ন্যূনতম সংস্কারের প্রত্যাশা পূরণের ব্যর্থতায় বিএনপিরও বড় ভূমিকা রয়েছে: মামুনুল হক
Published: 9th, August 2025 GMT
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাঙ্ক্ষিত মান তো দূরের কথা, ন্যূনতম সংস্কারের প্রত্যাশাও পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতায় বিএনপিরও বড় ভূমিকা রয়েছে।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুক্রবার বাংলাদেশ খেলাফত শ্রমিক মজলিসের কেন্দ্রীয় শ্রমিক কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এ কথা বলেন।
সংস্কারের দায়িত্ব পালনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হয়েছে, এমন মন্তব্য করে মামুনুল হক বলেন, নির্বাচনব্যবস্থায় এমন পরিবর্তন হওয়া দরকার ছিল, যাতে দুর্বৃত্তায়ন, পেশিশক্তি, কালোটাকা ও সন্ত্রাসের আধিপত্য বন্ধ হয়। কিন্তু ৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার (অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস) ভাষণে সেই অভিপ্রায় দেখা যায়নি। প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব নিয়েছেন যখন, নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সমান সুযোগ) তৈরি করা ছাড়া আপনার মুক্তির উপায় নেই।’
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, ঘোষণাপত্রে বঙ্গভঙ্গ, ১৯৪৭-এর স্বাধীনতা, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনার কথাও উল্লেখ নেই। অথচ এগুলো বাংলাদেশের ইতিহাসের ভিত্তি। শাপলা চত্বর ছাড়া চব্বিশের বিপ্লবের পাটাতন তৈরি হতো না। এ ছাড়া ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ডকেও ঘোষণাপত্রে স্থান দেওয়া হয়নি। শাপলার রক্তকে স্বীকৃতি, বিডিআর হত্যাকাণ্ড এবং এ–সংক্রান্ত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকে জুলাই ঘোষণায় অন্তর্ভুক্ত করে সেটিকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে।
জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষের প্রসঙ্গ তুলে মামুনুল হক বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠনের সিদ্ধান্ত নিলেও দেশের বর্তমান সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের দ্বিমতের কারণে এটি কার্যকর হবে না। পিআর পদ্ধতি না থাকলে উচ্চকক্ষ কেবল “বেকার পুনর্বাসনের উচ্চকক্ষ” হবে, যা আমরা চাই না।’
কনভেনশনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শ্রমিক–জনতার অবদান তুলে ধরে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘চব্বিশের ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্র-জনতা। কিন্তু রাজপথ দখল ও ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে রক্ত ও জীবন দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম অংশীজন ছিলেন শ্রমিক-জনতা। দুঃখজনক হলেও সত্য, তাঁদের নিরলস ও সংগ্রামী ভূমিকার রাষ্ট্রীয় মূল্যায়ন হয়নি। এটি বাংলাদেশের ব্যর্থতা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার জন্য শ্রমিক-জনতার কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
বাংলাদেশ খেলাফত শ্রমিক মজলিসের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মুফতি শরাফত হোসাইনের সভাপতিত্বে কনভেনশন উদ্বোধন করেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী।
সংগঠনের সদস্যসচিব আবু সাঈদ নোমান ও উচ্চতর পরিষদ সদস্য আজিজুর রহমান হেলালের পরিচালনায় কনভেনশনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, রেজাউল করিম, শাহিনুর পাশা চৌধুরী, মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা তফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তীব্র অপুষ্টিতে ১২ হাজার শিশু
ফিলিস্তিনের গাজায় খাদ্যসংকটের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী শিশুরা। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে খাবার না পেয়ে শিশুমৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাবে, গাজায় এখন পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ১২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। আর চলতি বছরের শুরু থেকে অনাহারে মৃত্যু হয়েছে ৯৯ ফিলিস্তিনির। তাঁদের মধ্যে ৩৫ জনই শিশু।
শিশুদের দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টি নিয়ে সতর্ক করে জাতিসংঘ বলেছে, গাজায় পাঁচ বছরের নিচের ২ লাখ ৯০ হাজার শিশুর মধ্যে মাত্র ৮ হাজার ৭০০ শিশুকে প্রয়োজনীয় খাবার ও পুষ্টি উপকরণ সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে ডব্লিউএইচওর সদর দপ্তরে মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, জুলাই মাসে গাজায় পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ১২ হাজার শিশুকে শনাক্ত করা হয়েছে, যারা তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। এখন পর্যন্ত সংগ্রহ করা তথ্য অনুযায়ী, এটিই এক মাসে সর্বোচ্চসংখ্যক শিশুর অনাহারে থাকার ঘটনা।
তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস