এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতারা। সেটি না করা হলে তাঁকে জেলাটিতে অবাঞ্ছিত করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ ও মুজিববাদী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও ফজলুর রহমান বর্তমানে বিএনপির হয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। অথচ তাঁর ভাষা ও বক্তব্য আওয়ামী লীগের বয়ানকেই প্রতিফলিত করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘যে মুজিববাদকে আমরা উপড়ে ফেলেছি, সেই মুজিববাদের সৈনিক এখন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিচয়ে বিএনপিতে সক্রিয়। তিনি শহীদদের অবমাননা, আহতদের তিরস্কার এবং অভ্যুত্থানের নেতাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী বয়ান ছড়াচ্ছেন। অবিলম্বে এই মুখোশধারী মুজিববাদীকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করে দলকে দায়মুক্ত করা উচিত।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাবেক আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, ‘গত রোববার একটি অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলামসহ এনসিপির অন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন ফজলুর রহমান। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এ জন্য তাঁর প্রতি সম্মান দেখিয়ে বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য আমরা ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছি। ফজলুর রহমান নিজের বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে কিশোরগঞ্জের ছাত্র-জনতা তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করবে, কঠোর আন্দোলন হবে।’

এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইকরাম হোসেন বলেন, ‘বিপ্লবের এক বছরের মাথায় বিপ্লবীদের বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে যদি বিএনপি ক্ষমতায় যায়, তখন আমাদের পুলিশ হত্যা মামলাসহ আরও বিভিন্ন ধরনের আওয়ামী ন্যারেটিভ মামলায় ফাঁসানো হবে বলে ধারণা করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাবেক সদস্যসচিব ফয়সাল প্রিন্স, যুগ্ম আহ্বায়ক রাতুল নাহিদ ভূইয়া, আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন প্রমুখ।

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে ফজলুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফজল র রহম ন ক শ রগঞ জ ম জ বব দ এনস প ব এনপ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

রায় প্রত্যাখ্যান আওয়ামী লীগের

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “আজ যে রায় ঘোষণা করেছে এ রায় বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করে। বাংলার জনগণ এ রায় মানে না, মানবে না।”

আরো পড়ুন:

রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি

তিনি বলেন, “অবৈধ আদালত যে মামলার রায় দিয়েছে সেটি ১৪ অগাস্ট শুরু করে ১৭ নভেম্বর মামলা শেষ করেছে। ৮৪ জন সাক্ষীকে সামনে রেখে ৫৪ জনকে হাজির করে ২০ দিনে মামলা শেষ করেছে। এই দুই মাসের মধ্যে মাত্র ২০ দিন আদালত চলেছে।”

“এর প্রধান বিচারক গত এক মাস অনুপস্থিত ছিলেন। তারপরেও প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে মানুষের প্রিয় নেত্রীর বিরুদ্ধে যে রায় দিয়েছে।”

জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “অচিরেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব”।

এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ২ নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া মামলার অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়। দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় ঘোষণা হলো আজ।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ