প্রায় কাছাকাছি সময়ে ক্যারিয়ার শুরু করে এখন গোধূলি বেলায় লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ২০২৬ বিশ্বকাপকে দুজনের ক্যারিয়ারের শেষ ধরে নিলে সময় এখন খুব অল্পই হাতে আছে। সামনে সময় কম থাকলেও অতীতে ফিরে তাকালে দুজনের ক্যারিয়ারজুড়ে সুখস্মৃতির বিস্তীর্ণ এক জগৎ।

প্রায় দুই দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে অসামান্য সব মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন মেসি-রোনালদো। তবে দীর্ঘ এ যাত্রায় সবকিছু যে আনন্দময় ছিল তা নয়, বেদনার অনেক ক্ষতও পেছনে রেখে এসেছেন এ দুজন। কখনো কখনো সেই বেদনা এসেছে চোটের রূপ নিয়ে। যে চোট ক্যারিয়ারের অনেক দিন আর ম্যাচ কেড়ে নিয়েছে দুজনের কাছ থেকেই।

পেছন ফিরে তাকালে অবশ্য চোটের ক্ষেত্রে রোনালদোর চেয়ে মেসির ক্ষতটাইই বেশি ভারী মনে হবে। চোটের কারণে রোনালদোর প্রায় দ্বিগুণ সময় মাঠের বাইরে কাটিয়েছেন মেসি। মিস করেছেন রোনালদোর চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ম্যাচ। ট্রান্সফারমার্কেটের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০০৪-০৫ মৌসুমে বার্সেলোনার মূল দলের হয়ে যাত্রা শুরুর পর এখন পর্যন্ত ৯১০ দিন চোটের কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন মেসি।

আরও পড়ুনমেসি-রোনালদোর শ্রেষ্ঠত্বের বিতর্ক কেন এখনো শেষ হয়নি১৮ নভেম্বর ২০২৪

আর এ সময় আর্জেন্টাইন মহাতারকা সব মিলিয়ে মিস করেছেন ১৯৫ ম্যাচ। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ২০০৫-০৬ ও ২০০৬-০৭ মৌসুমে মেসি মাঠের বাইরে ছিলেন যথাক্রমে ৮৬ ও ৮৮ দিন। আর এই দুই মৌসুমে মেসি করেছেন ১৯ ও ২৮ ম্যাচ। সর্বশেষ ২০২৪-২৫ মৌসুমেও চোটে অনেক ভুগেছেন মেসি।

এই মৌসুমে ৭৮ দিন মাঠের বাইরে থাকা মেসি মিস করেছেন ১৪ ম্যাচ। এই মুহূর্তেও চোটের কারণে মাঠের বাইরে আছেন মেসি। সর্বশেষ নেখাকসারের বিপক্ষে লিগস কাপের ম্যাচে ১১ মিনিটে চোটে পড়ে মাঠ ছাড়েন আর্জেন্টিনার ২০২২ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক।

অন্যদিকে মেসির আগে ক্যারিয়ার শুরু করেও চোটের দিক থেকে তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রোনালদো। ফিটনেস আইকন রোনালদো ২০০২-০৩ মৌসুমে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৮২ দিন চোটের কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন। আর এ সময়ে রোনালদো মিস করেছেন ৮৫ ম্যাচ, যা কি না মেসির অর্ধেকের চেয়েও কম।

চোটের কারণে মাত্র দুই মৌসুমে রোনালদোর মিস করা ম্যাচের সংখ্যা দুই অঙ্ক স্পর্শ করেছে। ২০০৭-০৮ মৌসুমে ১২ ম্যাচ এবং ২০০৯-১০ মৌসুমে ১৩ ম্যাচ মিস করেছেন রোনালদো।

ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসেও রোনালদো আশ্চর্য রকমের ফিট। ২০২৩-২৪ মৌসুমে কোনো ম্যাচই মিস করেননি পর্তুগালের অধিনায়ক। অতীত যেমনই হোক, মেসি-রোনালদোর ভক্ত-সমর্থকদের চাওয়া এখন হয়তো একটাই-ফিটনেসের এ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন ফুটবলের দুই মহাতারকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম স কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

আফঈদাদের সঙ্গে এশিয়ান কাপে কারা, বিশ্বকাপের সম্ভাবনা কতটুকু

ভিয়েনতিয়েনের নিউ লাওস স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় মুখটা মলিন থাকলেও দিন শেষে বাংলাদেশের মেয়েদের মুখে হাসিই ফিরেছে। মলিন হওয়ার কারণ—এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৬-১ গোলের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। কিছুক্ষণ পরই হাসি ফেরার কারণ—বাছাইয়ে অন্যদের সব ম্যাচ শেষ হওয়ার পর জানা গেল বাংলাদেশ নিরাপদ জায়গাতেই আছে।

অর্থাৎ, অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্তপর্বে জায়গা করতে ন্যূনতম সেরা তিন রানার্সআপের মধ্যে থাকার যে প্রয়োজনীয়তা ছিল, সেটি বাংলাদেশ পূরণ করেছে। শীর্ষ তিন রানার্সআপের মধ্যে দ্বিতীয় হয়ে ২০২৬ অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিয়েছেন আফঈদা খন্দকার-মোসাম্মত সাগরিকারা।

অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ‘এইচ’ গ্রুপে দক্ষিণ কোরিয়া, লাওস ও পূর্ব তিমুরের বিপক্ষে। এই গ্রুপের সব ম্যাচ হয়েছে লাওসে। গত ২ থেকে ১০ আগস্ট সময়ে আরও ৭টি দেশে বাছাইপর্বের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে অংশ নিয়েছে ২৯টি দেশ।

মোট ৩৩টি দল আট গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলেছে ১১টি জায়গার জন্য। আগামী বছরের এপ্রিলে দ্বাদশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ হবে থাইল্যান্ডে। স্বাগতিক হিসেবে থাইল্যান্ডের অংশগ্রহণ নিশ্চিত ছিল আগেই। ১২ দলের টুর্নামেন্টে বাকি দলগুলোই চূড়ান্ত হয়েছে রোববার শেষ হওয়া বাছাইপর্বে।

আট গ্রুপের আট সেরা দল হিসেবে থাইল্যান্ডের টিকিট কেটেছে দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান, জাপান, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম ও উত্তর কোরিয়া। প্রতিটি গ্রুপের রানার্সআপগুলোর মধ্যে পয়েন্ট ও গোল ব্যবধানে সেরা তিনে অবস্থান নিশ্চিত করেছে জর্ডান, বাংলাদেশ ও চাইনিজ তাইপে।

যে ১১টি দল বাছাইপর্ব উত্তীর্ণ হয়ে ২০২৬ সালের মূল পর্বে জায়গা করেছে, তাদের মধ্যে বিশেষভাবে ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। বাকি ১০টি দলই এএফসির দ্বিবার্ষিক যুব টুর্নামেন্টে (অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২০) আগেও অংশ নিয়েছে। একবার নয়, একাধিকবার। এশিয়া মহাদেশের নারী ফুটবলের এই প্রতিযোগিতার আগের ১১ আসরের মধ্যে সবচেয়ে কম অংশ নিয়েছে ভারত, তাও তিনবার। কিন্তু বাংলাদেশ কখনো বাছাইপর্বই উতরাতে পারেনি। আফঈদা-সাগরিকাদের ২০২৬ আসরে জায়গা করে নেওয়া তাই বিশেষই।

বিশ্বকাপও কাছেই!

থাইল্যান্ডে ১২ দল নিয়ে অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ শুরু হবে ২০২৬ সালের ১ এপ্রিল, ফাইনাল ১৮ এপ্রিল। এই টুর্নামেন্টে ১২টি দল মোট ৩টি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। কোন দল কোন গ্রুপে আর কোন কোন দলের বিপক্ষে খেলবে, সেটি চূড়ান্ত হয় যে ড্রতে, এএফসি তা এখনো ঘোষণা করেনি। তবে পট চূড়ান্ত হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ পট ৪-এ আছে জর্ডান ও ভারতের সঙ্গে। অর্থাৎ, এশিয়ান কাপের গ্রুপ পর্বে এ দুই দেশ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হবে না। তিন দলই অন্য তিনটি পট থেকে একটি করে দলকে গ্রুপসঙ্গী হিসেবে পাবে। তিন গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ এবং সেরা দুই তৃতীয় স্থানধারী খেলবে কোয়ার্টার ফাইনালে, সেখান থেকে সেমিফাইনাল হয়ে ফাইনাল।

অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপের যে ফরম্যাট, তাতে দলগুলোর সামনে বিশ্বকাপ খেলার হাতছানিও আছে। ২০২৬ ফিফা অনূর্ধ্ব২০ নারী বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে পোল্যান্ডে। এই আসরেই প্রথমবারের মতো ২৪টি দল অংশ নেবে। আগের চেয়ে ৮টি দল বেড়ে যাওয়ায় এশিয়া থেকে খেলার সুযোগ পাবে ৪টি দল। আর এই চার দলই চূড়ান্ত হবে এশিয়ান কাপ থেকে। ১২ দলের টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে ওঠা চার দলই পাবে বিশ্বকাপের সেই টিকিট।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একাদশে ভর্তিতে প্রথম ধাপে আবেদনের সময় বাড়ল
  • আফঈদাদের সঙ্গে এশিয়ান কাপে কারা, বিশ্বকাপের সম্ভাবনা কতটুকু