ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বালতির পানিতে ডুবে সাদিয়া খাতুন নামে দেড় বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের কীর্তিনগর আশ্রয়ণ প্রকল্পে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সাদিয়া ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা সোহাগ আলী আকন্দের মেয়ে।

সাদিয়া খাতুনের নানা জমির উদ্দিন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে বাড়ির উঠোনে খেলছিল সাদিয়া। এ সময় সবার অগোচরে সে টিউবওয়েলের কাছে রাখা পানিভরা বালতিতে পড়ে যায়। সাদিয়ার মা খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বালতির মধ্যে তাকে দেখতে পান। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা.

আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, ওই শিশুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুম খান বলেছেন, পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না করায় ওই শিশুর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় শৈলকুপা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ঢাকা/সোহাগ/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ লক প

এছাড়াও পড়ুন:

শত বছর পেরিয়ে ‘শান্তির মিষ্টি’ 

বহু বছর আগে ইছামতী নদীর তীরে গড়ে ওঠে বান্দুরা বাজার। ব্রিটিশ আমলেই এটি ব্যবসাসমৃদ্ধ ‘গঞ্জ’ হিসেবে পরিচিতি পায়। সেখানেই নন্দ কুমার ঘোষ প্রতিষ্ঠা করেন ‘বিক্রমপুর অনন্তদেব মিষ্টান্ন ভান্ডার’। পরে নাম বদলে হয় ‘শান্তি মিষ্টান্ন ভান্ডার’। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ঘোষ পরিবার ধরে রেখেছে এ ব্যবসা। এলাকার মানুষের কাছে একনামে পরিচিত ‘শান্তির মিষ্টি’ হিসেবে।

সম্প্রতি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ঐতিহ্যবাহী দোকানটির কর্মীরা বেশ কর্মব্যস্ত। লাকড়ির চুলায় তৈরি হচ্ছে রসগোল্লা। পাশে দুধ জ্বাল দিচ্ছেন কারিগরেরা। দোকানের ক্যাশে বসে আছেন প্রবীণ সহদেব ঘোষ, হাসিমুখে ক্রেতাদের সামলাচ্ছেন। তাঁর দোকান-বাসা একই ছাদের নিচে। 

প্রায় ৭০ বছর আগে সহদেব ঘোষ তাঁর বাবা মোহন লাল ঘোষের হাত ধরে এ ব্যবসায় নামেন। এখন বয়স ৯০ বছর। এ বয়সেও দোকানের দেখভাল করেন। সহদেব ঘোষ বললেন, এই ব্যবসাই তাঁর জীবনের অবলম্বন। তাঁর সন্তানেরা ইউরোপ-আমেরিকায় থাকলেও ছোট ছেলে সুধীর ঘোষ তাঁর সঙ্গেই থেকে দোকান চালান। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে চান তাঁরা।

কারিগর সিদ্দিকুর রহমান ১২ বছর ধরে কাজ করছেন এখানে। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু খাঁটি দুধের ছানা ব্যবহার করি। কোনো পানি বা ভেজালের সুযোগ নেই।’ দোকানের বিক্রয়কর্মী শ্যামল বলেন, ‘প্রতিদিন এত ক্রেতা আসে যে সামলানোই মুশকিল। তবে এই ভিড়েই আনন্দ লাগে!’

সহদেব ঘোষের ছোট ভাই মধু ঘোষ জানান, তাঁদের পরিবার প্রায় ১৩০ বছর ধরে এ ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছে। নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত পুরো বান্দুরা বাজারে একটাই মিষ্টির দোকান ছিল—এই শান্তি মিষ্টান্ন ভান্ডার। এখন প্রতিদিন ২০০-৩০০ কেজি মিষ্টি বিক্রি হয়, মৌসুমভেদে তা বাড়ে বা কমে। অনেকে ফোনে অর্ডারও দেন। তাঁদের দোকানে মিষ্টির দাম শুরু ২৮০ টাকা থেকে। সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা দামের মিষ্টি পাওয়া যায়। দেড় টাকা কেজি দরে মিষ্টি বিক্রি করে দোকানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে জানান মধু ঘোষ।

স্থানীয়দের ভাষ্য, ব্রিটিশ আমলে বান্দুরা ছিল নদীবন্দর ও ধানের আড়তের জন্য খ্যাত। খ্রিষ্টানপল্লির কারণে ব্যবসাও জমজমাট ছিল। সেই সময় থেকে শান্তি মিষ্টান্ন ভান্ডার স্থানীয়দের আস্থা অর্জন করে।

রসগোল্লা, মালাইচপ, চমচম, দই, রসমালাইসহ নানা ধরনের মিষ্টি পাওয়া যায় এই দোকানে

সম্পর্কিত নিবন্ধ