শুল্কায়ন জটিলতায় বন্দরে আটকে আছে আধুনিক সেচযন্ত্র
Published: 28th, June 2025 GMT
বাংলাদেশের কৃষিতে আধুনিক সেচব্যবস্থা প্রয়োগে যন্ত্রপাতি আমদানি ও এ–সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারি বাধার অভিযোগ করেছে শেরপা পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শেরপা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.
মো. আবু তাহের অভিযোগ করেন, সরকারের কাস্টমস বিভাগের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝির কারণে শেরপা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আমদানি করা সেন্টার পিভট ইরিগেশন (সিপিআই) সিস্টেম নামে একটি যন্ত্র বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে আছে। কাস্টমস কর্মকর্তারা সিপিআই ব্যবস্থাটিকে একক ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি নন। তারা পুরো ব্যবস্থাটির বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে আলাদাভাবে, বিশেষ করে পানি বিতরণ যন্ত্রাংশ ও টাওয়ারে ব্যবহৃত ৫ টন পাইপকে আলাদা করে শুল্কায়ন করতে আগ্রহী। অথচ সিপিআই একটি পরিপূর্ণ ব্যবস্থা। এর একটি যন্ত্রাংশকে যদি বিযুক্ত করা হয়, তবে পুরো ব্যবস্থাটি অকার্যকর হয়ে যাবে। এখন পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থাটিকে একসঙ্গে বিবেচনায় না নিয়ে বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে আলাদাভাবে শুল্কায়ন করতে চান কাস্টমস কর্মকর্তারা। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিঘ্ন ঘটছে এবং আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে প্রতিষ্ঠানটি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কৃষিযন্ত্রটি চট্টগ্রাম কাস্টমসে আসার পর ১৭ জুন শুল্কায়নের জন্য জমা দেওয়া হয়। এতে শুল্কের পরিমাণ হওয়ার কথা ১২ লাখ ৫ হাজার ৪৬৯ টাকা। আবু তাহের বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এখন এটিকে বাণিজ্যিক উপকরণ আখ্যা দেওয়ায় শুল্ক ও জরিমানাসহ ৪২ লাখ টাকা দিতে হবে। কাস্টমসে আটকে থাকায় প্রতি মাসে চার লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ গুনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, দেশের উত্তরাঞ্চলকে দ্রুত মরুকরণের হাত থেকে রক্ষার জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) প্রথমবারের মতো দেশে সিপিআই ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জে ভূ-উপরিস্থ পানি কাজে লাগাতে সেচ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের দরপত্রে অংশ নিয়ে শেরপা ইঞ্জিনিয়ারিং কার্যাদেশ পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে অস্ট্রিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে সিপিআই আমদানি করা হয়। সেটি শুল্কায়ন জটিলতায় এখন চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে আছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শেরপা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপব্যবস্থাপক রুহুল আমিন, প্রকল্প কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস থ ট ক স টমস স প আই আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা নগরীর পথে ইসরায়েলি ট্যাংক, পালাচ্ছেন বাসিন্দারা
ফিলিস্তিনের গাজায় অভিযানের পরিসর আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এবার গাজা নগরী দখলে নিতে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এই নগরীর ১০ লাখ বাসিন্দার জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। ইতিমধ্যে গাজা নগরীর পূর্বাঞ্চল থেকে বাসিন্দারা বাড়িঘর ছাড়তে শুরু করেছেন। বিমান হামলার শব্দ শোনা যাচ্ছে, তাল আল-হাওয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে এগিয়ে আসছে ট্যাংক।
এদিকে ইসরায়েলের হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৩ জন নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার জানিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ত্রাণ নিতে যাওয়া ২১ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিও রয়েছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বুধবার বলেছে, তারা গাজা উপত্যকায় নতুন অভিযানের রূপরেখা অনুমোদন দিয়েছে। গাজার সবচেয়ে বড় নগরী দখলে নিতে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার আহ্বান জানানোর কয়েক দিন পর সামরিক বাহিনী নতুন এ অভিযান অনুমোদন করল।
সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর আভিযানিক পরিকল্পনার মূল রূপরেখা অনুমোদন দিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আইয়াল জামির।
কবে নাগাদ ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরীতে প্রবেশ করবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা জানায়নি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার। তবে গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের মহাপরিচালক ইসমাইল আল-ছাওয়াবতা বুধবার বলেন, গাজা নগরীতে আগ্রাসী অনুপ্রবেশ অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
২২ মাস ধরে গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে সেখানকার বেশির ভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার ২২ লাখ বাসিন্দার বেশির ভাগই দফায় দফায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন গাজা নগরীতে।
স্থল অভিযানের বিষয়ে গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, এসব হামলা পোড়া মাটি নীতি এবং বেসামরিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংসের মাধ্যমে নতুন পরিস্থিতি তৈরির মারাত্মক উসকানিরই অংশ।
গাজা নগরীর তাল আল-হাওয়া এলাকার বাসিন্দা সাবাহ ফাতোম (৫১) ওই এলাকায় ব্যাপক বিস্ফোরণ শুনতে পাওয়ার কথা টেলিফোনে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান। এই নারী বলেন, অনেক বিমান হামলার শব্দ শোনা যাচ্ছে। তাল আল-হাওয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে ট্যাংক এগিয়ে আসছে। আকাশে ড্রোন উড়ছে। বহু মানুষ বাড়িঘর ও তাঁবু ছেড়ে শহরের পশ্চিম দিকে ছুটছেন।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে বুধবার জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ত্রাণ নিতে যাওয়া ২১ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিও রয়েছেন। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় আহত হয়েছেন ৪৩৭ জন।
ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাবার না পেয়ে একই সময়ে অনাহারে মারা গেছেন আট ফিলিস্তিনি, তাঁদের মধ্যে তিনজন শিশু। এ নিয়ে অনাহারে ২৩৫ ফিলিস্তিনি মারা গেলেন, যাঁদের মধ্যে ১০৬টি শিশু। এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৬১ হাজার ৭২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি।
আরও পড়ুনইসরায়েলি সেনাপ্রধানই কি নেতানিয়াহুর লাগাম টেনে ধরবেন৭ ঘণ্টা আগে