সারজিসকে যুবদল নেতা বললেন, ‘আপনার আশপাশের আওয়ামী লীগের লোকদের সরান’
Published: 30th, September 2025 GMT
পঞ্চগড়ে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে পাশ থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন সরাতে বলেন এক যুবদল নেতা। তাঁর মাধ্যমে যেন আওয়ামী লীগের কোনো লোকের পুনর্বাসন না হয়, সেই দাবিও তোলেন তিনি। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর বাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ওই যুবদল নেতার নাম হাসিনুর রহমান। তিনি ভজনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে সারজিস আলমকে লক্ষ্য করে হাসিনুর রহমান বলছেন, ‘আপনার আশপাশের আওয়ামী লীগের লোকদের সরান। এই যে দেখেন, আমি দেখায় দিচ্ছি। আসেন, আপনি এগুলোকে সরান, এক্ষুনি সরান।’ জবাবে সারজিস আলম বলেন, ‘আমার জানামতে নাই।’ তখন হাসিনুর বলেন, ‘আছে, আমি দেখায় দিচ্ছি আপনাকে। আপনি তো এখন আমাদেরই লোক। আপনি নওশাদ ভাইয়ের (বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সম্পাদক নওশাদ জমির) এলাকায় আসছেন, আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি আওয়ামী লীগের লোকগুলোকে সরান।’
কিছুক্ষণ পর সারজিস আলম তাঁকে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলার প্রস্তাব দেন। এ সময় হাসিনুর তাঁর কাঁধে হাত রেখে এগোতে থাকেন, আর সারজিস আলমও তাঁর কাঁধে হাত রাখেন। এ সময় হাসিনুর রহমান বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আপনার ভূমিকা আছে। আমরা চাই, আপনি বড় নেতা হবেন। কিন্তু আপনার ডানে-বাঁয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন ঘুরছে।’ উত্তরে সারজিস আলম বলেন, ‘ভাই, আপনি এটা ভালো করে জানেন, যেদিন ওরা ফিরে এসে আপনাকে ধরবে, ওই দিন আমারও গলা কাটবে। এটা তো মানেন।’ পরে হাসিনুর বলেন, ‘ওরা যেন কোনোমতেই আপনার ছত্রচ্ছায়ায় পুনর্বাসন হতে না পারে।’ জবাবে সারজিস আলম বলেন, ‘এটা আমরা একসাথে করব।’ পরে তিনি হাসিনুরের সঙ্গে হাত মেলান এবং বলেন, ‘চলেন, আমরা সবাই একসঙ্গে চা খাব।’
এ বিষয়ে সারজিস আলম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এইটা একদমই তার প্ল্যান। ইনটেনশনালি এ রকম করেছে। সে ওখানকার বিএনপির একটা ছেলে। প্রথমে এসেই ওই কথা বলছে। আরেকজনকে ভিডিও করতে বলছে। মানে একটা লোক ঠিক করছে ভিডিও করতে। আমি বলছি, কে দেখায় দেন। বলে, আছে একজন। ওই যে ছিল, বাইক নিয়ে চলে গেল। আমরা ভজনপুরে গেছি ব্যারিস্টার সাহেবের (বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার) বাসার পাশে। সেখানে তো তাদের কিছু লোকজন আছে, ওরা হয়তো মনে করে যে কাউকে বিব্রত করাটা হইলো পলিটিকস। পরে আবার আমার সঙ্গে দাঁড়িয়ে চা-নাশতা খেয়েছে। সেখানে কিসের আওয়ামী লীগের লোক থাকবে? আমি আমার কমিটির লোকজন নিয়ে সেখানে গেছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কম ট র ল কজন আপন র আওয় ম য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
রায় প্রত্যাখ্যান আওয়ামী লীগের
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “আজ যে রায় ঘোষণা করেছে এ রায় বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করে। বাংলার জনগণ এ রায় মানে না, মানবে না।”
আরো পড়ুন:
রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি
তিনি বলেন, “অবৈধ আদালত যে মামলার রায় দিয়েছে সেটি ১৪ অগাস্ট শুরু করে ১৭ নভেম্বর মামলা শেষ করেছে। ৮৪ জন সাক্ষীকে সামনে রেখে ৫৪ জনকে হাজির করে ২০ দিনে মামলা শেষ করেছে। এই দুই মাসের মধ্যে মাত্র ২০ দিন আদালত চলেছে।”
“এর প্রধান বিচারক গত এক মাস অনুপস্থিত ছিলেন। তারপরেও প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে মানুষের প্রিয় নেত্রীর বিরুদ্ধে যে রায় দিয়েছে।”
জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “অচিরেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব”।
এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ২ নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া মামলার অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়। দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।
বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় ঘোষণা হলো আজ।
ঢাকা/এসবি