প্রশাসক দায়িত্ব গ্রহণের ১১ মাস পর অবশেষে চট্টগ্রাম চেম্বারের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে চেম্বারে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন বোর্ডের প্রধান ও চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মনোয়ারা বেগম। আগামী ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে চেম্বারের নির্বাচন।

তফসিল অনুযায়ী, ৩০ আগস্ট গ্রুপ ও টাউন অ্যাসোসিয়েশন সদস্যের সঙ্গে বৈঠকে তাঁদের প্রতিনিধি ঠিক করা হবে। ৭ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচনী বোর্ড। ১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশ হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। ফরম বিক্রি হবে ১৪ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর। জমাদানের শেষ তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর। ২৫ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক ও ৫ অক্টোবর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।

নির্বাচন বোর্ডের সদস্য হিসেবে আছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.

কামরুজ্জামান এবং বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (সাধারণ শাখা) আহমেদ হাছান। গত এপ্রিলে প্রাথমিকভাবে এ নির্বাচন বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। প্রথমে মে মাসের শেষে এবং পরে আগস্টের শুরুতে নির্বাচনের পরিকল্পনা ছিল।

নির্বাচন বোর্ডের সদস্য ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তফসিল অনুযায়ী চট্টগ্রাম চেম্বারে আগামী ১ নভেম্বর ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রাম চেম্বারে শেষ ভোট হয়েছিল ২০১৩ সালে। এরপর নির্বাচন হলেও ভোট হয়নি। এ সময় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ নির্বাচনের নামে প্রভাব খাটিয়ে ও কারসাজি করে কিছু ব্যক্তিকে নেতা বানিয়ে চেম্বারে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ করেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর চেম্বারের সভাপতি ও দুই সহসভাপতিসহ ২১ পরিচালক ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রাম চেম্বার নিয়ে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ প্রতিবাদে রূপ নেয়। ফলে চেম্বারের পুরো পর্ষদ পদত্যাগে বাধ্য হয়। এটি ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত শতবর্ষী এই চেম্বারের পুরো পর্ষদের পদত্যাগের প্রথম ঘটনা বলে জানা গেছে। লতিফপন্থী নেতাদের পদত্যাগের পর থেকে চেম্বারের নতুন ভোটার তালিকা করার দাবি জোরদার হয়।

রাষ্ট্রক্ষমতার পালাবদলের পর গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসকের দায়িত্ব নেন তৎকালীন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা। শুরুতে তাঁর মেয়াদ ছিল ১২০ দিন। পরে আরও দুই দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়। সবশেষ গত ৩ জুলাই এর প্রজ্ঞাপনে তাঁর মেয়াদ আরও ৬০ দিনের জন্য বাড়ানো হয়। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর শেষ হচ্ছে তাঁর মেয়াদ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স প ট ম বর পদত য গ তফস ল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

রায় প্রত্যাখ্যান আওয়ামী লীগের

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “আজ যে রায় ঘোষণা করেছে এ রায় বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করে। বাংলার জনগণ এ রায় মানে না, মানবে না।”

আরো পড়ুন:

রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি

তিনি বলেন, “অবৈধ আদালত যে মামলার রায় দিয়েছে সেটি ১৪ অগাস্ট শুরু করে ১৭ নভেম্বর মামলা শেষ করেছে। ৮৪ জন সাক্ষীকে সামনে রেখে ৫৪ জনকে হাজির করে ২০ দিনে মামলা শেষ করেছে। এই দুই মাসের মধ্যে মাত্র ২০ দিন আদালত চলেছে।”

“এর প্রধান বিচারক গত এক মাস অনুপস্থিত ছিলেন। তারপরেও প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে মানুষের প্রিয় নেত্রীর বিরুদ্ধে যে রায় দিয়েছে।”

জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “অচিরেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব”।

এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ২ নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া মামলার অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়। দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় ঘোষণা হলো আজ।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ