ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ, ২১ ঘণ্টায়ও মেলেনি খোঁজ
Published: 20th, September 2025 GMT
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নুরুল ইসলাম গাজী (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে আন্ধারমানিক নদীর তীরে ভিড় করেছে তার স্বজনসহ স্থানীয় হাজারো মানুষ।
নিখোঁজ নুরুল ইসলাম পৌর শহরের আবহাওয়া সতর্কীকরণ অফিস সংলগ্ন ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি পথে পথে রূপার আংটি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
নিখোঁজ নুরুল ইসলামের কন্যা রুপা বলেন, “শুক্রবার দুপুরে আমার বাবা পৌর শহরের বাদুরতলী এলাকার একটি অটোতে বসা ছিল। এসময় কলাপাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মাদকসহ ওই অটো চালককে আটক করে। সেসময় তারা বাবাকে তল্লাশি চালিয়ে কোন মাদক না পাওয়ার পরও তাকে ধাওয়া করে। সেসময় আত্মরক্ষার জন্য তিনি আন্ধারমানিক নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন। গতকাল বিকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল অভিযান চালিয়েও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি।”
কলাপাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইনচার্জ শাহিনুল কবির বলেন, “সাংবাদিকদের মাধ্যমেই আমরা বিষয়টি জেনেছি। এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি।”
কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার আবুল হোসেন বলেন, “শুক্রবার বিকাল থেকেই আমাদের ডুবুরি নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত আন্ধারমানিক নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে আমাদের অভিযান চলবে।”
ঢাকা/ইমরান/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গোল্ডেন হারভেস্টের নিরীক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ
পুঁজিবাজারে খাদ্য ও আনুসঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি গোল্ডেন হারভেস্টের অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পরিদর্শন করে বেশ কিছু গুরুতর অনিয়ম এবং আর্থিক প্রতিবেদনে মিথ্যা ও জাল তথ্য উপস্থানের প্রমাণ পেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আর আর্থিক প্রতিবেদনে ভুল ও অসত্য তথ্য শনাক্ত না করে প্রকাশ করার সুযোগ করে দিয়েছে কোম্পানির নিরীক্ষক ম্যাবস অ্যান্ড জে পার্টনার্স চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস।
তাই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের আস্থাকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান ও এর অংশীদারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলকে (এফআরসি) অনুরোধ জানিয়েছে বিএসইসি।
আরো পড়ুন:
সাপ্তাহিক দাম কমার শীর্ষে প্রাইম ফাইন্যান্স কোম্পানি
ডিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে খান ব্রাদার্স
সম্প্রতি কমিশন থেকে এফআরসির চেয়ারম্যানের এ বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, কোম্পানির সম্পর্কিত এবং অ-সম্পর্কিত উভয় ধরনের পক্ষের সঙ্গে কিছু লেনদেন দেখিয়েছে, যেগুলো বাস্তবে ঘটেনি বা জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া কোম্পানির আর্থিক বিবরণীতে প্রকৃত সম্পদের চেয়ে বেশি বা বিভ্রান্তিকর সম্পদমূল্য দেখানো হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের ভুল ধারণা দিতে পারে। একই সঙ্গে এসব মারাত্মক ধরনের ভুল ও জালিয়াতি শনাক্ত করা ও আপত্তি তোলার দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও নিয়োগপ্রাপ্ত নিরীক্ষক তা শনাক্ত পারেননি বা ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করেছেন।
বিগত সরকারের আমলে আইন বা বিধি-বিধান লঙ্ঘন করা কোম্পানি ও তাদের নিয়োগপ্রাপ্ত নিরীক্ষদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন কোম্পানি ও নিরীক্ষদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএসইসি তার নিয়ন্ত্রক কার্যাবলী বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে গোল্ডেন হারভেস্ট এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানা ও অফিস প্রাঙ্গণ, হিসাবের বই এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য সশরীরে পরিদর্শন করেছে। এ পরিদর্শন কার্যক্রেমে কোম্পানির গুরুতর অনিয়ম এবং আর্থিক প্রতিবেদনে অসত্য তথ্য শনাক্ত করেছে, যা কোম্পানির প্রকাশিত আর্থিক বিবরণীর নির্ভরযোগ্যতায় বাস্তব ও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
যেসব তথ্য মিথ্যা বলে জানা গেছে সেগুলো হলো-কোম্পানির সাথে সম্পর্কিত এবং সম্পর্কহীন উভয় পক্ষের সাথে মিথ্যা এবং জাল লেনদেনের তথ্য দিয়েছে। এছাড়া আর্থিক বিবরণীতে বিভ্রান্তিকর সম্পদ অবস্থান প্রদর্শন করা হয়েছে। স্বতন্ত্রভাবে নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য আইনানুগ নিয়োজিত করা হলে আর্থিক প্রতিবেদনে উপস্থাপন করা গুরুত্বপূর্ণ অসত্য তথ্য সনাক্ত করা ও আপত্তি জানাতে নিরীক্ষক ব্যর্থ হয়েছেন। এই ধরনের অনিয়ম কেবল নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই ক্ষুন্ন করে না বরং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী ও স্টেকহোল্ডারদের আস্থাকেও বিরূপভাবে প্রভাবিত করে।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, এজন্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বিধিমালা, ২০২০ এর রুলস ১৪(৫) অনুসারে, গোল্ডেন হারভেস্ট অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের পরিদর্শন প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি এবং আর্থিক প্রতিবেদনের প্রাসঙ্গিক তথ্য সংযুক্ত করে পাঠানো হয়েছে।
অনুসন্ধানের গুরুত্ব বিবেচনা করে গোল্ডেন হারভেস্ট অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানা ও অফিস প্রাঙ্গণের পরিদর্শন প্রতিবেদন এবং ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনগুলোও পর্যালোচনা করুন। পর্যালোচনায় যদি সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান বা তাদের অংশীদারদের কাজে অবহেলা বা সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়, তবে প্রযোজ্য আইন ও মানদণ্ড অনুযায়ী প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রতিবেদনে জালিয়াতি বা বিভ্রান্তিকর তথ্য থাকলে তা বিনিয়োগকারীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে নিরীক্ষকরা যদি দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হন, তবে বাজারে আস্থার সংকট দেখা দিতে পারে।
বিএসইসি বলছে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। এ কারণে বিষয়টি এফআরসির দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/এসবি