বিশ্বের তরুণ শতকোটিপতিদের নিয়ে মানুষের আগ্রহ থাকে। দেখে নেওয়া যাক ভারতের সর্বকনিষ্ঠ শতকোটিপতি কে। এনডিটিভির সংবাদে বলা হয়েছে, ভারতের অরবিন্দ শ্রীনিবাস দেশটির সর্বকনিষ্ঠ শতকোটিপতি হয়েছেন।

পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী অরবিন্দ শ্রীনিবাস এম৩এম হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট ২০২৫-এ সবচেয়ে ধনী তরুণ ভারতীয় হিসেবে স্থান পেয়েছেন। তালিকা অনুসারে, অরবিন্দর মোট সম্পদের পরিমাণ ২১ হাজার ১৯০ কোটি রুপি বা ২ হাজার ৩৯০ কোটি ডলার। ডেনিস ইয়্যারাটস ও অ্যান্ডি কনউইনস্কির সঙ্গে মিলে শ্রীনিবাস পারপ্লেক্সিটি এআই প্রতিষ্ঠা করেন।

সারা বিশ্বে এখন এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জয়জয়কার। অরবিন্দের উত্থানও সেই এআইয়ের হাত ধরে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি পারপ্লেক্সিটি এআই বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল গুগল, জেমিনি ও ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। সম্প্রতি অরবিন্দর কোম্পানি গুগলের ক্রোম ব্রাউজার কেনার প্রস্তাব দিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তোলে। তিনি গুগল ক্রোম ব্রাউজারটি কেনার জন্য ৩৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৪৫০ কোটি ডলার দাম প্রস্তাব করেছিলেন। ‘চেন্নাই বয়’ হিসেবে পরিচিত অরবিন্দ প্রতিশ্রুতিশীল ব্যক্তি।

শ্রীনিবাসের জন্ম ১৯৯৪ সালের ৭ জুন, ভারতের তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে। ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহ গড়ে ওঠে তাঁর। আইআইটি মাদ্রাজে পড়াশোনার সময়ই তিনি রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং ও অ্যাডভান্সড রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং কোর্স পড়াতেন। পরবর্তী সময় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলেতে কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচডি করেন তিনি। তাঁর গবেষণার ক্ষেত্র ছিল কনট্রাস্টিভ লার্নিং ফর কম্পিউটার ভিশন, রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং, ট্রান্সফরমারভিত্তিক মডেল ব্যবহার করে ছবি তৈরি, চিহ্নিতকরণ ও ভিডিও তৈরি।

লিঙ্কডইন প্রোফাইল অনুযায়ী, ২০২০ ও ২০২১ সালের বসন্ত সেমিস্টারে তিনি ডিপ আনসুপারভাইজড লার্নিং কোর্সও পড়িয়েছেন।

শ্রীনিবাস বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কিছু প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তিনি প্রথমে ওপেনএআইতে রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং নিয়ে কাজ করেন। এরপর লন্ডনে ডিপমাইন্ডে যোগ দেন, যেখানে তাঁর গবেষণার কেন্দ্র ছিল কনট্রাস্টিভ লার্নিং। এরপর তিনি গুগলে কাজ করেন এবং হ্যালোনেট ও রেজনেট-আরএসসহ বিভিন্ন ভিশন মডেল তৈরি করেন। পরে আবার ওপেনএআইয়ে রিসার্চ সায়েন্টিস্ট হিসেবে ফিরে আসেন এবং টেক্সট-টু-ইমেজ জেনারেশন মডেল ডাল-ই-২-এর উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন।

কী করে পারপ্লেক্সিটি এআই

পারপ্লেক্সিটি এআই চ্যাটজিপিটির মতোই নতুন প্রজন্মের এআইভিত্তিক চ্যাটবট, যেটি গুগলের মতো কেবল লিঙ্কের তালিকা দেয় না, বরং ব্যবহারকারীর প্রশ্ন বুঝে উত্তর তৈরি করে। কোনো বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে এটি ইন্টারনেটের নানা নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য খুঁজে আনে, সেগুলো মিলিয়ে সহজ ভাষায় সারসংক্ষেপ তৈরি করে দেয়। শুধু তা–ই নয়, সে কোথা থেকে উত্তরটি নিয়েছে, তা–ও উল্লেখ করে। ফলে ব্যবহারকারী চাইলে সঙ্গে সঙ্গে উৎসে ফিরে গিয়ে তথ্য যাচাই করতে পারেন।

প্রযুক্তিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ট্রেক ক্রাঞ্চের তথ্যানুসারে, পারপ্লেক্সিটি এআইকে অনেকেই ‘এআই-চালিত সার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট’ হিসেবেও পরিচিত। গবেষক, সাংবাদিক বা শিক্ষার্থীরা দ্রুত তথ্য জোগাড় করতে, জটিল প্রতিবেদন বা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধের সারমর্ম বের করতে কিংবা তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে এটি ব্যবহার করেন।

গুগলের সার্চে যেখানে ব্যবহারকারীকে নিজে লিঙ্ক খুলে পড়তে হয়, পারপ্লেক্সিটি সেখানে উত্তর সাজিয়ে সামনে তুলে ধরে, তা–ও আবার কথোপকথনের ভঙ্গিতে। একদিকে সার্চ ইঞ্জিনের কার্যকারিতা, অন্যদিকে চ্যাটবটের স্বাভাবিক আলাপচারিতা—এই দুই অভিজ্ঞতা একসঙ্গে দিচ্ছে পারপ্লেক্সিটি এআই।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অরব ন দ ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের সবচেয়ে কমবয়সী ধনকুবের, ৩১ বছর বয়সেই মালিক ২১ হাজার কোটি রুপির

অরবিন্দ শ্রীনিবাস। বয়স ৩১ বছর। চেন্নাইয়ে জন্ম নেওয়া এ তরুণ পেশায় এআই উদ্যোক্তা। এম৩এম হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট ২০২৫ অনুযায়ী, অরবিন্দ ভারতের সবচেয়ে কম বয়সী ধনকুবের। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ২১ হাজার ১৯০ কোটি রুপি।

এআই স্টার্টআপ ‘পারপ্লেক্সিটির’ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অরবিন্দ। তিনি এর সহপ্রতিষ্ঠাতাও। প্রযুক্তি খাতে অরবিন্দ ও তাঁর প্রতিষ্ঠান বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলেছে। বিশেষ করে সৃষ্টিশীল এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায়।

অরবিন্দের জন্ম ১৯৯৪ সালের ৭ জুন, তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে। ছোট থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি তাঁর বেশ আগ্রহ ছিল। আইআইটি মাদ্রাজে পড়াশোনা করেছেন। তখনই তিনি ‘রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং’ ও ‘অ্যাডভান্সড রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিংয়ের’ ওপর কোর্স পড়িয়েছেন।

পরে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান অরবিন্দ। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলে থেকে ২০২১ সালে তিনি কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। পাশাপাশি তিনি ২০২০–২১ সালের স্প্রিং সেমিস্টারে ‘ডিপ আনসুপারভাইজড লার্নিং’ পড়ান। নিজের লিংকডইন প্রোফাইলে এটা উল্লেখ করেছেন অরবিন্দ।

এআই স্টার্টআপ ‘পারপ্লেক্সিটির’ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অরবিন্দ। তিনি এর সহপ্রতিষ্ঠাতাও। প্রযুক্তি খাতে অরবিন্দ ও তাঁর প্রতিষ্ঠান বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলেছে। বিশেষ করে সৃষ্টিশীল এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায়।

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোয় কাজের অভিজ্ঞতা নিজের ঝুলিতে ভরেছেন অরবিন্দ। কাজ করেছেন প্রযুক্তি জায়ান্ট ওপেনএআইয়ে। পরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ডিপমাইন্ডে যোগ দেন। গুগলেও কাজের দারুণ অভিজ্ঞতা রয়েছে এ তরুণের। পরে ‘রিসার্চ সায়েন্টিস্ট’ হিসেবে আবার ওপেনএআইয়ে ফিরেন অরবিন্দ। যুক্ত হন গবেষণার কাজে।

সময়টা ২০০২ সালের আগস্ট মাস। অরবিন্দের বয়স তখন ২৮ বছর। ডেনিস ইয়ারাতাস ও অ্যান্ডি কোনউইনস্কি নামে দুই ব্যক্তির সঙ্গে অরবিন্দ গড়ে তোলেন নিজেদের উদ্যোগ ‘পারপ্লেক্সিটি’। তাঁদের এ উদ্যোগ এআইচালিত চ্যাটভিত্তিক সার্চ ইঞ্জিন জিপিটি-৩–এর মতো মডেল ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের প্রশ্নের দ্রুত, নির্ভুল আর বিশ্বাসযোগ্য উত্তর দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়।

আরও পড়ুনইলন মাস্ক এখন ৫০০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক, ইতিহাসে কি কারও এত সম্পদ ছিল১ ঘণ্টা আগে

২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে অরবিন্দ ‘ইলেভেনল্যাবস’ ও ‘শুনো’-এর মতো উদীয়মান এআই স্টার্টআপের বড় বিনিয়োগকারী (অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর) হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। নিজস্ব উদ্যোগের পাশাপাশি সফল বিনিয়োগ তাঁকে ভারতের সবচেয়ে কমবয়সী বিলিয়নিয়ারের তকমা এনে দিয়েছে।

আরও পড়ুনএকজন তরুণ কেন উদ্যোক্তা হবে১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪আরও পড়ুনতরুণ এআই উদ্যোক্তাদের সহায়তায় ওপেনএআইয়ের নতুন উদ্যোগ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের সবচেয়ে কমবয়সী ধনকুবের, ৩১ বছর বয়সেই মালিক ২১ হাজার কোটি রুপির
  • চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে অনলাইনে পছন্দের পণ্যও কেনা যাবে