সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর জামিন আবেদন ঢাকার মহানগর দায়রা আদালতেও নামঞ্জুর হয়েছে।

ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফারজানা ইয়াসমিন আজ রোববার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর আইনজীবী গোলাম রব্বানী।

আইনজীবী গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, শাহবাগ থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গত ১১ সেপ্টেম্বর আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর জামিন আবেদন নাকচ করেন ঢাকার চিফ মেট্রপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। ওই জামিন আবেদন চ্যালেঞ্জ করে লতিফ সিদ্দিকীর জামিন আবেদন করা হয় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে। আজ তাঁর জামিন শুনানি হয়। আদালত তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করেন। শিগগিরই লতিফ সিদ্দিকীর জামিন চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।

গত ২৮ আগস্ট সকালে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, শেখ হাফিজুর রহমানসহ অন্যরা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিতে যান। ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজক ছিল ‘মঞ্চ ৭১’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। আলোচনা সভায় প্রথমে বক্তব্য দেন শেখ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, দেশের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে জামায়াত-শিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের জুতার মালা পরাচ্ছে।’

শেখ হাফিজুর রহমানের বক্তব্য শেষ হওয়ার পরই মিছিল নিয়ে একদল ব্যক্তি ডিআরইউ মিলনায়তনে ঢোকেন। একপর্যায়ে তাঁরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে আলোচনায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশের (ডিএমপি) একটি দল এলে তাঁরা পুলিশের কাছে লতিফ সিদ্দিকী, শেখ হাফিজুর রহমান, সাংবাদিক মনজুরুল আলমসহ অন্তত ১৬ জনকে তুলে দেন। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। পরদিন তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। সেদিন লতিফ সিদ্দিকী ছাড়া অন্যরা জামিনের আবেদন করলে আদালত নাকচ করেছিলেন।

২৯ আগস্ট লতিফ সিদ্দিকীকে ঢাকার আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তখন তিনি ওকালতনামায় স্বাক্ষর করতে রাজি হননি। আদালতের প্রতি তাঁর আস্থা নেই বলে তখন তিনি উপস্থিত আইনজীবীদের বলেছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ খ হ ফ জ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ কারাগারে

অগ্রণী ব্যাংকের ১৮৯ কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারি মামলায় ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি একসময় অগ্রণী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ছিলেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ এই আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খন্দকার মশিউর রহমান জানান, আজ ওবায়েদ উল্লাহকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁর পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। দুদকের পক্ষে তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজালাল তাঁকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে আজ সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে ওবায়েদ উল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আবেদনে বলা হয়েছে, আসামির বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রামের আছাদগঞ্জ শাখা থেকে বিতরণকৃত ট্রাস্ট রিসিপ্ট (টিআর) ঋণের মাধ্যমে ৫১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করায় মামলা হয়েছে। বর্তমানে সুদে-আসলে এ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৮৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন। মামলার তদন্ত ও বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে কারাগারে রাখা প্রয়োজন।

ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ ২০২৫ সালের ১৬ জুলাই ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর আগে তিনি রূপালী ব্যাংকের এমডি, অগ্রণী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রামের আছাদগঞ্জ শাখা থেকে নিয়ম ভেঙে ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে ১৮৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

মামলার অপর আসামিরা হলেন অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ আবদুল হামিদ, অগ্রণী ব্যাংকের আছাদগঞ্জ শাখার সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার ও মহাব্যবস্থাপক মোস্তাক আহমেদ, সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক মো. আবুল হোসেন তালুকদার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম, সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক তাজরীনা ফেরদৌসী ও সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. মোফাজ্জল হোসেন। এ ছাড়া মেসার্স মিজান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. মিজানুর রহমান, জাসমীর ভেজিটেবল ওয়েল লিমিটেডের এমডি জহির আহমেদ, ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক টিপু সুলতান ও ফরহাদ মনোয়ারকেও আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, মেসার্স মিজান ট্রেডার্সের নামে ছোলা ও গম আমদানির জন্য ঋণ মঞ্জুর করা হলেও প্রকৃত সুবিধাভোগী ছিল নুরজাহান গ্রুপ ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান জাসমীর ভেজিটেবল ওয়েল লিমিটেড। বেতনভোগী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ অনুমোদন ও উত্তোলন করে। নুরজাহান গ্রুপের একটি বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে শাখায় হিসাব খোলা থেকে শুরু করে হিসাব পরিচালনার জন্য নুরজাহান গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান জাসমীর ভেজিটেবল অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদকে হিসাব পরিচালনার জন্য দেওয়া হয়। নতুন এই প্রতিষ্ঠানকে বিপুল অঙ্কের ঋণ মঞ্জুরি এবং পরে ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্তাবলি যথাযথভাবে পরিপালন নিশ্চিত না করে সুপরিকল্পিতভাবে ব্যাংকের ৫১ কোটি টাকা (বর্তমানে সুদে-আসলে ১৮৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা) আত্মসাৎ করেন আসামিরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিচারব্যবস্থার কার্যকারিতা নিশ্চিতে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি
  • চিফ প্রসিকিউটরের পরামর্শক ও প্রসিকিউশনের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ
  • জুলাই সনদ পাস হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কাঠামোয় পরিবর্তন আসতে পারে: শিশির মনির
  • ফেসবুকে তারেক রহমানকে নিয়ে ‘কটূক্তি’র অভিযোগে মামলার আবেদন খারিজ
  • হাসিনা পালিয়ে যাওয়ায় বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পেরেছে: রুহুল কুদ্দুস
  • এই রায়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে: বদিউল আলম মজুমদার
  • ১৪ মাসের বিচার যদি খুব দ্রুত হয়, তাহলে বলার কিছু নেই: প্রসিকিউটর মিজানুল
  • ফেসবুকে তারেক রহমানকে ‘কটূক্তি’র অভিযোগে মামলার আবেদন
  • ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ কারাগারে
  • ২৭ সাংবাদিক পেলেন দেশসেরা প্রতিবেদনের স্বীকৃতি