কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ খবর প্রকাশ্যে আসার পর সারাদেশে তোলপাড় চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা। শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও ব্যতিক্রম নন।

রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে জনপ্রিয় অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান তার ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এতে ধর্ষণের মতো অপকর্ম নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন ‘সিন্ডিকেট’ তারকা।   

নাসির উদ্দিন খান বলেন, “যেকোনোভাবেই হোক নিজেকে চাপমুক্ত রাখার চেষ্টা করা উচিত’—আমার মেনে চলা নিয়মনীতির মধ্যে এটি অন্যতম। পরিবার-পরিজন কিংবা আশেপাশের শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে আমার আলাপ আলোচনার কমন বিষয়ও এটি। কিন্তু দেশ-বিদেশের বর্তমান এই অস্থির সময়ে চাইলেই কি নিজেকে চাপমুক্ত রাখা যায়! নিজেকে যতই নানান ফান-ফুর্তিতে নিয়োজিত রেখে এইসব অস্থির বিষয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি না কেন, তবু চোখের সামনে এসে হাজির হয় যুদ্ধ, ধর্মীয় বিদ্বেষ, নারী বিদ্বেষ, খুন, সংখ্যালঘু নির্যাতন, অসহায়ের উপর অত্যাচার, বিচারহীনতা, ইত্যাদি-ইত্যাদি-ইত্যাদি।”

আরো পড়ুন:

মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ

সাতক্ষীরায় শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১

কিছু মানুষ অপকর্মকে নানাভাবে আড়াল করার চেষ্টা করেন। তাদের উদ্দেশ্যে নাসির উদ্দিন খান বলেন, “সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে যখন দেখি লোকে এইসব অপকর্মকে ঢাকার জন্য নিজেকে কিংবা নিজের পছন্দের জাতি-গোষ্ঠীকে নানান অজুহাতে বা যুক্তিতর্কের মাধ্যমে রক্ষা করার চেষ্টা করে, অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাতে চায়। মনে রাখবেন, এই সব ঘটনা যেকোনো সময় যেকোনো মুহূর্তে আপনার আমার পরিবারের সাথেও ঘটতে পারে।”

নানা অজুহাতে ধর্ষণকে যারা ন্যায্যতা দিতে চান, তারাও ধর্ষক বলে মনে করেন নাসির উদ্দিন খান। তার ভাষায়, “ধর্ষক আপনার বাপ হলেও পারলে প্রতিবাদ করেন, নয়তো চুপ থাকেন। এটাওটা বলে এইসব অপকর্মকে ন্যায্যতা দিতে আইসেন না। ধর্ষকের পক্ষে কথা বলা কিংবা নানান অজুহাতে ধর্ষণকে ন্যায্যতা দেয়ার চেষ্টা করা প্রত্যেকটা মানুষও একেকজন ধর্ষক।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপকর ম

এছাড়াও পড়ুন:

আমাদের হুমায়ূন আহমেদ

হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ার আগেই তাঁর নাম জানা হয়ে গিয়েছিল টিভিতে ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকের কারণে। নাটকের রাতে পাশের বাসার চাচিরাও চলে আসতেন। কত রকম আলাপ এর চরিত্রগুলোকে ঘিরে। এখনকার মতন তো না যে হাজার হাজার স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের কোটি কোটি কনটেন্ট। কিছু দেখতে বসলে ব্রাউজ করতে করতেই হয়রান হতে হয়।

একটা একান্নবর্তী মধ্যবিত্ত পরিবারকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে নাটকটা। মধ্যবিত্তদের নিয়ে আগেও নাটক হয়েছে অনেক, তবুও এই নাটকটা অন্য রকম লাগত। আমি ক্লাস ফোরে পড়ি তখন। অত কিছু বুঝতাম না, তারপরও ছাদের ঘরের ম্যাজিশিয়ান আনিস ভাই যখন শাহানাকে ম্যাজিক দেখাতে দেখাতে রুমালের ভেতর থেকে বের করে আনতেন আস্ত একটা গোলাপ ফুল, তাজ্জব হয়ে যেতাম! আবুল খায়ের বহুদিন পর্যন্ত আমাদের কাছে ছিলেন ‘সুখি নীলগঞ্জ’। বোহেমিয়ান আর একটু পাগলা মতন ছোট ভাই রফিকের প্রেমেই পড়ে গিয়েছিলাম প্রায়। কিছু কিছু দৃশ্য এখনো স্পষ্ট—সারা দিনের সব কাজ শেষে খাবার টেবিলে একা বসে ছোট ছোট চুমুকে চা খাচ্ছেন ডলি জহুর; হোমিওপ্যাথি বিষয়ে প্রবল স্পর্শকাতর বাবা ঝগড়া করছেন আবুল খায়েরের সঙ্গে, এসব দৃশ্যে বড়রা হেসে অস্থির। আবার এত বড় একটা পরিবার সামলাতে গিয়ে হিমশিম বড় ভাই বুলবুল আহমেদ যখন অসহায়ভাবে একটা টেবিলের কোণ আঁকড়ে ডুকরে উঠতেন, ‘বড় কষ্ট’! দেখতাম, বড়দের অনেকের চোখ ছলছল করছে। এভাবে নাটকের চরিত্রগুলো আমাদের নিজেদের লোক হয়ে উঠত। যেদিন টুনি মারা গেল, আমাদের স্কুলে বাংলা ক্লাসে সবাই টুনির মৃত্যু নিয়ে কথা বলছিলাম, মনে আছে।

জীবনানন্দ দাশের মতন আমিও বিশ্বাস করি ‘কেউ কেউ কবি’। তাঁরা দুনিয়ায় আসেন তাঁদের কবিসত্তা নিয়ে। হুমায়ূন আহমেদ আমার কাছে সে রকম একজন। তিনি দোষ-গুণ মিলিয়ে স্বাভাবিক একজন মানুষ ছিলেন, যিনি প্রবল কৌতূহল এবং অপার ভালোবাসা নিয়ে তাঁর চারপাশ অনুধাবনের চেষ্টা করেছেন।

হুমায়ূন আহমেদের যে উপন্যাস আমি প্রথম পড়েছি, তার নাম শঙ্খনীল কারাগার। তত দিনে ক্লাস ফাইভে পড়ি। বহুক্ষণ ধরে বইটার নাম নিয়ে ভাবলাম। ভেতরে কৃতজ্ঞতা স্বীকারের একটা বাক্য ছিল, কোনো একজন কবির লেখা থেকে নামটা তিনি নিয়েছেন। ‘শঙ্খনীল কারাগার’ বলতে যে পৃথিবীকে বোঝানো হয়েছে, অনেক ভাবনাচিন্তার পর এই আবিষ্কার করতে পেরে আর্কিমিডিসের চেয়েও বেশি খুশি হয়েছিলাম!

প্রথম বাক্যটাই নিয়ে গেল আরেক দুনিয়ায়—

‘বাস থেকে নেমেই হকচকিয়ে গেলাম। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে সব। রাস্তায় পানির ধারাস্রোত। লোকজন চলাচল করছে না, লাইটপোস্টের বাতি নিভে আছে।’

এইসব দিনরাত্রি নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: বিটিভির সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমাদের হুমায়ূন আহমেদ
  • মুরাদনগরে তিন শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার