বৃষ্টিকে ‘আল্লাহর রহমত’ বললেন প্রধান উপদেষ্টা
Published: 5th, August 2025 GMT
বৃষ্টিকে ‘আল্লাহর রহমত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ শুরু করেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় মঞ্চের দুই পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
আরো পড়ুন:
জুলাই শহীদদের জাতীয় বীর ঘোষণা
জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত ছিলেন
উপস্থিত নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতে ইসলামীর মিয়া গোলাম পরওয়ার, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকিসহ রাজনৈতিক জোটের শীর্ষ নেতারা।
বৃষ্টির মধ্যেই বক্তব্য শুরু করে ইউনূস বলেন, “আল্লাহর রহমত হচ্ছে। সেই রহমত সঙ্গে নিয়েই আমি এই ঐতিহাসিক ঘোষণা পাঠ করছি।”
তার এ বক্তব্যের সময় অনেকে করতালির মাধ্যমে সমর্থন জানান।
ঢাকা/এএএম/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদলিক: দোয়ার ব্যাখ্যা ও তাৎপর্য
মানুষ দুনিয়ায় যেমন আধ্যাত্মিক চাহিদা নিয়ে বেঁচে থাকে, তেমনি দেহ ও জীবিকার চাহিদাও রয়েছে। ইসলামে আল্লাহর কাছে দোয়া করার মাধ্যমে উভয় চাহিদা পূরণের দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়। এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া হলো,
“আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদলিক।”
অর্থ: “হে আল্লাহ, আমি আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি।”
কেন এই দোয়ামসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় এই দোয়া পড়ার বিষয়ে হাদিসে নির্দেশনা এসেছে। সহিহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন:
“যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে, সে বলুক: আল্লাহুম্মা ইফ্তাহলি আবওয়াবা রহমাতিকা (হে আল্লাহ, আমার জন্য আপনার রহমতের দ্বার খুলে দিন)। আর যখন বের হবে, তখন বলুক: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদলিক (হে আল্লাহ, আমি আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি)।” (সহিহ মুসলিম, কিতাবুস সালাত, হাদিস: ৭১৩)
একই বর্ণনা এসেছে আবু দাউদের হাদিসেও। (সুনানে আবু দাউদ, কিতাবুস সালাত, হাদিস: ৪৬৫)
আরও পড়ুনএকটি মসজিদ নিয়ে নবীজি (সা.)–এর ব্যতিক্রমী নির্দেশ২৩ জুলাই ২০২৫হাদিসের ব্যাখ্যাইমাম নববী (রহ.) বলেন,
মসজিদে প্রবেশের সময় আল্লাহর রহমত চাইতে বলা হয়েছে, কারণ মসজিদ হলো ইবাদত ও মাগফিরাতের স্থান।
বের হওয়ার সময় আল্লাহর ‘ফাদল’ চাইতে বলা হয়েছে, কারণ বান্দা তখন দুনিয়ার কর্মকাণ্ডে ফিরে যায়, যেখানে তার রিজিক, সুরক্ষা ও বরকত প্রয়োজন। (শারহে সহিহ মুসলিম, ৫/২২৩, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যা, বৈরুত, ১৯৯৬)
ইমাম খাত্তাবী (রহ.) বলেন, “ফাদল” শব্দটি শুধু বস্তুগত রিজিক বোঝায় না; বরং ইমান, ইলম, সুস্বাস্থ্য, সৎসঙ্গ—সব ধরনের কল্যাণকেই অন্তর্ভুক্ত করে। (মা‘আলিমুস সুনান, ১/১৪৫, আল-মাকতাবাতুল ইসলামি, দামেস্ক, ১৯৩২)
আরও পড়ুনকথা যেভাবে দোয়া হয়ে যায়১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫দোয়ার শিক্ষা১. ইবাদত ও দুনিয়ার ভারসাম্য: মসজিদে প্রবেশে রহমত, বের হওয়ার পর ‘ফাদল’—এভাবে দ্বীন ও দুনিয়া উভয়ের ভারসাম্য শেখানো হয়েছে।
২. রিজিক ও কল্যাণ আল্লাহর কাছেই: বান্দা যত পরিশ্রমই করুক, প্রকৃত বরকত ও কল্যাণ আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে।
৩. সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর দোয়া: এই দোয়া ছোট হলেও এর ভেতর জড়িয়ে আছে জীবনের সব প্রয়োজনীয় কল্যাণের প্রার্থনা।
৪. প্রতিদিনের অভ্যাস: মসজিদে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার প্রতিবারে এ দোয়া পড়া অভ্যাস করলে, মানুষের জীবনে আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহ প্রবাহিত হতে থাকে।
বাস্তব জীবনে তাৎপর্যনামাজ শেষে দুনিয়ার কাজে ফেরার সময় এ দোয়া আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, দুনিয়ার সাফল্যও আল্লাহর অনুগ্রহ ছাড়া সম্ভব নয়।
বান্দা যখন মসজিদে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত কামনা করে, এবং বের হওয়ার সময় দুনিয়ার কাজে প্রবেশের আগে আল্লাহর অনুগ্রহ কামনা করে—তখন তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কিত হয়ে যায়।
অতএব, আমাদের সবার উচিত এই দোয়াকে প্রতিদিনের আমলের অংশ বানানো, যেন আমাদের ইবাদত, কর্ম, জীবিকা ও দুনিয়া-আখিরাত সবই আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহে ভরে ওঠে।
আরও পড়ুনরোগ ও যন্ত্রণা থেকে মুক্তির দোয়া০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫