গাজীপুরে নারীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় সাংবাদিকসহ ৪ জনকে মারধর
Published: 24th, September 2025 GMT
গাজীপুরের কাশিমপুরে এক নারীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় সাভারে কর্মরত বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিনিধি রুবেল আহমেদসহ (৩৫) চারজনকে মারধর করেছে বখাটেরা। আহত ব্যক্তিরা স্থানীয় কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহত অন্যরা হলেন সাইদুর রহমান (৩৫), ইয়াসিন আহমেদ (৩৬) ও শরীফুল ইসলাম (৩৫)। তাঁদের মধ্যে সাইদুরের মাথায় ৩টি সেলাই দিতে হয়েছে। অন্যদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে। রুবেল আহমেদের ডান হাত ভেঙে যাওয়ায় প্লাস্টার করা হয়েছে। তাঁরা সবাই কাশিমপুরে শেষ সীমানা–সংলগ্ন সাভার উপজেলার আশুলিয়ার কলতাসূতি গ্রামের বাসিন্দা।
আহত রুবেল আহমেদ (প্রিন্স) বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নবীনগর থেকে চন্দ্রা মহাসড়ক নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরির কাজ করছিলেন। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তাঁর পূর্বপরিচিত সাইদুর রহমান, ইয়াসিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলাম। কাজের একপর্যায়ে রুবেল দেখেন, কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালের পাশেই একটি মাঠে এক বখাটে ছেলে দুই-তিনজন মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছে। তিনি এগিয়ে গিয়ে ওই বখাটে ছেলের সঙ্গে কথা বলেন। এতে সে ক্ষিপ্ত হয় এবং ২৫ থেকে ৩০ জনকে ডেকে আনে। তারা রুবেলকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে রুবেল ও তাঁর সঙ্গে থাকা অন্য তিনজনকে এলোপাতাড়ি পেটায়। পরে আহত রুবেল, সাইদুর রহমান, ইয়াসিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলাম কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। তখন বখাটেরা আবার হাসপাতালে এসে তাঁদের টেনে বাইরে বের করার চেষ্টা করে। এ সময় হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা ফটক আটকে দেন।
খবর পেয়ে কাশিমপুর থানার পুলিশ ও আশুলিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হামলাকারীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন।
আহত রুবেলের অভিযোগ, কাশিমপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শরীফ ব্যাপারীর ভাতিজা রিমেল ও তাঁর অনুসারীরা এ হামলায় নেতৃত্ব দেন। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কোনো ভাষ্য পাওয়া যায়নি।
কাশীমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ব ল আহম দ ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
চালককে চেতনানাশক খাইয়ে অটোরিকশা ছিনতাই করেন তাঁরা
প্রথমে যাত্রী সেজে ভাড়া নিতেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা। পথে কৌশলে চালককে চেতনানাশক খাওয়াতেন। একপর্যায়ে চালক অচেতন হয়ে পড়লে অটোরিকশা ছিনতাই করে পালিয়ে যেতেন চক্রের সদস্যরা। দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি এভাবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করে আসছে। এই চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. করিম মিয়া (৪৩), মো. মান্নান খান (৬৬), মনসুর ওরফে মোশারফ (৪৩), মজিবর (৫৪), জসিম (৩৭), মনির (৪৫), মো. জামাল হোসেন (৬৬), তৌহিদুল ইসলাম রবিন (২৬) ও ইউনুস (৫০)। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ডিবির বরাত দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১ অক্টোবর ভোর সাড়ে চারটার দিকে মোহাম্মদপুরের আল্লাহ করিম বাসস্ট্যান্ডে চা খাচ্ছিলেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মো. শাহজালাল। এ সময় ৩০০ টাকায় কেরানীগঞ্জের আটিবাজারে যাওয়ার কথা বলে তাঁর অটোরিকশাটি ভাড়া করেন অপরিচিত এক যাত্রী। একপর্যায়ে ওই যাত্রী কৌশলে অটোরিকশাচালকের চায়ের মধ্যে চেতনানাশক মিশিয়ে দেন।
চা খাওয়া শেষে ওই যাত্রীকে নিয়ে আটিবাজারের উদ্দেশে রওনা করার কিছুক্ষণের মধ্যে প্রচণ্ড ঘুম অনুভব করেন অটোরিকশার চালক। তখন বছিলা মেট্রো হাউজিং গেটের কাছে গাড়ি থামাতেই চালক শাহজালাল অচেতন হয়ে পড়েন। চক্রটি তাঁকে রাস্তায় ফেলে অটোরিকশা, তাঁর মুঠোফোন ও মানিব্যাগে থাকা ৩ হাজার ৫৫০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পরে চক্রটি চালকের মুঠোফোন থেকে অটোরিকশার মালিক জয়কে ফোনে ৬০ হাজার টাকা দাবি করে। তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে জয় ৬০ হাজার টাকা পাঠান। এরপর একই তারিখে রাত ১০টার দিকে চক্রটি জয়কে আবার ফোন দিয়ে অটোরিকশাটি রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের সামনে রাস্তার ওপর রাখা আছে বলে জানায়। পরে জয় গিয়ে সেখান থেকে অটোরিকশাটি নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় ৬ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় নিয়মিত মামলা হয়।
ডিবির বরাত দিয়ে আরও বলা হয়, ডিবি তেজগাঁও বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে করিম মিয়া, মান্নান খান, মনসুর ওরফে মোশারফ, মজিবর, জসিম ও মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী একই দিন বেলা পৌনে একটার দিকে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূল হোতা মো. জামাল হোসেন, তৌহিদুল ইসলাম ও ইউনুসকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ১ হাজার ৯০০ পিস চেতনানাশক ট্যাবলেট ও এক লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডিবি সূত্র আরও জানায়, এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীবেশে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে চালকদের চেতনানাশক ট্যাবলেট খাইয়ে অটোরিকশা ছিনতাই করে আসছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।