যাঞ্জিওমা’ নামে পরিচিত লাল দাগ দেখা যায়। চিকিৎসায় গুরুত্ব দেওয়া হয় শরীরে পর্যাপ্ত পানি ও ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার ওপর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ তথ্য জানার ক্ষেত্রে এআই কার্যকর হলেও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সিদ্ধান্তে চিকিৎসকের পরামর্শ অপরিহার্য। চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই তাদের শর্তাবলিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছে, ‘আমাদের সেবার আউটপুটকে একমাত্র সত্য বা নির্ভরযোগ্য তথ্য হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয় এবং এটি কখনোই পেশাদার পরামর্শের বিকল্প হতে পারে না। এই সেবা রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসার উদ্দেশ্যে তৈরি করা নয়।’

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ