এক সন্ধ্যার দাম প্রায় ১৫ হাজার ডলার—শুধু আলাপ, নৈশভোজ আর কিছু অনন্য অভিজ্ঞতার জন্য। যিনি নিলামে এই বিরল সুযোগ পেয়েছেন, তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

সিঙ্গাপুরে সম্প্রতি এক দাতব্য নিলামে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যাংক ডিবিএস গ্রুপের প্রধান নির্বাহী ও পরিচালক ট্যান সু শানের সঙ্গে এমনই এক সন্ধ্যা কাটানোর সুযোগ বিক্রি হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার ৭৯০ মার্কিন ডলারে, যা সিঙ্গাপুরের ১৮ হাজার ৯০০ ডলার এবং বাংলাদেশের ১৮ লাখ টাকার মতো। সিঙ্গাপুরভিত্তিক নিলাম প্রতিষ্ঠান সথেবিজ এ নিলামের আয়োজন করে।

সথেবিজ জানায়, এই প্যাকেজের মধ্যে আছে নৈশভোজ–পূর্ব শ্যাম্পেইন, ছয়জন অতিথির জন্য ট্যান সু শানের আয়োজিত ব্যক্তিগত নৈশভোজ ও সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল গ্যালারিতে বিশেষ ভ্রমণ। গ্যালারিটি দেশটির জাতীয় ঐতিহাসিক ভবনে অবস্থিত।

নিলাম প্রতিষ্ঠানটি জানায়, সুন্দর পরিবেশে এই নৈশভোজ হবে অনুপ্রেরণামূলক আলাপচারিতা ও সঙ্গের বিরল সন্ধ্যা—যেকোনো সূক্ষ্ম রুচির দরদাতার জন্য এটি অনন্য সুযোগ।

ডিবিএস ব্যাংকের এক মুখপাত্র সিএনবিসিকে বলেন, ন্যাশনাল গ্যালারি সিঙ্গাপুরকে দীর্ঘদিন ধরে সহায়তা করে আসছে ডিবিএস। তার অংশ হিসেবেই ট্যান সু শানের এ উদ্যোগ।

ডিবিএস এ গ্যালারির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অংশীদার। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে ১ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার অনুদান দেয় তারা।

চলতি বছরের মার্চ মাসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম ব্যাংক ডিবিএসের প্রধান নির্বাহী নিযুক্ত হন ট্যান সু শান। ব্যাংকিং ও সম্পদ ব্যবস্থাপনায় তাঁর ৩৫ বছরের বেশি সময়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে। মর্গ্যান স্ট্যানলি ও সিটি গ্রুপে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর ২০১০ সালে তিনি ডিবিএসে যোগ দেন কনজ্যুউমার ব্যাংকিং ও ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের প্রধান হিসেবে। তিনি ব্যাংকটির প্রথম নারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি।

বিশ্বজুড়ে দাতব্য নিলামে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী বা তারকাদের সঙ্গে নৈশভোজের সুযোগ দেওয়া এখন প্রচলিত এক রীতি। এ ক্ষেত্রে অগ্রণী নাম হলো বিনিয়োগগুরুখ্যাত মার্কিন বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতি ওয়ারেন বাফেট। তাঁর সঙ্গে এক নৈশভোজের জন্য ২০২২ সালে এক দরদাতা ১ কোটি ৯০ লাখ ডলারের বেশি দিয়েছিলেন। সেই অর্থ অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক এক দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করা হয়। ২০১৪ সালেও সিঙ্গাপুরের এক নাগরিক বাফেটের সঙ্গে দুপুরের খাবারের সুযোগ পেতে ২০ লাখ ডলারের বেশি ব্যয় করেন।

ন্যাশনাল গ্যালারি সিঙ্গাপুরের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এবারের এই বড় অনুষ্ঠানে ট্যান সু শানের নৈশভোজ ছিল অন্যতম আকর্ষণ। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ওই নিলাম ও অনুদানের মাধ্যমে সংগ্রহ হয় ২০ লাখ ৪০ হাজার ডলারের বেশি।

গ্যালারির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিল্পকে সবার জন্য উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে এই নতুন প্রদর্শনীর আয়োজন। সেই সঙ্গে গবেষণার পরিসর সম্প্রসারণ এবং শিশু, প্রবীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য নানা কর্মসূচি চালু করাও এর লক্ষ্য।

সথেবিজের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত এ নিলামে ৯০টির মতো বিরল শিল্পকর্ম বিক্রি হয়। এর মধ্যে চীনের সমকালীন শিল্পী লি হুয়াইয়ের একটি চিত্রকর্ম বিক্রি হয় ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৪১০ মার্কিন ডলারে। এই গ্যালারিতে নিলামে সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রি হওয়া শিল্পকর্মের রেকর্ড এটি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড ব এস র জন য সন ধ য

এছাড়াও পড়ুন:

ওষুধ আনতে বেরিয়ে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত

হাসপাতাল থেকে ওষুধ আনতে বাসা থেকে স্ত্রীসহ বেরিয়েছিলেন আবদুর রশীদ (৭৯)। তবে হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছানো হয়নি তাঁর। এর আগেই পথে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ডেমরার কোনাপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আবদুর রশীদ পরিবারের সঙ্গে ডেমরার ডগাইর পশ্চিমপাড়ায় থাকতেন।

আবদুর রশীদের নাতি তাহসিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর দাদা-দাদি সকালে ডেমরার কোনাপাড়ার বাসা থেকে বের হন। তাঁরা রিকশায় ডেমরার কোনাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে যান। সেখানে রিকশা থেকে নেমে বঙ্গবাজারসংলগ্ন সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ওষুধ নিতে যাওয়ার জন্য বাসে উঠতে হাঁটতে থাকেন। একপর্যায়ে বেপরোয়া গতির একটি কাভার্ড ভ্যান বৃদ্ধ রশীদকে ধাক্কা দিলে তিনি রাস্তায় ছিটকে পড়েন।

তাহসিন জানান, তাঁর দাদির সামনে দাদা দুর্ঘটনার শিকার হন। তবে তিনি অক্ষত আছেন। তাঁর দাদাকে প্রথমে সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে বেলা আড়াইটার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বৃদ্ধ রশীদকে ধাক্কা দেওয়া যানটি শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ