কেন নতুন গাড়ি না কিনে পুরোনো গাড়িই চালান ওয়ারেন বাফেট
Published: 20th, September 2025 GMT
বিশ্বের বহু ধনী ব্যক্তি বিলাসবহুল গাড়িকে সাফল্য ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে দেখাতে পছন্দ করেন। তবে এর ব্যতিক্রম মার্কিন বিনিয়োগগুরু ওয়ারেন বাফেট। ৯৪ বছর বয়সী এই শতকোটিপতি এখনো চালাচ্ছেন তাঁর ২০১৪ সালে কেনা ক্যাডিলাক এক্সটিএস। গাড়িটির গায়ে শিলাবৃষ্টির দাগ থাকলেও বাফেট এতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা মনে করেন না। তাঁর যুক্তি, নতুন গাড়ি কেনার জন্য অর্ধেক দিন নষ্ট করার চেয়ে সেই সময় অন্য কাজে ব্যয় করা অনেক বেশি মূল্যবান।
গাড়ির ব্যাপারে বাফেটের দৃষ্টিভঙ্গি বরাবরই সরল। ২০০১ সালে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের শেয়ারহোল্ডারদের সভায় তিনি বলেছিলেন, গাড়ির ক্ষেত্রে তাঁর কাছে মূল বিষয় হলো নিরাপত্তা। বাহুল্য নয়। বর্তমানে যে গাড়িটি তিনি ব্যবহার করছেন, সেটি কিনেছিলেন তাঁর মেয়ে সুজি বাফেট। ওমাহার হিউবার ক্যাডিলাক শোরুমে সাধারণ ক্রেতা সেজে গাড়িটি কেনেন তিনি। পরে জেনারেল মোটরসের প্রধান নির্বাহী মেরি বারাকে লেখা এক চিঠিতে বাফেট প্রশংসা করেন শোরুমটির। সেখানকার কর্মীরা জানতেনও না যে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তির জন্য গাড়ি বিক্রি করছেন তাঁরা।
বাফেট বিশ্বাস করেন, অর্থের চেয়ে সময়ই বেশি মূল্যবান। একবার তিনি বলেছিলেন, ‘যদি ৩০ সেকেন্ডে চেক লিখে একই গাড়ির নতুন সংস্করণ পেতে পারতাম, তাহলে আজই কিনতাম। কিন্তু কোনো বাড়তি সুবিধা না থাকলে আমি সময় নষ্ট করতে চাই না।’ প্রতিবছর তিনি গড়ে সাড়ে তিন হাজার মাইল গাড়ি চালান। মেয়ে মাঝে মাঝে নতুন গাড়ি কেনার পরামর্শ দিলেও তিনি তাতে গুরুত্ব দেন না। তাঁর কাছে গাড়ি মানে উপযোগিতা, নিরাপত্তা ও কাজের বস্তু। মর্যাদার বাহন নয়।
কক্স অটোমোটিভের ২০২৩ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে একটি গাড়ি কিনতে গড়ে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা সময় লাগে। বাফেট মেয়ের মাধ্যমে গাড়ি কেনার কাজ সেরে নিয়েছিলেন। তাঁর বিশ্বাস, সেই সময় পড়াশোনা, বিনিয়োগ কিংবা চিন্তায় কাজে লাগানোই শ্রেয়। তিনি বিনিয়োগে যেমন দীর্ঘমেয়াদি কৌশল মেনে চলেন, তেমনি গাড়ির ক্ষেত্রেও তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। তাঁর মতে, একবার গাড়ি কিনে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা, অকারণে পরিবর্তন না করা। ২০০১ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আমার গাড়ি নিয়ে পুরোপুরি খুশি।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নোবিপ্রবির আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা স্থায়ী বহিষ্কার
আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়াকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অশ্লীল ও শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্য করায় স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরো পড়ুন:
জুলাই বিরোধিতা: ইবির ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’
আ.লীগে যোগ দেওয়া মুবিনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার
সোমবার (৩ নভেম্বর) নোবিপ্রবির রেজিষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) মো. তামজীদ হোসাইন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত বিদেশে গমন করেন, যা সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর ধারা ২(চ) অনুযায়ী ‘পলায়ন’ ।
এছাড়া একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশ করায় ‘নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ,২০০১’ এর ধারা ৪৭(৫) এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
নোটিশে আরো বলা হয়েছে, গত ২৮ মে আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলে সেটির জবাব যথাযথ হয়নি। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি আপনাকে পুনরায় ৭ জুলাই বিজ্ঞ আইনজীবীর মতামত এবং ৩১ জুলাই প্রেরিত নোটিশের জবাব না দেয়ায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর নোবিপ্রবি রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭ তম সভার আলোচ্যসূচি-১৮ এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০১ এর ৪৭(৮) ধারা অনুযায়ী এবং সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও (গ) অনুযায়ী নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সহকারী পরিচালক (সামরিক বরখাস্ত) পদ থেকে চূড়ান্ত বা স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো লেনদেন থাকলে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও বিধি অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতির বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে থাকেন এই কর্মকর্তা।
ঢাকা/শফিউল্লাহ/মেহেদী