ফতুল্লায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন হত্যা মামলার আসামী স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রশিদের পর এবার ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আখিল উদ্দিন শিকদারকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আখিল উদ্দিন গ্রেপ্তার হলেও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় আরেক মেম্বার মহিউদ্দিন ভূইয়া। তবে মহিউদ্দিনও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি। 

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা এলাকা হতে আখিল উদ্দিন মেম্বারকে গ্রেপ্তার করে। 

গ্রেপ্তারকৃত আখিল উদ্দিন শিকদার ফতুল্লার মধ্যনগর এলাকার মৃত মুনসুর আলী সিকদারের ছেলে এবং বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার। 

এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী পালিয়ে যাওয়ার পর পরিষদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। পরে একজনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য মেম্বারদের মধ্যে মল্লযুদ্ধ শুরু হয়।

কিন্তু ঐসময় আখিল উদ্দিন শিকদার প্যানেল চেয়ারম্যান-১ থাকা সত্বেও রশিদ মেম্বার নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে দাবি করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। আখিল উদ্দিন মেম্বারকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে বাধা হয়ে দাড়ায় বিএনপির একটি পক্ষ।

পরে রশিদ মেম্বার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে কোটি টাকার মিশনে নামে। রশিদের টাকায় পূর্বের প্যানেল ভেঙে রশিদকে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ করে নতুন করে প্যানেল বানানো হয়। তার পর রশিদ মেম্বারকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।

রশিদ মেম্বারও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি। চেয়ারম্যান হওয়ার আগে রশিদ গ্রেপ্তার হয়েছিল এবং চেয়ারম্যান হওয়ার পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়। রশিদ মেম্বারের পর এবার আখিল উদ্দিন মেম্বার গ্রেপ্তার।

ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী আখিল উদ্দিন শিকদারকে থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মোট কয়টি মামলা রয়েছে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ

এছাড়াও পড়ুন:

রায় প্রত্যাখ্যান আওয়ামী লীগের

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “আজ যে রায় ঘোষণা করেছে এ রায় বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করে। বাংলার জনগণ এ রায় মানে না, মানবে না।”

আরো পড়ুন:

রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি

তিনি বলেন, “অবৈধ আদালত যে মামলার রায় দিয়েছে সেটি ১৪ অগাস্ট শুরু করে ১৭ নভেম্বর মামলা শেষ করেছে। ৮৪ জন সাক্ষীকে সামনে রেখে ৫৪ জনকে হাজির করে ২০ দিনে মামলা শেষ করেছে। এই দুই মাসের মধ্যে মাত্র ২০ দিন আদালত চলেছে।”

“এর প্রধান বিচারক গত এক মাস অনুপস্থিত ছিলেন। তারপরেও প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে মানুষের প্রিয় নেত্রীর বিরুদ্ধে যে রায় দিয়েছে।”

জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “অচিরেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব”।

এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ২ নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া মামলার অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়। দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় ঘোষণা হলো আজ।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ