পাথর কোয়ারির বিদ্যুৎ নিয়ে মুখোমুখি ব্যবসায়ী-প্রশাসন
Published: 30th, June 2025 GMT
গত কয়েক বছর ধরে সিলেটের সবগুলো পাথর কোয়ারির ইজারা বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে পাথর ভাঙার কলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। এ অবস্থায় পাথর কোয়ারির ইজারা বাতিল এবং অপরদিকে খুলে দেওয়ার দাবিতে সোচ্চার পাথর ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। ফলে এ নিয়ে মুখোমুখি ব্যবসায়ী ও প্রশাসন।
সোমবার সিলেট জেলা পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ কর্মবিরতি গণঅনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। সদর উপজেলার ধোপাগোল শহীদ মিনারে এই কর্মসূচি হয়। এ সময় বক্তারা, সিলেটের সব পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও ট্রাক শ্রমিকদের হয়রানি ও সব ক্রাশার মালিকদের ব্যবসার সুযোগ এবং বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার দাবি জানান।
সিলেট সদর পাথর ক্রাশার মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি মন্তাজ আলীর সভাপতিত্বে ও বিএনপি নেতা আব্দুল হকের পরিচালনায় কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজির আহমদ স্বপন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ মালিক গ্রুপের সহসভাপতি, মুজিবুর রহমান মুজিব, সহসভাপতি নারায়ন পুরকায়স্থ ফনি, সিলেট সদর পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মুহিবুর রহমান সুলেমান, সিলেট সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য মামুন আল রশিদ হেলাল, সিলেট সদর পাথর ক্রাশার ও বালু ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সহসভাপতি শানুর মিয়া প্রমুখ।
এদিকে প্রশাসন প্রতিদিনই অভিযান চালাচ্ছে ক্রাশার মিল বন্ধে। নিয়ম ভেঙে সিলেটের পাঁচ উপজেলায় দেড় হাজারেরও বেশি পাথর ভাঙার কল গড়েছেন মালিকরা। এসব কলের অধিকাংশই নীতিমালা অগ্রাহ্য করে স্থাপন করা হয়েছে। এসব কলের কোনোটি বাজারে, কোনোটি জনবসতিপূর্ণ এলাকায়। বিগত কয়েক বছর ধরে এসব বন্ধে এলাকার লোকজন বিভিন্নভাবে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
গত ১৪ জুন জাফলং এলাকা পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে অবরোধ করা হয়। এ সময় তারা জাফলং পাথর কোয়ারি চালুর দাবি তোলেন। প্রাথমিকভাবে তাদের সাধারণ শ্রমিক দাবি করা হলেও পরে জানা যায়, তারা স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রম আইন সংস্কারে তাগিদ ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের
বাংলাদেশের শ্রম আইন সংস্কারে তাগিদ দিল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে বৈঠকে দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল বলেছে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) সবার চাওয়া আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতি রেখে বাংলাদেশের শ্রম আইন সংস্কার করা হবে।
রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে আজ বুধবার সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে বৈঠক করে শ্রম আইন সংস্কারে এই তাগিদ দেয় মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদল। শ্রম অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে দেশের আইনি সংস্কারের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন বিজিএমইএর সভাপতি। মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদলে ছিলেন লেবার অ্যাটাশে লীনা খান, ফরেন কমার্শিয়াল সার্ভিস অ্যাটাশে পল জি ফ্রস্ট ও ফরেন অ্যাগ্রিকালচারাল সার্ভিস অ্যাটাশে এরিন কোভার্ট।
বৈঠকে বিজিএমইএর সভাপতি ছাড়াও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, মিজানুর রহমান, ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, শেখ হোসেন মোহাম্মদ মোস্তাফিজ উপস্থিত ছিলেন। বিজিএমইএর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
মাহমুদ হাসান খান বলেন, তৈরি পোশাক খাতের শ্রম পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা বিজিএমইএর অন্যতম অগ্রাধিকার। তাঁর নেতৃত্বে পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সুষ্ঠু শিল্প সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ৮১টি শ্রমিক ফেডারেশনের সঙ্গে সংলাপ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন পাল্টা শুল্কের নির্বাহী আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা তৈরি পোশাকে যদি কমপক্ষে ২০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, তবে সেই পণ্যের ওপর নতুন আরোপ শুল্ক থেকে আনুপাতিকভাবে অব্যাহতি পাওয়া যাবে। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিজিএমইএ নেতারা মার্কিন প্রতিনিধিদলের কাছে জানতে চান, রপ্তানি পণ্যে কী ফর্মুলায় বা প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহারের মূল্যায়ন এবং স্বচ্ছতা ও ট্রেসেবিলিটি নির্ণয় করা হবে। এ ব্যাপারে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন তাঁরা।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি বাড়াতে চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে একটি গুদাম স্থাপনের সম্ভাব্যতা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। তাঁরা বলেন এটি বাংলাদেশি উদ্যোগ বা মার্কিন উদ্যোগ বা যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এই গুদাম তৈরি পোশাক রপ্তানিতে লিড টাইম কমাতে ভূমিকা রাখবে।
বিজিএমইএ নেতারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির পাশাপাশি পলিয়েস্টার, নাইলনের মতো ম্যান মেইড ফাইবার আমদানি করতে আগ্রহী। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানতে তাঁরা মার্কিন দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন। বিষয়টি নিয়ে ফরেন কমার্শিয়াল সার্ভিস অ্যাটাশে পল জি ফ্রস্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা বিস্তারিত জানাবেন।
মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়াতে আগামী মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় উদ্যোগের সিলেক্ট ইউএসএর সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য বিজিএমইএ নেতাদের পরামর্শ দেন। তাঁরা বলেন, এটি বাংলাদেশি তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কিং তৈরিতে সহায়তা করবে।