পাঠকের জন্য ভালো কিছু করতে পারলে, ভালো মানের সাংবাদিকতা উপহার দিলে ছাপা পত্রিকাও সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। অনেকে বলেন, ছাপা পত্রিকার দিন শেষ। আমি মনে করি, মানসম্পন্ন কনটেন্টই যে কোনো মাধ্যমের টিকে থাকার মূল চাবিকাঠি।

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান মঙ্গলবার তাঁকে দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে টাইমস মিডিয়া ভবনে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়। 

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সাহসী সাংবাদিকতা, তরুণ পাঠকদের যুক্ত করা এবং পরে নানামুখী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উদ্যোগের জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় সেরা পত্রিকা হিসেবে ‘ইনমা গ্লোবাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ পায় প্রথম আলো। এটি গণমাধ্যমের জন্য সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। তা উদযাপন করতে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) এ সংবর্ধনার আয়োজন করে। নোয়াব সদস্যরা প্রথম আলো সম্পাদককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নোয়াবের সভাপতি এ.

কে. আজাদ, সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খান বাদল, যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশনের পরিচালক শামীম ইসলাম, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, কাউন্টার পার্ট সম্পাদক জাফর সোবহান এবং ডেইলি ফিন্যান্সিয়াল হেরাল্ড-এর প্রকাশক মাসরুর রিয়াজ।

অনুষ্ঠানে মতিউর রহমানের সাংবাদিকতা পেশা নিয়ে আলোকপাত করেন এ. কে. আজাদ। তিনি বলেন, মতিউর রহমান গণতন্ত্রকে সুসংহত করা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আপসহীন সম্পাদকীয় নীতি অনুসরণ করছেন।
এ. কে. আজাদ বলেন, এসিড সহিংসতার বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরিতে নিরলস লড়াইয়ের জন্য তিনি র্যা মন ম্যাগসেসে পুরস্কার পান। সামাজিক ও নাগরিক আন্দোলনেও ভূমিকা রেখেছেন মতিউর রহমান। তিনি সাহস, সততা ও পেশাদারিত্বের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা দেশের সংবাদপত্র শিল্পের জন্য গর্বের। 

সংবর্ধিত অতিথি মতিউর রহমান বলেন, সাংবাদিকতা জীবনের ৫০ বছর পার করে ফেলেছি। যা কিছু করেছি ভালো ভেবে, ভালোর জন্য করেছি। ভুলও আছে অনেক। নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। সে সময়ে এমন একটা পুরস্কার পাওয়া সংবাদপত্রের শক্তিকেই তুলে ধরে। 

মতিউর রহমান বলেন, গত জুলাই-আগস্টে অনলাইনে প্রথম আলোর পাঠক হয়েছিল ৩১ কোটি। পত্রিকার প্রচার সংখ্যাও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায়। এটি প্রমাণ করে, প্রিন্ট পত্রিকার চ্যালেঞ্জের যুগেও ঠিক সময়ে ঠিক কাজটি করতে পারলে পত্রিকার সার্কুলেশন বাড়ানো যায়। 

নোয়াবের সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খান বাদল বলেন, মতিউর রহমান রাজনীতি করেছেন, সমাজ বদলের চেষ্টা করেছেন, লিখেছেন। তিনি আসলে আমাদের মাথার ওপর বটগাছের মতো। নিজের পথচলাতেই আমাদের জন্য দিশা তৈরি করেছেন তিনি। 

যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশনের পরিচালক শামীম ইসলাম বলেন, মতিউর রহমান যা করে দেখিয়েছেন, তা এককথায় অসাধারণ ও  অনুকরণীয়। সাহস, দূরদৃষ্টি ও দায়িত্ববোধ নিয়ে তিনি শুধু প্রথম আলো নয়, পুরো সাংবাদিকতাকেই এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শামসুল হক জাহিদ, দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, জাফর সোহবান ও শাহেদ মুহাম্মদ আলী।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব দ কত প রথম আল অন ষ ঠ ন কর ছ ন স বর ধ র জন য ব দ কত

এছাড়াও পড়ুন:

নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার

বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।

সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’

নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
  • ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে অভিজ্ঞ সংস্থা ‘হোপ’ নির্বাচন পর্যবেক্ষকের তালিকায়
  • এসিসির সভায় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়, নাকভি কথা না শুনলে আইসিসিতে অভিযোগ করবে ভারত