কুখ্যাত যৌন অপরাধী এপস্টাইনের নথিতে নাম এলো এলন মাস্কেরও
Published: 27th, September 2025 GMT
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের তদারকি কমিটির ডেমোক্রেট সদস্যরা ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত উচ্চবিত্ত সমাজের যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টাইনের দৈনিক সময়সূচি প্রকাশ করেছেন। সেখানে দেখকা গেছে, এপস্টাইন রিপাবলিকান পার্টির দাতা এলন মাস্ক এবং পিটার থিয়েলের পাশাপাশি রক্ষণশীল মিডিয়া ভাষ্যকার স্টিভ ব্যাননের সাথে দেখা করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
গুরুত্বপূর্ণ তদন্তকারী হাউস ওভারসাইট কমিটির ডেমোক্রেটরা শুক্রবার জানিয়েছেন, আগস্টে দাখিল করা কংগ্রেসনাল সমনের মাধ্যমে ৮ হাজার ৫৪৪টি নথি - ফোন বার্তা লগ, ফ্লাইট লগ, লেনদেনের রেকর্ড এবং দৈনিক সময়সূচি উদ্ধার করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তির সাথে থাকা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দৈনিক সময়সূচিতে ‘জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে এলন মাস্ক, পিটার থিয়েল, স্টিভ ব্যানন এবং প্রিন্স অ্যান্ড্রুর মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সম্ভাব্য যোগাযোগের উল্লেখ রয়েছে। এটা প্রতিটি আমেরিকানের কাছে স্পষ্ট হওয়া উচিত যে জেফরি এপস্টাইন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী এবং ধনী ব্যক্তিদের কারো কারো বন্ধু ছিলেন।’
ওভারসাইট কমিটির মুখপাত্র সারা গুয়েরেরো বিবৃতিতে বলেছেন, “প্রতিটি নতুন নথি তৈরি হওয়ায় নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, কারণ আমরা বেঁচে যাওয়া এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি।”
বিবৃতি অনুসারে, নথিগুলোতে দেখা গেছে বিলিয়নেয়ার ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট থিয়েল এবং মিডিয়া ভাষ্যকার ব্যানন ‘এপস্টাইনের সাথে বৈঠকের সময়সূচি করেছিলেন।’ এপস্টাইনের কুখ্যাত দ্বীপ লিটল সেন্ট জেমস-এ টেক বিলিয়নেয়ার মাস্কের একটি ‘অসমাপ্ত ভ্রমণের’ কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এই দ্বীপটিতে অনেক নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন।
নথিগুলোতে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স অ্যান্ড্রুর নামও উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি ২০০০ সালে নিউ ইয়র্ক থেকে ফ্লোরিডার পাম বিচগামী একটি ফ্লাইটে এপস্টাইনের ব্যক্তিগত বিমানের যাত্রী হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, এপস্টাইন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত যৌন অপরাধী। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তিনি জেলে আত্মঘাতী হন ২০১৯ সালে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ ম্যাচকে মনে করানোর দিনে বুমরার ৫ উইকেট
২০১৯ সালের নভেম্বরে ইডেন গার্ডেনে দিবারাত্রির টেস্ট খেলেছিল ভারত–বাংলাদেশ। সেটিই ছিল ভারতের প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট, বাংলাদেশেরও। এরপর গত ছয় বছরে কলকাতার বিখ্যাত মাঠটিতে আর টেস্ট হয়নি। ইডেনের টেস্ট–খরা কেটেছে আজ ভারত–দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে। অর্ধযুগ বিরতির কারণেই কিনা কে জানে, প্রথম দিনে খেলা দেখতে মাঠে গিয়েছেন ৩৬ হাজার ৫১৩ দর্শক।
দিনটা তাঁদের মন্দ যায়নি। টসে জেতা দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫৯ রানে অলআউট করেছে ভারত। এরপর দিনের শেষ দিকে ভারত ২০ ওভার ব্যাট করে শুধু যশস্বী জয়সোয়ালের উইকেটটাই হারিয়েছে। দিন শেষে দর্শকেরা সঙ্গে নিয়ে গেছেন যশপ্রীত বুমরার ৫ উইকেট দেখার আনন্দ।
দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা প্রোটিয়াদের শুরুটা ভালোই হয়েছিল। প্রথম ১০ ওভারেই ৫৭ রান তুলে ফেলেছিলেন দুই ওপেনার এইডেন মার্করাম ও রায়ান রিকেলটন। ১১তম ওভারে রিকেলটনকে বোল্ড করে ভারতকে উদ্যাপনের প্রথম উপলক্ষ এনে দেন বুমরা। ২২ বলে ২৩ রান করা রিকেলটন বুমরার ঘণ্টায় ১৪০.৭ কিলোমিটার গতির ডেলিভারি ঠিকঠাক বুঝেই উঠতে পারেননি।
প্রথম স্পেলে টানা ৭ ওভার করা বুমরা শেষটিতে তুলে নেন মার্করামকেও। ১ ছক্কা ৫ চারে ৪৮ বলে ৩১ রান করা মার্করাম ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে ঋষভ পন্তের হাতে। ৫ রানের মধ্যে বুমরা দুই ওপেনারকে তুলে নেওয়ার পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই চলে যায় ভারতের হাতে।
কুলদীপ যাদব এসে টেম্বা বাভুমাকে ফেরানোর পর টনি ডি জর্জি ও উইয়ান মুল্ডার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁদের ৪৩ রানের চতুর্থ উইকেট জুটিও ভেঙে দেন কুলদীপ। এরপর আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি।
১১৪ থেকে ১৫৯—৪৫ রানের মধ্যে শেষ ৭ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্যে শেষ উইকেট হিসেবে কেশব মহারাজকে এলবিডব্লু করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন বুমরা। টেস্টে এটি তাঁর ১৬তম বার ইনিংসে ৫ উইকেট। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ইশান্ত শর্মার পর ভারতের মাটিতে টেস্টের প্রথম দিনে কোনো পেসার ৫ উইকেট পেলেন এই প্রথম। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই ম্যাচটি হয়েছিল গোলাপি বলে।
লাল বল বিবেচনায় নিলে ভারতে টেস্টের প্রথম দিনে ফাস্ট বোলারদের ৫ উইকেট নেওয়ার সর্বশেষ ঘটনা ২০০৮ সালে আহমেদাবাদে দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইনের।
বুমরার ৫ উইকেট নেওয়ার দিনে বল হাতে ভালো করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসাররাও। কাগিসো রাবাদা চোটের কারণে ছিটকে পড়লেও মার্কো ইয়ানসেন, করবিন বশ ও মুল্ডাররা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন। ২০ ওভার ব্যাট করে ভারত তুলতে পেরেছে মাত্র ৩৭ রান। এর মধ্যে ইয়ানসেনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন জয়সোয়াল। ৫৯ বলে ১৩ রান করা লোকেশ রাহুলের সঙ্গে ৩৮ বলে ৬ রান নিয়ে অপরাজিত নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা ওয়াশিংটন সুন্দর।
সব মিলিয়ে ইডেনে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে ৭৫ ওভারে দুই দল মিলিয়ে উঠেছে ১৯৬ রান, উইকেট পড়েছে ১১টি। ইডেনে টেস্টের প্রথম দিনে এর চেয়ে বেশি উইকেট পড়েছিল শুধু ২০১৯ সালের বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচেই (১৩টি)।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৫৫ ওভারে ১৫৯ (মার্করাম ৩১, মুল্ডার ২৪, ডি জর্জি ২৪, রিকেলটন ২৩; বুমরা ৫/২৭, কুলদীপ ২/৩৬)।
ভারত প্রথম ইনিংস: ২০ ওভারে ৩৭/১ (রাহুল ১৩*, জয়সোয়াল ১২; ইয়ানসেন ১/১১)।