খুলনা নগরীর শিববাড়ি মোড়ের জিয়া হল প্রাঙ্গণে মেলার আয়োজন বন্ধের জন্য খুলনা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ইমাম পরিষদ। আজ সোমবার সকালে ইমাম পরিষদের নেতারা এই স্মারকলিপি দেন।

এর আগে রোববার আয়োজনের অনুমতির দাবিতে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চার ঘণ্টা অবস্থান করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ ও এনসিপি নেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার জিয়া হলের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে জুলাই উদযাপনের জন্য মাসব্যাপী নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি চেয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়। আবেদনে সেখানে একটি জুলাই মঞ্চ, জুলাই কর্নার, জুলাই প্রদর্শনী, বইয়ের দোকান, কিছু দেশীয় কুটির শিল্প, সংস্কৃতি ও দেশীয় খাবারের দোকান থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, প্রদর্শনী ও দোকান স্থাপনের কথা বলা হলেও সেখানে মেলার আয়োজন চলছে। মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের মালিক রাসেল মিয়া এ নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। অতীতে জিয়া হল প্রাঙ্গণে মেলার আয়োজন থেকে ১৫-২০ লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ করতেন মূল আয়োজকরা। মেলার আয়োজন সম্পর্কে জানতে পেরে সোমবার ইমাম পরিষদের নেতারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। 

স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, খুলনা শহরের অত্যন্ত ব্যস্ত স্থান বাবরি চত্বরে (শিববাড়ি মোড়) ও পরিত্যক্ত জিয়া হল এলাকায় মাসব্যাপী মেলার আয়োজনের চেষ্টা চলছে। অতীতে আমরা দেখেছি যেখানেই মেলার আয়োজন করা হয়েছে সেখানেই নগ্নতা ও অনৈতিকতা থাকে। লটারি, জুয়াসহ অনেক অসামাজিক ও অনৈসলামিক কাজ চলে থাকে। ফলে সমাজে ও রাষ্ট্রে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের কোনো মেলার অনুমতি না দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয় স্মারকলিপিতে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইমাম পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ এএফএম নাজমুস সউদ, মাওলানা নাসির উদ্দিন কাসেমী, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা মুশফিকুর রহমান, মাওলানা আনোয়ারুল আজম, মোল্লা মিরাজুল হক, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা হেকমত উল্লাহ মাদানী, ডক্টর মুফতি আব্দুর রহিম, মুফতি জিহাদুল ইসলাম প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ম রকল প স ম রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

নরসিংদীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক

নরসিংদীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ ‍উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে, দেখা দিচ্ছে শয্যা সংকট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তার মশা নিধনে ড্রেনগুলো দ্রুত পরিষ্কারের জন্য পৌরসভার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসেই প্রায় ১০০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। অক্টোবর মাসের প্রথম তিনদিনে ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রতিদিনই জ্বর, শরীর ব্যথা ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে আসছেন রোগীরা। যাদের অবস্থা গুরুতর, তাদেরকেই ভর্তি করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার

বাঁশবাগানে পাওয়া সেই নবজাতক মারা গেছে

রোগীর স্বজন নাসরিন আক্তার বলেন, “আমার ভাই পাঁচদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। প্রথমে বুঝতেই পারিনি তার ডেঙ্গু হয়েছে। এখন প্লাটিলেট কমে গেছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, অবস্থা গুরুতর। খুব দুশ্চিন্তায় আছি। হাসপাতালের চিকিৎসকরা যথাসাধ্য করছেন, শয্যার সংকট আর ওষুধের জোগান সবসময় মেলে না।”

আরেক রোগীর বাবা মো. সাহেব আলী বলেন, “আমার ছোট ছেলের বয়স ১০ বছর। জ্বর নিয়ে ভর্তি করাতে হয়েছিল তাকে। ওর ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। হাসপাতালে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। আমরা গরিব মানুষ, ছেলেকে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সমর্থ্য নেই।”

হাসপাতালের সামনে অপেক্ষমাণ এক রোগীর চাচা মাহবুব হোসেন বলেন, “হাসপাতালে জায়গা হচ্ছে না। ডেঙ্গু যে এত ভয়াবহ হবে বুঝতে পারিনি। প্রশাসন যদি আগে ব্যবস্থা নিত, তাহলে এমন অবস্থা হতো না।”

স্থানীয় কলেজছাত্র জুবায়ের হোসেন বলেন, “জুলাইয়ের শেষ দিক থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে, অথচ পৌরসভা থেকে মশা নিধনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হয়নি অনেকদিন। আমরা খুব চিন্তায় আছি। শুধু ওষুধ আর হাসপাতাল দিয়ে এই রোগ ঠেকানো যাবে না। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, “বিভিন্ন কারণে এডিস মশার প্রজনন বাড়ছে। প্রতিদিন প্রচুর রোগী আসছেন জ্বর নিয়ে। অনেকেরই অবস্থা গুরুতর। সীমিত সামর্থ্যে আমরা চেষ্টা করছি সাধ্যমতো সেবা দিতে। রোগীর চাপ ক্রমেই বাড়ছে।”

ঢাকা/হৃদয়/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ