প্রবারণার আমেজ নেই রামেসু এলাকায়
Published: 6th, October 2025 GMT
বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কাছে প্রবারণা পূর্ণিমা মানে আনন্দ, মিলন আর উৎসবের দিন। বছরের এই দিনে পাহাড়ের বিহারগুলো সাজে রঙিন আলোকসজ্জায়, নদীতে ভাসে কল্পজাহাজ, ঘরে ঘরে রান্না হয় পায়েস, পিঠা ও নানা মুখরোচক খাবার। ছোট-বড় সবাই পরে নতুন জামা। বিশেষ করে মারমা সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই উৎসব উদ্যাপন করেন সবচেয়ে জাঁকজমকভাবে। তবে এবার উৎসবের আমেজ নেই খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার রামেসু এলাকায়।
সম্প্রতি রামেসু বাজার এলাকায় গুলিতে তিন পাহাড়ির মৃত্যু হয়। এ ছাড়া সহিংসতার আগুনে পুড়ছে রামেসু বাজার এলাকার প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি ও ৪০টির মতো দোকান। এখনো পুড়ে যাওয়া অনেক স্থাপনার ধ্বংসস্তূপ সরানো হয়নি।
গত শনিবার বিকেলে রামেসু বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় বিহারটি একেবারে নিস্তব্ধ। বিহারের দেয়ালেও নেই কোনো আলোকসজ্জা। পাড়াগুলোতে কোনো প্রবারণা উদ্যাপনের কোনো প্রস্তুতি নেই। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে এ সময় কথা হয়। তাঁরা বলেন, প্রতিবছর বৌদ্ধধর্মাবলম্বী পাহাড়িরা প্রবারণার আগে বিহার পরিষ্কার করেন, ফানুস বানান। এবার এলাকায় উৎসবের প্রস্তুতি নেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। বিহারে কেবল নিয়ম রক্ষার আয়োজন রয়েছে।
সবাই জান বাঁচাতে এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছি। এমন অবস্থায় আছি, মনে হয় প্রবারণা পূর্ণিমার আনন্দ আর কখনো আমাদের জীবনে আসবে না।অংসুই মারমা, রামেসু এলাকার বাসিন্দাস্থানীয় মারমা নারী নু মারমা বলেন, বিগত বছরগুলোতে প্রবারণার আগে থেকেই সেলাইয়ের দোকানগুলোতে নতুন জামা বানানোর ব্যস্ততা দেখা যেত। এবার সেই চিত্র নেই। বাজারে চারটি দোকান ছাড়া সব পুড়ে গেছে।
অংসুই মারমা নামের আরেকজন বলেন, ‘এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। কারও বাড়িতে গোসল করি, কারও বাড়িতে খাই। জীবনটা কেমন যেন থেমে গেছে। আমাদের তিন ভাই–বোনের পাকা আর আধা পাকা তিনটি বাড়ি ছিল। সবার বাড়ি লুটপাট করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। একজনের বাড়িও যদি অক্ষত থাকত মনে শান্তি পেতাম।’ তিনি বলেন, ‘সবাই জান বাঁচাতে এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছি। এমন অবস্থায় আছি, মনে হয় প্রবারণা পূর্ণিমার আনন্দ আর কখনো আমাদের জীবনে আসবে না।’
পুড়ে যাওয়া একটি ঘর। গত শনিবার রামেসু এলাকায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের সঙ্গে জয়ের পর শ্রীমঙ্গলের বাড়িতে শমিত, মানুষের ভিড়, উৎসব
বাংলাদেশ জাতীয় দলে যোগ দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পৈতৃক বাড়িতে গিয়েছেন ফুটবলার শমিত সোম। ভারতের বিরুদ্ধে ২২ বছর পর জয়ের আনন্দ নিয়ে আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে তিনি শ্রীমঙ্গলের দক্ষিণ উত্তরসুর গ্রামে পৌঁছালে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
পরিবারের সদস্যদের উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি কানাডায় জন্ম নেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ফুটবলারকে একনজর দেখতে আশপাশের মানুষ ছুটে আসেন। শমিত সোম গাড়ি থেকে নামতেই মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে বরণ করে নেন পরিবারের সদস্যরা। পরে বাড়িতে প্রবেশ করেন ২৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
আগে অনেকবার এসেছি। তবে জাতীয় দলে খেলার পর এটাই প্রথমবার। এবারের অনুভূতিটা একদমই আলাদা।শমিত সোম, ফুটবলার, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলশমিত সোমের আসার খবরে কয়েক দিন ধরেই তাঁর পৈতৃক বাড়িতে উৎসবের আমেজ। স্বজনেরা সুন্দর করে ঘরবাড়ি সাজিয়েছেন। বাড়িতে তাঁর ফুটবল খেলার ছবি দিয়ে ব্যানার টানানো হয়েছে। আগে অনেকবার এসেছেন, তবে বাংলাদেশ দলে যোগ দেওয়ার পর এবারই প্রথম যাওয়া। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে জয় নিয়ে ফেরায় উৎসব আরও বেড়ে যায়।
শমিত সোম গাড়ি থেকে নামতেই মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে বরণ করে নেন পরিবারের সদস্যরা। বুধবার সকালে শ্রীমঙ্গলের দক্ষিণ উত্তরসুর গ্রামে