চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনিয়ম পেয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ করলেন স্থানীয়রা
Published: 24th, September 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার একটি রাস্তা সংস্কার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা। গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের চকঝগড়ু এলাকার ওই সড়কটির কাজ বন্ধ আছে। এলাবাসীর অভিযোগ, যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে পিচ ঢালাই দিয়েছেন ঠিকাদার।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী ঘটনাস্থলে গিয়ে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছেন।
আরো পড়ুন:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু
কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কে বন্ধ হলো মরণফাঁদ খিলা ইউটার্ন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চকঝগড়ু এলাকা থেকে শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায় ছিল। প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়। পাঁচ মাস আগে শুরু হয় সড়ক সংস্কারের কাজ। পুরাতন সড়কটি ভেঙ্গে নতুন করে ইটের খোয়া ফেলে বুলডোজার দিয়ে বসিয়ে সংস্কার করা হচ্ছিল। আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ হওয়ায় ঠিকাদার প্রায় ২ থেকে আড়াই মাস কাজ বন্ধ রাখেন। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে ১৫-২০ দিন আগে আবারও ঠিকাদার কাজ শুরু করন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃষ্টির কারণে যে সময়টা কাজ বন্ধ রেখেছিলেন ঠিকাদার, ওই সময়ের মধ্যে রাস্তায় ব্যাপক ধুলোবালি ও ময়লা অবর্জনা জমা হয়। এসব আবর্জনা পরিষ্কার না করেই গত সোমবার সকালে ঠিকাদারের নিয়োগ করা শ্রমিকরা পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেন। শুরুর দিকে স্থানীয়রা শ্রমিকদের এভাবে কাজ করতে নিষেধ করলেও তারা কর্ণপাত করেনি। এরফলে স্থানীয়রা একসঙ্গে জড়ো হয়ে রাস্তা সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। এরপরই বন্ধ হয়ে যায় সড়ক সংস্কারের কাজ। গত দুইদিন ধরে বন্ধ রয়েছে কাজ।
মাছ ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ বলেন, “এটি দুই উপজেলার সংযোগ সড়ক। এই রাস্তা দিয়ে কৃষকরা তাদের ফসল বাড়িতে নিয়ে যান। এরপরেও জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি সংস্কার কাজে অনিয়ম রয়েছে। ঠিকমতো পরিষ্কার না করেই ধুলাবালুর উপরে পিচ ঢালাই দেওয়া হয়েছে। যে কারণে হাত দিলেই পিচ মিশ্রিত পাথর (পিচ ঢালাই) উঠে আসছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা মো.
চকঝগড়ু এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জোহরুল ইসলাম বলেন, “অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা রাস্তা সংস্কার কাজ আটকে দিয়েছেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি, এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী আছেন। আমিসহ ওই প্রকৌশলী রাস্তা পরিষ্কার-পরিছন্নতার ব্যাপারে একটি গ্যাপ দেখতে পেয়েছি। এরপর থেকেই কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রকৌশলীর মুখে শুনেছি, রাস্তাটি সংস্কারে ৭০ লাখ টাকা আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া টনিকের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
রাস্তার তদারতির দায়িত্বে থাকা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু সায়েম ও উপজেলা প্রকৌশলী আজহারুল ইসলামকে ফোন করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোরার হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, “স্থানীয়রা অনিয়মের অভিযোগ তুললে রাস্তাটি সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে রাস্তাটি আবারো সংস্কার করা হবে।”
ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন অভ য গ প ইনব বগঞ জ র ক জ বন ধ পর ষ ক র উপজ ল র বন ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
যে বিষয়গুলো আলোচনাতেই আসে নাই, সেগুলোও ঢুকিয়েছে ঐকমত্য কমিশন: সেলিমা রহমান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, ‘আমরা যে সনদটা পাস করেছি ও সিগনেচার করেছি, সেইটা কিন্তু ‘নোট অব ডিসেন্ট’-সহ সিগনেচার করেছি। অথচ ঐকমত্য (কমিশন) সম্পূর্ণ যে বিষয়গুলো আলোচনাতেই আসে নাই, সেগুলোও ঢুকিয়েছে।’
আজ শনিবার দুপুরে সিলেট নগরের দরগাহ গেট এলাকার একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বিএনপির এই নেত্রী। এর আগে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আয়োজনে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন অংশীজনের সমন্বয়ে সমাজে নারী ও শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপির নির্বাচনী অগ্রাধিকার বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বেগম সেলিমা রহমান সভাপতিত্ব করেন।
নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সেলিমা বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমরা এখনো আশঙ্কা প্রকাশ করিনি। আমরা চাই নির্বাচন, আমরা নির্বাচনমুখী দল। আমাদের আশঙ্কা এখনো আসেনি, তবে আমরা সরকারকে মানে এখন...বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেগুলা পাবলিককে বলছি। তবে কিছুটা তো ঝামেলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বিএনপির এই নেত্রী বলেন, ‘আমাদের মনে হয় নির্বাচন হবে, হয়ে যাবে। এর আগে বেশ কিছু ঝামেলা হয়তো হতে পারে। ঝামেলা মানে এই সমস্ত ছোটখাটো ঝামেলা, যেগুলা নিয়ে আজকে সংস্কারের কথা আসছে কিংবা গণভোটের কথা আসছে। যেটা আমরা প্রথমেই বলে দিয়েছি সংসদ নির্বাচনের সময় গণভোট একই সঙ্গে করব।’
ঐকমত্য কমিশনের বিষয়ে সেলিমা রহমান ভাষ্য, ‘বলতে গেলে একটা বছর আমরা ঐকমত্যের সঙ্গে বসছি। ঐকমত্যে যাঁরা ছিলেন, যাঁরা হেড, তাঁরা হয়তো অনেক গুণী মানুষ বা বিশেষজ্ঞ হতে পারেন। কিন্তু তাঁরা কিন্তু এ দেশের কেউ নন। তাঁরা এই দেশের সংবিধান সম্বন্ধে অতটা ওইভাবে কথা বলতে পারেন না।’
এর আগে আলোচনা সভায় নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্যসচিব নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর, দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমেদ ও মিফতাহ সিদ্দিকী সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীসহ অন্য নেতা-কর্মীরা।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ের নারীরা সহজ–সরল প্রকৃতির। একটি রাজনৈতিক দল ধর্মকে ব্যবহার করছে। ধর্মকে ব্যবহার করে তারা প্রান্তিক এলাকার নারীদের জান্নাতের টিকিট দেওয়া ও হাতে কোরআন শরিফ দিয়ে শপথ করানোর পর নানা রকম প্রচারণার মাধ্যমে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। ধর্ম নিয়ে কোনো রাজনীতি হয় না, সেটি আমাদের বোঝাতে হবে।
সভায় সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলার নারী জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। এ সময় তাঁরা বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। পাশাপাশি ঘরে ঘরে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার প্রচারণা চলানোর কথাও জানান।