আড়াইহাজার উপজেলায় চাঁদাবাজির অভিযোগে সোহেল ওরফ ফেন্সি সোহেল (৩৮) নামের এক ইউপি সদস্যকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া স্ট্যান্ড বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  নিহত সোহেল মেম্বার উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।

সে আড়াইহাজারের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, মাদক, অপহরণ, চুরি ও হত্যা চেষ্টাসহ অন্তত ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে। গত ১৩ জুন কুমিল্লার দাউদকান্দি ব্রিজ টোল প্লাজা এলাকায় অভিযান চালিয়ে র‌্যাব-১১ তাকে সহযোগী ফজলুল হক ফজুসহ গ্রেপ্তার করেছিল।

জানা গেছে, সকালে সোহেল মেম্বার তার তিনজন সহযোগী নিয়ে বালিয়াপাড়া এলাকার মৃত হাফেজ সাহেবের ছেলে শরিফের বাড়িতে চাঁদা আদায়ের জন্য যায়। এসময় শরিফের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সোহেল মেম্বারের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শরিফের পরিবার স্থানীয়দের সহায়তায় সোহেল মেম্বারকে আটক করে এবং খবর দেয় গ্রামবাসীকে।

খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে সোহেল মেম্বারকে হাত-পা বেঁধে মারধর শুরু করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা তিন সহযোগী পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে সোহেল মেম্বার ইউপি চেয়ারম্যান লাক মিয়ার ছত্রছায়ায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে  সোহেল আত্মগোপনে যায়।  সম্প্রতি সে এলাকায় ফিরে এসে আবারো চাঁদাবাজি শুরু করে।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসিরউদ্দিন বলেন, সোহেলের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা ছিল। কয়েকদিন আগেও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।

নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেলে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

রায় প্রত্যাখ্যান আওয়ামী লীগের

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “আজ যে রায় ঘোষণা করেছে এ রায় বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করে। বাংলার জনগণ এ রায় মানে না, মানবে না।”

আরো পড়ুন:

রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি

তিনি বলেন, “অবৈধ আদালত যে মামলার রায় দিয়েছে সেটি ১৪ অগাস্ট শুরু করে ১৭ নভেম্বর মামলা শেষ করেছে। ৮৪ জন সাক্ষীকে সামনে রেখে ৫৪ জনকে হাজির করে ২০ দিনে মামলা শেষ করেছে। এই দুই মাসের মধ্যে মাত্র ২০ দিন আদালত চলেছে।”

“এর প্রধান বিচারক গত এক মাস অনুপস্থিত ছিলেন। তারপরেও প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে মানুষের প্রিয় নেত্রীর বিরুদ্ধে যে রায় দিয়েছে।”

জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “অচিরেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব”।

এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ২ নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া মামলার অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়। দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় ঘোষণা হলো আজ।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ