বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত ভারত ও বাংলাদেশের কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য এবং মালামাল লুটপাটের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুর থেকে টানা প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এই অভিযান চালানো হয়।

দুদকের বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে এ সব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। অভিযানে ভারত ও বাংলাদেশের কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য, কর মওকুফে অসামঞ্জস্য এবং কয়লা কেনাবেচায় অনিয়মেরও তথ্য উঠে আসে।

দুদকের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো.

সাইদুর রহমান বলেন, “আমরা কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য, কর অব্যাহতির বৈষম্য, কয়লা ক্রয়ে দুর্নীতির প্রমাণসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। এসব বিষয়ে প্রাপ্ত নথিপত্র ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরো পড়ুন:

দুদকের চা খাওয়ার বিল এক লাখ টাকা: অভিযোগ অনুসন্ধা‌নে দুদক

রামেক হাসপাতাল
নিজের কাজ ফেলে ট্রলি ঠেলে বেড়ান কর্মচারীরা, ব্যবস্থা নেবে দুদক

তিনি আরো জানান, ভারতের কর্মকর্তাদের বিগত তিন বছরের কর মওকুফ করা হলেও একই প্রকল্পে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের কর মওকুফ করা হয়নি, যা স্পষ্ট বৈষম্য।

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গরদাশকাঠি মৌজায় প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় ১ হাজার ৮৩৪ একর জমির ওপর ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। যৌথভাবে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট এবং ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যায়। তবে উৎপাদন শুরুর পর থেকে নানা কারণ দেখিয়ে বারবার কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়, যা এর ব্যবস্থাপনা ও কার্যকারিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। 
 

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য ন

এছাড়াও পড়ুন:

রায় প্রত্যাখ্যান আওয়ামী লীগের

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “আজ যে রায় ঘোষণা করেছে এ রায় বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করে। বাংলার জনগণ এ রায় মানে না, মানবে না।”

আরো পড়ুন:

রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি

তিনি বলেন, “অবৈধ আদালত যে মামলার রায় দিয়েছে সেটি ১৪ অগাস্ট শুরু করে ১৭ নভেম্বর মামলা শেষ করেছে। ৮৪ জন সাক্ষীকে সামনে রেখে ৫৪ জনকে হাজির করে ২০ দিনে মামলা শেষ করেছে। এই দুই মাসের মধ্যে মাত্র ২০ দিন আদালত চলেছে।”

“এর প্রধান বিচারক গত এক মাস অনুপস্থিত ছিলেন। তারপরেও প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে মানুষের প্রিয় নেত্রীর বিরুদ্ধে যে রায় দিয়েছে।”

জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “অচিরেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব”।

এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ২ নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া মামলার অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়। দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় ঘোষণা হলো আজ।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ