খুলনার গল্লামারীতে সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের কার্যালয় দখল করে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ ঘোষণা করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা।

আজ রবিবার (১০ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মৎস্য বীজ খামারের কার্যালয়ে যায়। সেখানে সমাবেশ শেষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১০ মিনিটের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বের হয়ে যেতে বলে। পরে কর্মকর্তারা চলে গেলে শিক্ষার্থীরা মূল ভবনে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে দেয়। এ সময় তারা ‘দাবি নয়, অধিকার; মৎস্য ভবন দরকার’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়। শিক্ষার্থীরা বিকেল ২টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

খামারের কার্যালয় দখলের বিষয় স্বীকার করেছেন মৎস্য খামারের ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, ‘‘৪০০ থেকে ৫০০ শিক্ষার্থী জোর করে আমার অফিসে ঢুকে ১০ মিনিটের মধ্যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের হয়ে যেতে বলে। এ সময় আমরা বের হতে না চাইলে জোর করে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়। এ কারণে আমরা বের হয়ে যায়। বিষয়টি আমি জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।’’ 

আরো পড়ুন:

যবিপ্রবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু সোমবার

জাকসু তফসিল ঘোষণা, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর নির্বাচন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার ভেতরে অবস্থিত ১০ দশমিক ৩৫ একর আয়তনের সরকারি এ খামার আবাসন সঙ্কট নিরসন, গবেষণাগার সম্প্রসারণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে বড় বাধা হয়ে আছে। বর্তমানে খুবির শিক্ষার্থী সংখ্যা ৭ হাজারের বেশি হলেও হল রয়েছে মাত্র পাঁচটি। মাত্র ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। জীববিজ্ঞানভিত্তিক ডিসিপ্লিনগুলোর মাঠ গবেষণার ক্ষেত্রেও জমির অভাব তীব্র সমস্যা তৈরি করছে।

মৎস্য খামারের সূত্রে জানা গেছে, সেখানে মৎস্য খামারের আওতায় ১৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজসহ দুটি প্রকল্পে আরো ১০ জন কর্মরত রয়েছে। তারা বর্তমানে অফিসের বাইরে অবস্থান করছে। সেখানে চার তলা বিশিষ্ট অফিস ভবন দখল করে নেয়া হয়েছে।

খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.

বদরুজ্জামান জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয়ে সরকারি অফিস দখল করা হয়েছে। এ বিষয় মৌখিক এবং লিখিতভাবে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। আপাতত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসের বাইরে অবস্থান করছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কথা বলতে রাজি হয়নি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.  রেজাউল করিমকে ফোন করা হলে তিনিও রিসিভ করেননি।

সরকারি এ খামারের জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করার দাবিতে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে শিক্ষার্থীরা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিবের কাছে স্মারকলিপি দেয় এবং মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে মৎস্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে জমি হস্তান্তরের অনুরোধ জানায়। চলতি বছরের মার্চ মাসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার  তাদের দাবিকে যৌক্তিক উল্লেখ করে সমাধানের আশ্বাস দিলেও বিষয়টি ঝুলে আছে। 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত সরক র মৎস য অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নিরাপত্তা পর্যালোচনায় আইএইএর প্রতিনিধিদল

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নিরাপত্তা নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করেছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। আজ রোববার সকাল থেকে সংস্থাটির প্রি-অপারেশনাল সেফটি রিভিউ টিমের ১৫ সদস্যের দল এ পর্যালোচনার কাজ শুরু করে।

প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে আছেন আইএইএর জ্যেষ্ঠ নিউক্লিয়ার সেফটি অফিসার সাইমন ফিলিপ মারগান, উপদলনেতা হিসেবে আছেন অপারেশনাল সেফটি সেকশন প্রধান জুরাজ রোভনি। প্রতিনিধিদল প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি লোডিংয়ের আগে ১১টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র পর্যালোচনা করবে। এরপর পর্যালোচনা প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি লোডিংয়ের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক মো. কবির হোসেন বলেন, আইএইএ প্রতিনিধিদল আজ সকাল থেকে প্রকল্পের ১১টি ক্ষেত্রে কাজ শুরু করেছে। ২৭ আগস্ট পর্যন্ত এ পর্যালোচনা চলবে। এরপর প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি লোডিং ও প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হবে।

প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্যমতে, প্রতিনিধিদল প্রকল্পের টিম নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ ও যোগ্যতা, পরিচালনা প্রস্তুতি, রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা, প্রকল্পের প্রযুক্তিগত দিক, পরিচালনা অভিজ্ঞতা ও প্রতিক্রিয়া, বিকিরণ সুরক্ষা ব্যবস্থা, রসায়ন, জরুরি প্রস্তুতি, দুর্ঘটনা ব্যবস্থাপনাব্যবস্থাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক পর্যালোচনা করবে।

জানতে চাইলে রূপপুর প্রকল্পের সাইট ডিরেক্টর প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি লোডিং ও কার্যক্রম শুরু করার চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এ জন্য আইএইএর এই পর্যালোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রসঙ্গত, রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুটি ইউনিট নির্মাণাধীন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রোসাটমের প্রকৌশল বিভাগ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২টি ইউনিটের প্রতিটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম। বর্তমানে প্রথম ইউনিটের কাজ প্রায় শেষের দিকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ