ইসির রুচিবোধ নিয়ে সারজিসের প্রশ্ন
Published: 5th, October 2025 GMT
নির্বাচন কমিশনের রুচিবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “যে মার্কাগুলো মানুষের হাসির খোরাক জোগায়, সেই মার্কাগুলো নির্বাচন কমিশনের তালিকায় কিভাবে থাকে? এটাতো তাদেরও রুচিবোধের প্রকাশ। এই জায়গাটা তাদের ঠিক করা উচিত।”
রবিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পঞ্চগড় শের-ই-বাংলা পার্ক সংলগ্ন জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে বিভিন্ন এলাকার মসজিদ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
শাপলাই কেন লাগবে, যে ব্যাখ্যা দিল এনসিপি
পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় হলে দেশ শক্তিশালীভাবে এগিয়ে যাবে: সারজিস
সারজিস আলম বলেন, “নির্বাচন কমিশনের তালিকায় মুলা, বেগুন, খাট, থালাবাটি থাকতে পারে না- এটা আমাদের কেন বলে দিতে হবে? দেশে কি মার্কার অভাব পড়েছে? আমরা আশা করছি, এটা তারা সংশোধন করবে।”
তিনি বলেন, “আইনগত কোনো বাধা না থাকায় আমরা শাপলা ছাড়া ভিন্ন অন্য কিছু ভাবছি না। আমরা সর্বশেষ তাদের সাদা শাপলা, লাল শাপলার অপশন দিয়েছিলাম। যদি একান্তই শাপলার সঙ্গে যদি কিছু এড করতে হয় তাহলেও আমাদের দ্বিমত থাকবে না।”
“আমরা স্পষ্ট দেখছি, নির্বাচন কমিশন স্বেচ্ছাচারিতা করছে। তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করার চেষ্টা করছে। তারা কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমন আচরণ করছে। এটা আমরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না। এর জন্য যদি আমাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হয়, আমরা তা করব। আগামীর নির্বাচনে শাপলা নিয়েই আমরা নির্বাচন করব”, যোগ করেন তিনি।
এনসিপির এই নেতা বলেন, “ভারত মহানন্দা নদীর উজানে তাদের স্লুইস গেটের ৯টি গেট হঠাৎ করে ভোরে খুলে দেওয়ায় বাংলাবান্ধার একটি গ্রাম ঝুঁকিতে পড়েছে। নদীর পাড় ভেঙে যাচ্ছে। আমরা ভারতকে বলতে চাই, তারা যদি আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র হতে চায় তাহলে তাদের আচরণ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মতো হতে হবে। তারা মন চাইল নদীর স্লুইচ গেট খুলে দিল, মন চাইলে আটকে রাখল এমন কাজ করলে বাংলাদেশে এন্টি ইন্ডিয়ান সেন্টিমেন্ট দিনদিন আরো প্রকোট হবে। এটি দুই রাষ্ট্রের সম্পর্কের জন্য পজেটিভ কোনো বার্তা দেবে না।”
তিনি বলেন, “আমরা তাদের কাছে সমতা বা ভ্রাতৃত্বের আচরণ প্রত্যাশা করি। এর পাশাপাশি বলতে চাই- যতদিন তারা শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে না দিচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষের কাছে যে সেন্টিমেন্ট তারা প্রত্যাশা করে তা কখনোই পাবে না।”
এ সময় অন্যদের মধ্যে এনসিপির পঞ্চগড় সদর উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক নয়ন তানবীরুল বারী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালীন সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, অরিয়র্স অব জুলাইয়ের পঞ্চগড়ের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প ইস ইস আম দ র এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
মধ্যরাতে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনা ভয়ের সংস্কৃতিকে আরও শক্তিশালী করছে: টিআইবি
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) চালুর সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একজন সাংবাদিক ও মোবাইল ব্যবসায়ী সংগঠনের এক নেতাকে গভীর রাতে তুলে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, যা আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষার পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে টিআইবি বলেছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মধ্যরাতে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনা নজরদারি ও ভয়ের সংস্কৃতিকে আরও শক্তিশালী করছে। এ ধরনের জবাবদিহিহীন অভিযান কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থার ন্যায় আচরণের পুনরাবৃত্তি এবং সরকারের ঘোষিত মানবাধিকারভিত্তিক সংস্কার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, এনইআইআর চালুর সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার পর ওই দুজনকে তুলে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবির ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘তথ্য যাচাইয়ের জন্য’ তাঁদের আনা হয়েছিল। অপর একটি ব্যাখ্যায় বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্রে ‘সভাপতি’ পদবি ব্যবহার এবং ব্যক্তিগত ফোন নম্বর উল্লেখ করার বিষয়টি খতিয়ে দেখতেই সাংবাদিককে ডাকা হয়। টিআইবি এসব পরস্পরবিরোধী বক্তব্যকে মিথ্যাচার আখ্যায়িত করেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ভিন্নমত দমনে গভীর রাতে কারণ না জানিয়ে বাসা থেকে তুলে নেওয়া, অভিযোগ গোপন রাখা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বক্তব্যে অসংগতি-কর্তৃত্ববাদী নিপীড়নমূলক চর্চা অব্যাহত রাখার উদ্বেগজনক দৃষ্টান্ত। এ আচরণ শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত নয়, বরং রাষ্ট্র সংস্কারের ওপর জনগণের আস্থাকে ধূলিসাৎ করার ঝুঁকি তৈরি করেছে। অভিযোগ থাকলে আইন অনুযায়ী সমন পাঠানো, স্বাভাবিক সময়ে আইনজীবীর উপস্থিতি নিশ্চিত করে জিজ্ঞাসাবাদ করার বাধ্যবাধকতাকে উপেক্ষা করে গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
ইফতেখারুজ্জামান সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা ও নজরদারি সংস্থার আমূল সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, কেবল ব্যক্তি বদল যথেষ্ট নয়; রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার নামে অধিকার হরণের দীর্ঘদিনের সংস্কৃতি দূর না হলে ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর স্বপ্নপূরণ হবে না।
সরকারি নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হলে রাষ্ট্র বিষয়টি জানতে চাইতেই পারে বলে ডিবির এক কর্মকর্তা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে টিআইবি। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারি নীতি বা আইনের সমালোচনা করা নাগরিক ও অংশীজনদের সাংবিধানিক অধিকার। সমালোচনা বা ভিন্নমতকে নিরাপত্তাঝুঁকি হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সংবিধানের ৩৭, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে মতামত প্রকাশ, সমাবেশ করা এবং সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের পূর্ণ অধিকার নাগরিকদের রয়েছে। এনইআইআর নিয়ে প্রশ্ন তোলাকে আইনগত বা নৈতিকভাবে অপরাধ হিসেবে দেখানোর ব্যাখ্যা সরকারকেই দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
টিআইবি মনে করে, এ ঘটনা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার সংকুচিত করার ঝুঁকি তৈরি করেছে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডেরও লঙ্ঘন করছে।