ডেঙ্গুতে একদিনে ৯ জনের মৃত্যু, সর্বোচ্চ সংক্রমণ
Published: 5th, October 2025 GMT
ডেঙ্গুতে মৃত্যু বাড়ছেই। সদ্য বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও সংক্রমণ হয়েছিল। পরিস্থিতি দেখে একাধিক জনস্বাস্থ্যবিদ ও বিশেষজ্ঞ ওই মাসে বলেছিলেন, অক্টোবর বা নভেম্বর পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠতে পারে। এ মাসের শুরু থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল আটটা থেকে আজ রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত) নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এ সময় একদিনে চলতি বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যায় রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে নয়জনের মৃত্যু হয়েছিল। এটি ছিল এ বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যু। আজ আবার নয়জন মারা গেল।
জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক বে–নজীর আহমদ আজ প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে দিনের পর পর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হচ্ছে আর সরকার নিষ্ক্রিয় দর্শক হিসেবে তা দেখছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সর্বোপরি সরকারের কাছে ডেঙ্গুতে মৃত্যু যেন কাঙ্ক্ষিত হয়ে গেছে। তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। যদি এভাবে দিনের পর দিন এভাবে মৃত্যু ও সংক্রমণ বাড়তে থাকে তবে তা সরকারের নিষ্ক্রিয়তাই প্রমাণ করে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে ৯ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে তার মধ্যে ছয়জনেরই মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকার হাসপাতালগুলোতে। বাকি দুইজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি এবং চট্টগ্রাম বিভাগে। তাদের মধ্যে চারজন মারা গেছে ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, দুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বাকি তিনজন মারা গেছেন ডিএনসিসি কোভিড–১৯ হাসপাতাল, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং কক্সবাজারের ২৫০ শয্যার হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে এক হাজার ৪২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৭১৭ জন পুরুষ এবং ৩২৫ জন নারী। একই সময়ে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৮৩ জন রোগী।
চলতি বছর এর আগে ২৪ ঘণ্টায় এত রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়নি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা.
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩২২ জন ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার দুই সিটির হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫০ জন। ঢাকার দুই সিটির বাইরে বিভাগভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছে বরিশাল বিভাগে। এ বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা হয়েছে ১৯৫ জন। এর মধ্যে বরগুনার হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৬৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সভিত্তিক রোগী ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
দেশে ২০০০ সালে যখন নতুন করে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হয় তখন তা ছিল মূলত রাজধানীকেন্দ্রিক রোগ। কিন্তু দিন দিন এটা ছড়িয়ে গেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গত বছর থেকেই ডেঙ্গু ঢাকার বাইরে ছড়িয়েছে ব্যাপকহারে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ঢাকার বাইরে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৪৭৮ জন। আর ঢাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৪২৯ জন।
জনস্বাস্থ্যবিদ বে–নজীর আহমদ বলছিলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও এখানে বিশেষ করে মশা নিয়ন্ত্রণে কিছু উদ্যোগ আছে। তাদের অভিজ্ঞতাও আছে। কিন্তু দেশের অন্যত্র এটা প্রায় অনুপস্থিত। ঢাকার বাইরে, বিশেষ করে পৌরসভাগুলোতে মশা নিয়ন্ত্রণে প্রায় কোনো উদ্যোগই নেই। ডেঙ্গু পরিস্থিতি এবার সত্যিই খুব ভীতিকর।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জনস ব স থ য জন র ম ত য পর স থ ত স ক রমণ হয় ছ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আহমদ রফিকের মৃত্যুতে সংস্কৃতি উপদেষ্টার শোক
ভাষাসংগ্রামী, কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
তিনি বলেছেন, আহমদ রফিক আমাদের মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার সংগ্রামে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছেন। পাশাপাশি সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজচিন্তায় তার অবদান ছিল অনন্য। তিনি আজীবন মুক্তচিন্তা, মানবিক মূল্যবোধ ও প্রগতির পক্ষে কলম চালিয়েছেন এবং প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
সাংবাদিক শহীদ রানার বাবার ইন্তেকাল
বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে ছাত্র ফ্রন্টের শোক
সংস্কৃতি উপদেষ্টা আরো বলেছেন, আহমদ রফিকের প্রয়াণে জাতি এক সত্যিকারের জ্ঞানী মানুষকে হারাল। তার চিন্তা, কর্ম ও আদর্শ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দিকনির্দেশনা দেবে।
তিনি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আহমদ রফিকের মৃত্যুতে আরো শোক জানিয়েছে বাংলাদেশে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।
রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে মারা যান আহমদ রফিক। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
ঢাকা/এএএম/রফিক