সুনামগঞ্জে আদালত প্রাঙ্গণে সাবেক স্বামীর ছুরিকাঘাতে নারীর মৃত্যু
Published: 6th, October 2025 GMT
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় আদালত প্রাঙ্গণে সাবেক স্বামীর ছুরিকাঘাতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম শরীফা আক্তার (২৮)। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ধর্মপাশা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এদিকে ছুরিকাঘাতের পর পালানোর চেষ্টাকালে লোকজন শরীফার সাবেক স্বামী আক্তার হোসেনকে (৪০) আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
ধর্মপাশা থানার পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার দেওথান গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে শরীফার সঙ্গে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার কান্দাপাড়া গ্রামের হেকিম মীর্জার ছেলে আক্তার হোসেনের বিয়ে হয় ১০ বছর আগে। তাঁদের সাড়ে তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে। এক বছর ধরে পারিবারিক নানা বিষয়ে দাম্পত্য কলহ চলছিল। ছয় মাস আগে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। পরে আক্তার হোসেন তাঁর মেয়েকে নিজের হেফাজতে পাওয়ার দাবিতে আদালতে মামলা করেন। আজ মামলার হাজিরার দিন ছিল।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে আইনজীবীর পরামর্শের জন্য আদালত প্রাঙ্গণে অপেক্ষা করছিলেন শরীফা আক্তার। এ সময় আকস্মিকভাবে পেছন থেকে এসে আক্তার হোসেন তাঁর পিঠে ছুরিকাঘাত করেন। পালানোর চেষ্টা করলে আদালত চত্বরে উপস্থিত লোকজন তাঁকে ধরে ফেলেন এবং পুলিশের কাছে ছুরিসহ হস্তান্তর করেন।
আহত শরীফাকে দ্রুত ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।শরীফার ছোট ভাই লিমন মিয়া বলেন, হাসপাতালে বেলা দুইটার দিকে চিকিৎসকেরা বোনকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ নেওয়া হয়েছে। তিনি বোনের হত্যাকারীর ফাঁসি চান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শরীফার চাচা মো.
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, সাবেক স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনায় জড়িত স্বামী আক্তার হোসেন থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। ধারালো ছুরিটি জব্দ করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
তিস্তাসহ ৩ নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে, ৪ জেলায় সাময়িক বন্যার পূর্বাভাস
রংপুর বিভাগের তিস্তা, দুধকুমার ও ধরলা নদ–নদীর পানি আগামী দুই দিন দ্রুত বাড়তে পারে। আর এতে এসব নদ–নদীসংলগ্ন এলাকায় সাময়িক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। দেশের ভেতরে এবং উজানে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। আজ রোববার সকালে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেওয়া সতর্কবার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়।
দুই দিন আগেই বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এটি স্থল গভীর নিম্নচাপ হয়। তবে গতকাল থেকেই এটি দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি এখন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা ও বিহার রাজ্যে অবস্থান করছে। তবে এর প্রভাব পড়েছে ভারতের এসব রাজ্যসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে। আজও রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বড় এলাকাজুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলেছে আবহাওয়া অফিস।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ভেতরে রংপুর বিভাগে এবং উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে এবং সংলগ্ন উজানে ভারতের রাজ্যগুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদ–নদীর পানি আগামী দুই দিন দ্রুত বাড়তে পারে। এসব নদ–নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নদ–নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
উত্তরের এসব নদ–নদীর পাশাপাশি সোমেশ্বরী, ভুগাই-কংস নদ–নদীর পানি আগামী দুই দিন বাড়তে পারে। এসব নদ–নদীর কাছাকাছি নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তরের আরও কয়েকটি নদ–নদী যেমন করতোয়া, যমুনেশ্বরী, পুনর্ভবা, টাঙ্গন, আত্রাই, আপার-আত্রাই, মহানন্দা, ঘাঘটের পানিও আগামী দুই দিন বাড়তে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান আজ প্রথম আলোকে বলেন, তিস্তা ও অন্য নদ–নদীর পানি বাড়তে পারে হঠাৎ বৃষ্টির কারণে। এতে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তবে দুই দিন পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বৃষ্টিও কমে আসতে পারে।