ইসি অভিযান থেকে রাহুলদের আটক, পরে ছেড়ে দিল পুলিশ
Published: 11th, August 2025 GMT
ভারতের বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের মিছিল করে নির্বাচন কমিশন ভবন অভিযান করতে দিল না দিল্লি পুলিশ। সংসদ ভবন চত্বর থেকে বেরোতেই রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রসহ তাঁদের গ্রেপ্তার করা হলো। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে সংসদ মার্গে দেখা গেল সেই অভিনব দৃশ্য। পরে অবশ্য আটক সবাইকে মুক্তি দেওয়া হয়।
আগে থেকেই ঠিক ছিল, বেলা সাড়ে ১১টায় সংসদ ভবনে জড়ো হবেন বিরোধী দলের সব সংসদ সদস্য। বেলা ১১টায় সংসদের অধিবেশন শুরু হলে বিহারে ভোটার তালিকার নিবিড় পর্যালোচনার (এসআইআর) বিরুদ্ধে তাঁরা আলোচনার দাবি জানাতে থাকেন।
লোকসভার দুই কক্ষে স্পিকার ও ডেপুটি চেয়ারম্যান দাবি মানতে অস্বীকার করেন। বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে তাঁরা বাধ্য হন বেলা দুইটা পর্যন্ত সভার কাজ মুলতবি করে দিতে। তারপরই বিরোধীরা একজোট হয়ে শুরু করে ইসি অভিযান।
বিভিন্ন ভাষায় লেখা এসআইআরবিরোধী পোস্টার ও ব্যানার নিয়ে মল্লিকার্জুন খাড়গে, শারদ পাওয়ার, রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র, অখিলেশ যাদব, মহুয়া মৈত্র, শতাব্দী রায়, ডেরেক ওব্রায়ান, টি আর বালু, তিরুচা শিবা, মনোজ ঝাসহ সব দলের দুই শতাধিক সদস্য অভিযান শুরু করেন।
সংসদ ভবন থেকে বেরোনোর পর সংসদ মার্গে কিছুটা এগোতেই দিল্লি পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। অভিযান রুখতে রাস্তায় ব্যারিকেড রাখা হয়েছিল। সেই ব্যারিকেড ডিঙিয়ে সংসদ সদস্যরা এগোতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়।
পুলিশের বাধার প্রতিবাদে প্রিয়াঙ্কাসহ নারী সদস্যরা রাস্তায় বসে পড়েন। শারদ পাওয়ার, মল্লিকার্জুন খাড়গের দিকে কেউ কেউ চেয়ার এগিয়ে দেন। রাহুলসহ অনেকেই দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্র, মিতালি বাগ অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাহুল, অখিলেশ ও অন্যরা তাঁদের পরিচর্যায় এগিয়ে যান। তাঁদের গাড়িতে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
সেখানে অবস্থান নেওয়া অন্যদের আটক করে অপেক্ষমাণ বাসে তোলা হয়। ‘ইন্ডিয়া’ জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করলেও আম আদমি পার্টির (এএপি) সদস্যরাও এই অভিযানে শামিল হয়েছিলেন।
পুলিশের দাবি, ইসি দপ্তর অভিযানের আগাম অনুমতি বিরোধী সংসদ সদস্যরা নেননি। বিরোধী সংসদ সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের হেনস্তা করেছে। কারও কারও ওপর বলপ্রয়োগ করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা দেওয়া হয়েছে।
রাহুল গান্ধী বলেন, এটা সংবিধান বাঁচানোর লড়াই। স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরির লড়াই। গণতন্ত্র না বাঁচলে সংবিধানও বাঁচানো যাবে না। গণতন্ত্র বাঁচাতে গেলে ইসির পক্ষপাত বন্ধ করতে হবে।
সাম্প্রতিককালে কোনো কোনো ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর সরকারের প্রশংসা করে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের বিরাগভাজন হয়েছেন কেরালার কংগ্রেসদলীয় সংসদ সদস্য শশী থারুর। দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়লেও এই অভিযানে তিনিও শামিল হন।
ইসির বিরুদ্ধে রাহুল যেসব অভিযোগ করেছেন, শশী আগেই তা সমর্থন করেছিলেন। আজ সোমবারও তিনি বলেন, রাহুল যেসব প্রশ্ন তুলেছেন, প্রতিটিই গুরুত্বপূর্ণ ও যথাযথ। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া জরুরি। ইসি তা এড়াতে পারে না, বরং উত্তর না দিলেও মানুষের মনে ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন জাগবে।
আজ বিরোধীদের অভিযান চলাকালেই ইসি জানায়, বেলা ১১টার দিকে ৩০ জন সংসদ সদস্যকে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সে সময় সংসদ মার্গে বিরোধীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি চলছিল।
মল্লিকার্জুন খাড়গে ‘এক্স’ মারফত বলেন, তাঁরা ইসিতে স্মারকলিপি জমা দিতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দিল্লি পুলিশ তাঁদের সেই গণতান্ত্রিক অধিকারও হরণ করে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শামীম ওসমান দিনের পর দিন না’গঞ্জবাসীর সাথে প্রতারণা করেছে: কম. সাঈদ
নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনে শক্তির জানান দিলেন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কমরেড সাঈদ আহমেদ। সদর-বন্দরবাসী কাছে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করে নগরীতে শোডাউনের মাধ্যমে ধানের শীষের প্রচারণা করলেন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ এই নেতা।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে শহরের আমলাপাড়াস্থ নিজ কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু সড়কজুড়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের প্রধান এই নেতা।
মিছিল ও ধানের শীষের প্রচারণা শেষে কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে বহু দুঃখজনক ও বিতর্কিত ঘটনা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহার ও দমন পীড়নের অভিযোগ যেভাবে উত্থাপিত হয়েছে, সেগুলোর স্মৃতি আজও জাতির মনে গভীর ক্ষত হিসেবে রয়ে গেছে।
১৯৭৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজশাহীতে আমাদের দলের ৪৪ জন নেতাকে হত্যার অভিযোগ, কিংবা ১৯৭৫ সালের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে আটক করে পরে হত্যার ঘটনাকে ঘিরে উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি এসবই ইতিহাসে গভীর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একইভাবে, তৎকালীন সংসদ সদস্য শাহিন আলীর মৃত্যুকেও অনেকেই রাজনৈতিক নিপীড়নের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাগুলো আমরা ইতিহাসের দাবি হিসেবে তুলে ধরি জবাবদিহির প্রয়োজন থেকে, সত্য উন্মোচনের প্রয়োজন থেকে। কারণ যদি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অতীত ও কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলতে শুরু করি, তবে তা একদিনে শেষ করা যাবে না।
দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যেভাবে দমন-পীড়ন হয়েছে অনেকে মনে করেন, তার নজির পৃথিবীর ইতিহাসেই খুব কম রয়েছে। আর ঠিক সেই কারণেই আমরা, দেশ ও জনগণের স্বার্থে, আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নির্দেশনায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।
কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছেন এ অভিযোগ জনগণের মুখেই শোনা যায়। প্রেসিডেন্টের গাড়ি থামিয়ে স্মারকলিপি দেয়ার ঘটনায় তিনি নিজেকে যুক্ত করার চেষ্টা করলেও, সেদিন ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
তিন জানান, নারায়ণগঞ্জকে জেলা করা এবং তুলারাম কলেজকে সরকারি করার দাবিতে সেই স্মারকলিপি তিনি নিজেই প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে প্রদান করেছিলেন সেই সময় শামীম ওসমানের রাজনৈতিক অস্তিত্বই ছিল না।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের জনগণ যেভাবে প্রতারণার জবাব দিয়েছে, ভবিষ্যতেও ঠিক সে ভাবেই দেবে। নারায়ণগঞ্জের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, তালবাহানা, কিংবা অগ্নিসংযোগ বা কোনো ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা কোনোটাই বরদাস্ত করা হবে না। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এবং জনগণের নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালে যেভাবে অরজগতা সৃষ্টি করেছিল (১১ ডিসেম্বরে) আমাদের পার্টির ৪৪ জন নেতাকে রাজশাহীতে হত্যা করেছিল রক্ষী বাহিনীর মঞ্জুরের নেতৃত্বে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, ১৯৭৫ সালের (২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে ধরে এনে ঢাকা সাভারে নিয়ে শেখ মুজিবের রকিবাহিনী হত্যা করেছিল, আরো হত্যা করেছিল পার্লামেন্টে শাহিন আলিকে শেখ মুজিব নিজ হাতে,
তিনি আরও বলেন, যদি আমরা শেখ হাসিনার ইতিহাস বলতে চাই, বলে শেষ করা যাবে না বাংলাদেশের ইতিহাসে এরকম নৃশংস গণহত্যা পৃথিবীর বুকে আর কোন স্বৈরাচার করে নাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেভাবে মানুষকে হত্যা করেছে সারা পৃথিবীর বুকে নজির হয়ে থাকবে, আমরা চাই দেশ এবং জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশের আপোসিন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছে, প্রেসিডেন্টের গাড়ি সে থামিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল, শামীম ওসমান মিথ্যা কথা বলেছে, সেই দিন শামীম ওসমান কোনভাবেই এর সাথে জড়িত ছিল নাভ
ঐদিন আমি নিজে জিয়াউর রহমান কে স্মারকলিপি প্রদান করেছিলাম নারায়ণগঞ্জ কে জেলা করার জন্য, তোলারাম কলেজকে সরকারি করার জন্য, সেই সময় শামীম ওসমানের অস্তিত্ব ছিল না, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে যেভাবে প্রতারণা করেছে নারায়ণগঞ্জের জনগণ ঠিক ওইভাবেই তাকে এর জবাব দিয়ে দিয়েছি, আমরা নারায়ণগঞ্জের জনগণকে নিয়ে কোন তালবাহানা কোন অগ্নিসংযোগ যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটাতে চায় তাহলে আমরা কোন ছাড় দিব না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল এর) পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড মেহেবুব, কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড নওশাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি কমরেড নুরুলদীন ঢালী, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড সুমন হাওলাদার, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক কমরেড জাকির শিকদার, আহবায়ক নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমরেড গোলজার প্রধান, সদস্য সচিব নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড শাকিল ও সভাপতি বন্দর থানা ইরফান খন্দকার ।