ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড—বিশ্ব ক্রিকেটের ‘তিন মোড়ল’ হিসেবে পরিচিত এই তিন দেশ নিজেদের মধ্যে আরও বেশি টেস্ট খেলতে এই সংস্করণকে দুই স্তরে ভাগ করতে চায়, এই খবর পুরোনো। টেস্ট ক্রিকেটে দুই স্তর চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি এরই মধ্যে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করেছে।

তবে এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডে (ইসিবি) হঠাৎ উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ইসিবির আশঙ্কা, ইংল্যান্ড দল যদি কোনো একসময়ে খারাপ খেলে দ্বিতীয় স্তরে নেমে যায়, তাহলে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সঙ্গে তাদের ঐতিহ্যবাহী ও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক সিরিজগুলো আর অনুষ্ঠিত নাও হতে পারে।

অর্থাৎ, ইংল্যান্ড শীর্ষ স্তরে জায়গা ধরে রাখতে না পারলে মহামর্যাদার অ্যাশেজ সিরিজ, অ্যান্ডারসন–টেন্ডুলকার ট্রফি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনকি অস্ট্রেলিয়া বা ভারতের কেউ দ্বিতীয় স্তরে নেমে গেলে বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফিও থমকে যেতে পারে। তবে টেস্টের দ্বিস্তর কাঠামো নিয়ে আপত্তি নেই অস্ট্রেলিয়ার।

সম্প্রতি অ্যান্ডারসন–টেন্ডুলকার ট্রফিতে অসাধারণ ক্রিকেট উপহার দিয়েছে ইংল্যান্ড ও ভারত.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলিম সভ্যতায় রসায়নের সোনালি যুগ

গোলাপজলের মিষ্টি সুবাস থেকে শুরু করে কেরোসিনের জ্বালানি শক্তি—মুসলিম সভ্যতার রসায়নবিদরা একটি সমৃদ্ধ রসায়নের জগত উপহার দিয়েছেন। নবম শতাব্দী থেকে তারা পাতন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবনকে আরও সুন্দর ও কার্যকর করেছেন। তাদের আবিষ্কার আধুনিক রসায়নের ভিত্তি স্থাপন করেছে, যা আজও আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হয়।

এই নিবন্ধে জাবির ইবন হাইয়ান, আল-রাজি ও আল-কিন্দির মতো পথপ্রদর্শকদের হাত ধরে মুসলিম সভ্যতার রসায়নের সোনালি যুগের সন্ধান করা হয়েছে।

পাতনের প্রথম ফল ছিল গোলাপজল, যা ছিল খাবার, পানীয়, সুগন্ধি ও প্রসাধনীতে অপরিহার্য। আল-কিন্দি সুগন্ধির রসায়ন বিষয়ে একটি গ্রন্থ লিখেছিলেন, যাতে ছিল ১০৭টি ভিন্ন সুগন্ধির রেসিপি।পাতন প্রক্রিয়া: রসায়নের হৃৎপিণ্ড

নবম শতকের মাঝামাঝি মুসলিম রসায়নবিদরা স্ফটিকায়ন, জারণ, বাষ্পীভবন, পরিশোধন ও ফিল্টারেশনের মতো প্রক্রিয়া সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। (১০০১ ইনভেনশনস: দি এন্ডিউরিং লিগ্যাসি অব মুসলিম সিভিলাইজেশন, ৪র্থ সংস্করণ, পৃ. ৯০)

তাদের পরীক্ষাকে নির্ভুল করতে তারা সূক্ষ্ম দাঁড়িপাল্লা আবিষ্কার করেন, যা রাসায়নিক নমুনা ওজনের জন্য ব্যবহৃত হতো। এই পরীক্ষাগুলোর পাশাপাশি তারা নতুন তাত্ত্বিক ধারণা ও রাসায়নিক ধারণা প্রবর্তন করেন, যার কিছু কিছু টিকে ছিল শতাব্দীর পর শতাব্দী। পাতন প্রক্রিয়া ছিল তাদের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান, যা তরল পদার্থকে ফুটিয়ে তার বিশুদ্ধ উপাদান আলাদা করার একটি শিল্প ছিল।

পাতনের প্রথম ফল ছিল গোলাপজল, যা ছিল খাবার, পানীয়, সুগন্ধি ও প্রসাধনীতে অপরিহার্য। আল-কিন্দি সুগন্ধির রসায়ন বিষয়ে একটি গ্রন্থ লিখেছিলেন, যাতে ছিল ১০৭টি ভিন্ন সুগন্ধির রেসিপি। (১০০১ ইনভেনশনস: দি এন্ডিউরিং লিগ্যাসি অব মুসলিম সিভিলাইজেশন, ৪র্থ সংস্করণ, পৃ. ৯১)

এই প্রক্রিয়া আধুনিক সুগন্ধি শিল্পের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

আরও পড়ুনমুসলিম সমাজকে বিজ্ঞানমুখী করার উপায়০২ আগস্ট ২০২৫জাবির ইবন হাইয়ান: রসায়নের পথিকৃৎ

জাবির ইবন হাইয়ান (৭২২-৮১৫), পশ্চিমে গেবার নামে পরিচিত, ছিলেন রসায়নের জনক। কুফায় একজন ওষুধ ব্যবসায়ীর পুত্র হিসেবে তিনি পরিশোধন, স্ফটিকায়ন, পাতন, জারণ ও ফিল্টারেশনের মতো প্রক্রিয়াগুলো উন্নত করেন। (আর. আরনালদেজ-এল. ম্যাসিগনন, ইন অ্যানসিয়েন্ট অ্যান্ড মেডিয়েভাল সায়েন্স, লন্ডন: থেমস অ্যান্ড হাডসন: ১৯৬৩, পৃ. ৪১৩)

তিনি এমন কাগজ তৈরির চেষ্টা করেছিলেন যা পুড়ত না এবং এমন কালি যা অন্ধকারে পড়া যায়।

তিনি অ্যালেম্বিক স্টিল ব্যবহার করে পাতন প্রক্রিয়া পরিচালনা করতেন, যা তরলকে ফুটিয়ে বিশুদ্ধ উপাদান সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত হতো। তিনি এমন কাগজ তৈরির চেষ্টা করেছিলেন যা পুড়ত না এবং এমন কালি যা অন্ধকারে পড়া যায়।

জাবির পদার্থের শ্রেণিবিভাগ ও রাসায়নিক জ্ঞান সংগঠনের নতুন পদ্ধতি প্রবর্তন করেন। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলো পরবর্তী শতাব্দীতে ল্যাটিন ভাষায় অনূদিত হয় এবং ১৭শ শতাব্দী পর্যন্ত পুনঃপ্রকাশিত হয়। (১০০১ ইনভেনশনস: দি এন্ডিউরিং লিগ্যাসি অব মুসলিম সিভিলাইজেশন, ৪র্থ সংস্করণ, পৃ. ৯৩)

তাঁর কাজ আধুনিক রসায়নের ভিত্তি স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মদ পাতন করে বিশুদ্ধ অ্যালকোহল তৈরি

সম্পর্কিত নিবন্ধ