বাংলাদেশের কৃষিতে আধুনিক সেচব্যবস্থা প্রয়োগে যন্ত্রপাতি আমদানি ও এ–সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারি বাধার অভিযোগ করেছে শেরপা পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে শেরপা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.

আবু তাহের বলেন, কৃষি যন্ত্রপাতি সম্পর্কে ধারণা নেই, এমন লোক দায়িত্বে থাকায় আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানি করতে গিয়ে কাস্টমসে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এ কারণে তিনি কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানির বিষয়টি সহজ করার দাবি জানান।

মো. আবু তাহের অভিযোগ করেন, সরকারের কাস্টমস বিভাগের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝির কারণে শেরপা  ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আমদানি করা সেন্টার পিভট ইরিগেশন (সিপিআই) সিস্টেম নামে একটি যন্ত্র বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে আছে। কাস্টমস কর্মকর্তারা সিপিআই ব্যবস্থাটিকে একক ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি নন। তারা পুরো ব্যবস্থাটির বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে আলাদাভাবে, বিশেষ করে পানি বিতরণ যন্ত্রাংশ ও টাওয়ারে ব্যবহৃত ৫ টন পাইপকে আলাদা করে শুল্কায়ন করতে আগ্রহী। অথচ সিপিআই একটি পরিপূর্ণ ব্যবস্থা। এর একটি যন্ত্রাংশকে যদি বিযুক্ত করা হয়, তবে পুরো ব্যবস্থাটি অকার্যকর হয়ে যাবে। এখন পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থাটিকে একসঙ্গে বিবেচনায় না নিয়ে বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে আলাদাভাবে শুল্কায়ন করতে চান কাস্টমস কর্মকর্তারা। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিঘ্ন ঘটছে এবং আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে প্রতিষ্ঠানটি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কৃষিযন্ত্রটি চট্টগ্রাম কাস্টমসে আসার পর ১৭ জুন শুল্কায়নের জন্য জমা দেওয়া হয়। এতে শুল্কের পরিমাণ হওয়ার কথা ১২ লাখ ৫ হাজার ৪৬৯ টাকা। আবু তাহের বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এখন এটিকে বাণিজ্যিক উপকরণ আখ্যা দেওয়ায় শুল্ক ও জরিমানাসহ ৪২ লাখ টাকা দিতে হবে। কাস্টমসে আটকে থাকায় প্রতি মাসে চার লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ গুনতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, দেশের উত্তরাঞ্চলকে দ্রুত মরুকরণের হাত থেকে রক্ষার জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) প্রথমবারের মতো দেশে সিপিআই ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জে ভূ-উপরিস্থ পানি কাজে লাগাতে সেচ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের দরপত্রে অংশ নিয়ে শেরপা ইঞ্জিনিয়ারিং কার্যাদেশ পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে অস্ট্রিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে সিপিআই আমদানি করা হয়। সেটি শুল্কায়ন জটিলতায় এখন চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে আছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শেরপা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপব্যবস্থাপক রুহুল আমিন, প্রকল্প কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ ট ক স টমস স প আই আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

হজরত আলী (রা.)-এর ১০টি কালজয়ী উক্তি

ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী ইবনে আবি তালিব (রা.)-এর খুতবা, পত্র ও উপদেশের একটি বিখ্যাত সংকলন হলো নাহজুল বালাগা বা বাগ্মিতার পথ। এটি একাদশ শতাব্দীতে সাইয়্যেদ শরিফ এটি সংকলন করেন।

গ্রন্থটিতে ২৪১টি খুতবা, ৭৯টি পত্র এবং ৪৮৯টি উপদেশ রয়েছে। গ্রন্থটির সংকলক শিয়া মতাদর্শী বলে পরিচিত হলেও শিয়া-সুন্নি উভয় ধারার আলেমরা এই গ্রন্থের সত্যতা স্বীকার করেন, যদিও কয়েকটি বর্ণনা সূত্র নিয়ে মতভেদ রয়েছে।

নাহজুল বালাগা ইসলামি সাহিত্যের একটি অমূল্য সম্পদ এবং আলী (রা.)-এর জীবনাদর্শ ও শিক্ষার অন্যতম উৎস হিসেবে বিবেচিত। সেখান থেকে তার ১০টি কালজয়ী উক্তি তুলে ধরা হলো।

গ্রন্থটিতে ২৪১টি খুতবা, ৭৯টি পত্র এবং ৪৮৯টি উপদেশ রয়েছে। গ্রন্থটির সংকলক শিয়া মতাদর্শী বলে পরিচিত হলেও শিয়া-সুন্নি উভয় ধারার আলেমরা এই গ্রন্থের সত্যতা স্বীকার করেন।হজরত আলী (রা.)-এর কালজয়ী উক্তি

১. জ্ঞানের মূল্য: ‘জ্ঞানই তোমার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ; এটি কখনো হ্রাস পায় না বরং বিতরণের মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৯৫)

২. দুনিয়ার সত্যতা: ‘দুনিয়া একটি ক্ষণস্থায়ী ছায়া। এর পেছনে ছুটো না। যা চিরস্থায়ী, তার জন্য প্রস্তুত হও।’ (নাহজুল বালাগা, খুতবা ১০৩)

৩. নীরবতার শক্তি: ‘নীরবতা তোমাকে সম্মান দেয়, আর অপ্রয়োজনীয় কথা তোমার মর্যাদা কেড়ে নেয়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ২২৪)

৪. ন্যায়বিচারের গুরুত্ব: ‘ন্যায়বিচার একটি সমাজের প্রাণশক্তি; এটি ছাড়া সমাজ ধ্বংসের মুখে পড়ে।’ (নাহজুল বালাগা, পত্র ৫৩)

আরও পড়ুনইমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার কয়েকটি কারণ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এমন সঙ্গী বেছে নাও যে তোমাকে ভালো পথে নিয়ে যায় এবং তোমার ভুল সংশোধন করে।হজর আলী (রা.), নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৬০

৫. অহংকারের ধ্বংস: ‘অহংকার মানুষের হৃদয়কে অন্ধ করে এবং তাকে পতনের দিকে নিয়ে যায়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ৮৬)

৬. সত্যের পথ: ‘সত্য বলো, এমনকি যদি তা তোমার বিরুদ্ধে যায়। সত্যই তোমার মুক্তির পথ।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৪৬)

৭. সঙ্গী নির্বাচন: ‘এমন সঙ্গী বেছে নাও যে তোমাকে ভালো পথে নিয়ে যায় এবং তোমার ভুল সংশোধন করে।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৬০)

৮. ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ: ‘ক্রোধ তোমার শত্রু। যে এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সে নিজেকে জয় করতে পারে।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৫৩)

৯. দানের ফজিলত: ‘দান করো, কারণ এটি তোমার সম্পদ কমায় না, বরং তোমার মর্যাদা বাড়ায়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ২৩৬)

১০. আল্লাহর ওপর ভরসা: ‘আল্লাহর ওপর নির্ভর করো, তিনি তোমার সব সমস্যার  সমাধানকারী। যে তাঁর ওপর ভরসা করে, সে কখনো হতাশ হয় না।’ (নাহজুল বালাগা, খুতবা ১১৪)

 সূত্র: দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন ডটকম

আরও পড়ুননামাজ: দাসের মহিমা০৪ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ