ফ্যাসিস্টদের দোসররা নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

ঢাকার দোহার উপজেলার নয়াবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি হারুন মাস্টারকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এ বিবৃতি দিয়েছেন মির্জা ফখরুল।   

তিনি বলেন, হারুন মাস্টারকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় প্রমাণ হয় যে, পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা এখনো দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আর এ কারণেই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করা হচ্ছে। এসব সন্ত্রাসীদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। সন্ত্রাসীদের দমনে সরকারকে কঠোর পন্থা অবলম্বন করতে হবে। নইলে সন্ত্রাসীদের দাপটে দেশ আবারও অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও রক্তাক্ত পথ অনুসরণ করে ষড়যন্ত্রকারীরা যাতে ফায়দা লুটতে না পারে সেজন্য দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। তাহলেই দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

বিবৃতিতে হারুন মাস্টারের খুনিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পাশাপাশি নিহতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকাহত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি।

পৃথক আরেক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ভোলায় নারীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দুষ্কৃতকারীদের দ্বারা সংঘটিত এ ধরনের বর্বরোচিত ও পশুর চেয়েও হিংস্রতায় গোটা দেশের মানুষ হতভম্ব। নারীর ওপর ধারাবাহিক এ ধরনের পাশবিক নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় দেশের নারী সমাজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই দুষ্কৃতিকারীদের কঠোর হস্তে দমনের কোনো বিকল্প নেই।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আওয়ামী দুঃশাসন থেকে জনগণ নিস্তার পেলেও দেশ এখনও পুরোপুরি নিরাপদ নয় বলেই নারীর ওপর এ ধরনের বর্বর ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। ভোলায় নারীকে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের আমি অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ র ঘটন য় ফখর ল র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

Untitled Jun 30, 2025 05:16 pm

বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা ফেরাতে চীনের মনোভাব ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। দলটির সাম্প্রতিক চীন সফর বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি নির্বাচনে চীনের সমর্থনের বিষয়টি উঠে আসে। বর্তমানে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা ফেরাতে চীনের মনোভাব কেমন দেখা গেছে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অত্যন্ত পজিটিভ (ইতিবাচক) দেখেছি।’

পাঁচ দিনব্যাপী এই সফরে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটিক্যাল ব্যুরোর সদস্য এবং ন্যাশনাল পিপল’স কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লি হংসং-এর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভায় বিএনপির পক্ষ থেকে ‘এক চীন নীতি’র প্রতি দলীয় অবস্থান দৃঢ়ভাবে উচ্চারিত হয়েছে। পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং এর নেতৃত্বে চীনের বিস্ময়কর উন্নতি, আন্তর্জাতিক প্রবৃদ্ধি এবং তাঁর ‘বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ'-এর ইতিবাচকতার কথা মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে বিএনপির পক্ষ থেকে ব্যক্ত করা হয়েছে।

এই বৈঠকে লি-হংসং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে জানান মির্জা ফখরুল। দ্রুতই একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে চীনের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের অবদানের কথা উল্লেখ করে ভবিষ্যতে ডিজিটাল প্রযুক্তি, সেমিকন্ডাক্টর, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, মেডিকেল ও স্বাস্থ্যসেবা, উচ্চশিক্ষা, যোগাযোগ, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, এসএমই বিজনেস, ব্লু ইকোনমি উন্নততর প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দেশটিকে অধিকতর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চীন ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে।

ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত ১৭ বছরের অনাকাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে সহনীয় করতে আমরা ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি, বিভিন্ন ফি পুনর্বিবেচনা এবং অনুদানের সম্ভাব্যতার বিষয়েও তাঁদের সহায়তা চেয়েছি। যেটা তারা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।'

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিরাপদ, স্বেচ্ছা এবং সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে চীনের অধিকতর এবং কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার সুং-ওয়ে-ডং এর সঙ্গে সফরের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের অবকাঠামো, পরিবেশ ও প্রযুক্তি উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে শ্রমশক্তির সক্ষমতা, উন্নত বিনিয়োগ পরিবেশ ও বিনিয়োগের নিরাপত্তার বিষয়টিও উপস্থাপন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ চীন ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল নির্মাণ, দেশের উত্তরাঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও রপ্তানি সুযোগ বৃদ্ধির বাস্তব পদক্ষেপ, কুনমিংয়ে চারটি বিশেষায়িত হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা সহজতর করা এবং চীন-বাংলাদেশের মাঝে স্থলপথে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগও আলোচ্য সূচিতে ছিল বলে জানান মির্জা ফখরুল।

চীন কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে দুই বছর মেয়াদি রাজনৈতিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব বিএনপি ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছে বলেও জানান দলের মহাসচিব।

সম্প্রতি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে চীন সফরে গিয়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, জহির উদ্দিন স্বপন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল এবং চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার। আজ তাঁরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কার নিয়ে শুধু বিএনপিকে দোষারোপ করা ঐক্যের সহায়ক হবে না: মির্জা ফখরুল
  • চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির আলোচনা সভা চলছে
  • অর্থনীতির গতি ফেরাতে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই: মির্জা ফখরুল
  • বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা ফেরাতে চীনের মনোভাব অত্যন্ত ইতিবাচক: মির্জা ফখরুল
  • রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান বিএনপির
  • বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা ফেরাতে চীনের মনোভাব ‘অত্যন্ত পজিটিভ’: মির্জা ফখরুল
  • Untitled Jun 30, 2025 05:16 pm