বিকাশ অ্যাপেই ডিপিএস করতে পারেন, পাবেন আকর্ষণীয় সুদ
Published: 10th, August 2025 GMT
প্রত্যেক মানুষের জীবনে সঞ্চয় খুবই প্রয়োজনীয়। যে পরিমাণ আয় হয়, তা থেকে অল্প অল্প করে জমিয়ে রাখাটাই সঞ্চয়। এই সঞ্চয় হয়ে উঠতে পারে বিপদের কিংবা আনন্দের সময়ের প্রধান সঙ্গী। সঞ্চয় কোথায় করবেন, এটা নিয়ে অনেকেই দ্বিধাগ্রস্ত থাকেন। আবার প্রতি মাসে বা সপ্তাহে অল্প পরিমাণ টাকা জমা করার জন্য অনেকে ব্যাংকে যেতে অস্বস্তি বোধ করেন। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সঞ্চয় করা হয়ে উঠে না, ডিপোজিট পেনশন স্কিম (ডিপিএস) করা হয় না।
এখন মুঠোফোন ব্যবহার করে ভালো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় সঞ্চয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ জন্য বিকাশে হিসাব থাকতে হবে অথবা খুলতে হবে। সুদভিত্তিক ও ইসলামি ধারার উভয় পদ্ধতিতেই সঞ্চয় করা যায়। বিকাশ হিসাব দিয়ে প্রতি সপ্তাহে সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা বা মাসে ৫০০ টাকা থেকে সঞ্চয় করা যায়। এতে মিলছে বাজারভিত্তিক সুদ। পাশাপাশি মেয়াদ শেষে সুদ বা মুনাফাসহ বিনা খরচে উত্তোলন করা যায়।
যেভাবে সঞ্চয় করবেনবিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে সঞ্চয়ী হিসাবে ক্লিক করে সাপ্তাহিক ও মাসিক দুই ধরনের ডিপিএস খোলা যায়। প্রতি মাসে বা সপ্তাহে যত টাকা জমা করতে চান, তা হিসাবে থাকতে হবে। অ্যাপে সঞ্চয় অপশনে ক্লিক করলেই প্রথমেই দেখাবে, ডিপিএস না ইসলামিক ডিপিএস, কোন ধরনের সেবা নিতে চান। এরপর সাপ্তাহিক নাকি মাসিক, কোন ধরনের ডিপিএস খুলতে চান। এরপর মেয়াদ ও কোন প্রতিষ্ঠানে ডিপিএস করতে চান, তা ক্লিক করে এগিয়ে যেতে হবে। নমিনির ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার পর হিসাব খোলা হয়ে যাবে। হিসাবটি খোলা নিশ্চিত হলে আপনার মুঠোফোনে খুদে বার্তা আসবে।
এখানে প্রতি সপ্তাহে জমা করা যায় ২৫০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর মাসিক সঞ্চয় হিসাবে ৫০০ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা করা যায়। সাপ্তাহিক ডিপিএস ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত মেয়াদ এবং মাসিক ডিপিএস ছয় মাস থেকে চার বছর পর্যন্ত মেয়াদে খোলা যায়। টাকা জমা শুরুর পর তিন মাস পূর্ণ হওয়ার আগে ডিপিএস বাতিল করা যায় না। তবে তিন মাস শেষে যেকোনো সময় হিসাব বন্ধের জন্য আবেদন করা যায়। তখন চাইলে ওই সময়ে জমা হওয়া টাকা ফেরত পাওয়া যায়। প্রতি সপ্তাহে ঘরে বসে টাকা জমা করা যায় ব্র্যাক ব্যাংক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও ঢাকা ব্যাংকে। প্রতি মাসে টাকা জমা করা যায় ব্র্যাক ব্যাংক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ঢাকা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকের সিটি ইসলামিকে। ফলে এখন ঘরে বসেই ডিপিএস করাটা হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। এ জন্য বাড়তি কোনো নথিপত্র প্রয়োজন হচ্ছে না।
কে কত সুদ দিচ্ছেবিকাশ অ্যাপে সাপ্তাহিক ৫০০ টাকার এক বছর মেয়াদি ডিপিএস খুললে সাড়ে ৮ থেকে সাড়ে ৯ শতাংশ সুদ মিলছে। আর মাসিক এক হাজার টাকা জমায় এক বছর মেয়াদি ডিপিএসে ৯ থেকে ১০ শতাংশ সুদ মিলছে। মেয়াদ যত বেশি, সুদের হারও তত বেশি। প্রতি মাসের নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিপিএসের টাকা কেটে নেওয়া হয়।
প্রতি সপ্তাহে ৫০০ টাকা জমা করলে এক বছর পর আইডিএলসি ফাইন্যান্স দেবে ২৭ হাজার ২৩৯ টাকা। এতে সুদ ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। ঢাকা ব্যাংক দেবে ২৭ হাজার ২০৫ টাকা। এতে সুদের হার ৯ শতাংশ। ব্র্যাক ব্যাংক দেবে ২৭ হাজার ১৩৮ টাকা। এতে সুদের হার সাড়ে ৮ শতাংশ।
বিকাশ অ্যাপে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা জমা করলে বছরে ৯ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ মিলছে। প্রতি মাসে এক হাজার টাকা জমা করলে আইডিএলসি ফাইন্যান্স দিচ্ছে ১২ হাজার ৬৫৮ টাকা। এতে সুদের হার ১০ শতাংশ। ঢাকা ব্যাংক দিচ্ছে ১২ হাজার ৫৯৭ টাকা। এতে সুদের হার ৯ শতাংশ।
আপনি চাইলে সঞ্চয়ের বিবরণী সংগ্রহ করতে পারবেন অ্যাপস থেকে। এই ডিপিএস থেকে মিলবে করছাড়ও। ২০২১ সালে বিকাশের ডিজিটাল সেভিংস বা সঞ্চয়ী সেবা কার্যক্রম শুরু হয়। তখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্সের মাধ্যমে মাসিক ভিত্তিতে ডিপিএস সেবা চালু হয়। পরবর্তী সময়ে চারটি ব্যাংক এ কার্যক্রমে যুক্ত হয়। আর বিকাশ অ্যাপে সাপ্তাহিক ডিপিএস সেবা চালু হয় ২০২৪ সালের শুরুতে। এ ছাড়া ইসলামি শরিয়াহ অনুসারে সঞ্চয়ের জন্য সিটি ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংকের ইসলামিক ডিপিএস সেবাও চালু করেছে বিকাশ। সেবাটি চালু হওয়ার পর বিকাশের গ্রাহকেরা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত ৪০ লাখের বেশি ডিপিএস হিসাব খুলেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ইন য ন স আইড এলস ক ড প এস ৫০০ ট ক এক বছর ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সাফল্যের ২৫ গল্প নিয়ে বই ‘সুখবর বাংলাদেশ’
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তরুণ প্রজন্মের সাফল্য ও উদ্যমের ২৫টি অনুপ্রেরণামূলক গল্প নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে লেখক ও সাংবাদিক রাহিতুল ইসলামের নতুন বই ‘সুখবর বাংলাদেশ’। প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইটি পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং প্রথম সাত দিনেই শেষ হয়েছে প্রথম মুদ্রণ।
‘সুখবর বাংলাদেশ’ বইটিতে লেখক দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সেসব তরুণের গল্প তুলে ধরেছেন, যাঁরা তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করে পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। বইটিতে রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তিভিত্তিক সেবা তৈরির মাধ্যমে শূন্য থেকে শিখরে পৌঁছানোর বাস্তব কাহিনি।
নানা প্রতিকূলতা জয় করার গল্প উঠে এসেছে বইয়ের পাতায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘সুবীরের বনে বসে ডলার আয়’, ‘শিক্ষক মিজানুরের মাসে ৭ লাখ টাকা উপার্জন’, ‘শূন্য থেকে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা কাওসারের আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন’, ‘২৫ বছর বয়সী নয়নের কোটি টাকা বেতনের প্রতিষ্ঠান গড়ার গল্প’ ইত্যাদি। এ ছাড়া মাদ্রাসার ছাত্র থেকে সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া মিনহাজ, ডেলিভারি বয় থেকে সফলতার শীর্ষে পৌঁছানো তরুণ, এমনকি ৬৮ বছর বয়সী বাক্প্রতিবন্ধী ফ্রিল্যান্সারের স্বাবলম্বী হওয়ার কাহিনিও পাঠকদের অনুপ্রাণিত করবে।
বইটিতে আরও রয়েছে খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত গ্রামের আমির, শিবচরে ৩৫ জনের কর্মসংস্থান তৈরি করা সহিদুল এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়েও মাসে দুই লাখ টাকা আয় করা শিল্পীর মতো ২৫টি সংগ্রামের গল্প। প্রতিটি গল্পই প্রমাণ করে, সুযোগের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রত্যয় ও প্রতিভার জোরে কীভাবে বড় সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।
লেখক রাহিতুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পেশাগত কারণে আমাকে দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা—এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামেও যেতে হয়। সেই সব জায়গা থেকেই আমি খুঁজে এনেছি সত্যিকারের সুখবর, যেগুলো শুধু সংবাদ নয়, বরং সাহস ও স্বপ্নের গল্প। আমি বিশ্বাস করি, এঁদের জীবন ও সংগ্রাম অন্যদের জন্য হয়ে উঠবে প্রেরণার বাতিঘর।’
নিয়াজ চৌধুরী তুলির প্রচ্ছদে বইটির মুদ্রিত মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫০ টাকা। ‘সুখবর বাংলাদেশ’ বইটি প্রথমা প্রকাশনের সকল শাখা, দেশের প্রধান বইয়ের দোকান এবং অনলাইন বুকশপ প্রথমা ডটকম ও রকমারি ডটকমে পাওয়া যাচ্ছে।