টেস্ট অভিষেককে হ্যাটট্রিকে রঙিন করে তুলতে পেরেছেন মাত্র তিনজন বোলার। বিস্ময়করভাবে শেষ দুজনের সেই কীর্তির তারিখটা কিভাবে যেন মিলে গেছে! ১৮ বছর আগে–পরের দুই ৯ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের অফ স্পিনার পিটার পেথেরিক ও অস্ট্রেলিয়ার পেসার ডেমিয়েন ফ্লেমিংয়ের ওই দুই হ্যাটট্রিক। এই দুজনের আগে টেস্ট অভিষেকে হ্যাটট্রিকের কীর্তিতে প্রায় ৪৬ বছর নিঃসঙ্গ হয়ে ছিলেন ইংল্যান্ডের পেসার মরিস অ্যালম। তাঁর হ্যাটট্রিকটাও ৯ অক্টোবরে হলে একটু বেশিই বাড়াবাড়ি হয়ে যেত। সেজন্যই হয়তো তা হয়নি। অ্যালমের হ্যাটট্রিকটা ১৯৩০ সালের ১০ জানুয়ারি।

টেস্ট অভিষেককে কীভাবে রাঙানোর স্বপ্ন দেখতে পারেন একজন ক্রিকেটার? ব্যাটসম্যান হলে উত্তরটা খুব সহজ—সেঞ্চুরি করে। কিন্তু একজন বোলারের স্বপ্নের অভিষেক? তা ইনিংসে ৫ উইকেট হতে পারে, হয়তো ম্যাচে ১০ উইকেটও। তবে টেস্ট অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করে ফেলা? মনে হয় না কোনো বোলার স্বপ্নেও তা ভাবেন।

প্রথম কারণ তো অবশ্যই এটা যে হ্যাটট্রিক বলেকয়ে হয় না। টেস্ট রেকর্ড ঘাঁটলে দেখবেন, বিখ্যাত অনেক বোলারেরই পরপর ৩ বলে ৩ উইকেট নেওয়ার এই অনির্বচনীয় অনুভূতির সঙ্গে পরিচয় হয়নি। সেখানে টেস্ট অভিষেকেই হ্যাটট্রিকের কথা কীভাবে কারও কল্পনায় আসবে! কিন্তু ক্রিকেট যে কখনো কখনো কল্পনাকে হার মানানো কিছুও উপহার দিয়ে বসে! টেস্ট অভিষেকেই হ্যাটট্রিককেও রাখতে পারেন সেই তালিকায়। এত বছরের টেস্ট ইতিহাস, কত বোলারের অভিষেক হয়েছে এই সময়ে, কিন্তু হ্যাটট্রিক? তা করতে পেরেছেন মাত্র তিনজন।

আরও পড়ুনইমরানকে লিডার বললে ‘এল’টা বড় হাতে লিখুন০৫ অক্টোবর ২০২৫

এমন স্মরণীয় একটা সূচনার পরও কারও ক্যারিয়ারই কিন্তু বলার মতো কিছু নয়। মরিস অ্যালম, পিটার পেথেরিক ও ডেমিয়েন ফ্লেমিংয়ের মধ্যে একমাত্র ফ্লেমিংই পেরেছেন টেস্ট সংখ্যাকে দুই অঙ্কে নিয়ে যেতে। ২০ টেস্টে ৭৫ উইকেটকে ভালোই বলতে হয়, কিন্তু হ্যাটট্রিক দিয়ে শুরুর কথা মনে রাখলে? তখন কি মনে হয় না আরও বেশি কিছু হওয়া উচিত ছিল! হয়নি; কারণ, দারুণ এই সুইং বোলারকে একসময় টেস্টের চেয়ে ওয়ানডেতেই বেশি কার্যকর বলে ভাবতে শুরু করেন অস্ট্রেলিয়ান নির্বাচকেরা। ৮৮টি ওয়ানডেতে ১৩৪ উইকেটে সেটির প্রমাণও আছে।

ফ্লেমিং তা-ও ২০টি টেস্ট খেলেছেন, টেস্ট অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করায় তাঁর দুই পূর্বসূরি মরিস অ্যালম ও পিটার পেথেরিকের ক্যারিয়ার তো ৫ আর ৬ টেস্টেই শেষ। মরিস অ্যালমের কীর্তিটা শুধু হ্যাটট্রিকেই সীমাবদ্ধ নয়। টেস্ট অভিষেকে হ্যাটট্রিকে যেমন তিনি প্রথম, তেমনি টেস্টে ৫ বলে ৪ উইকেট নেওয়ায়ও।

এই পরিসংখ্যান থেকে অবশ্য ওয়ানডে বোলার হিসেবে ফ্লেমিংয়ের আসল বিশেষত্বটাই জানার উপায় নেই। জানার উপায় নেই যে তিনি ছিলেন ‘শেষ ওভারের জাদুকর’। স্নায়ুক্ষয়ী উত্তেজনা আর নার্ভাসনেস জয় করে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন অস্ট্রেলিয়াকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিখ্য্যাত ১‌৯৯৬ ও ১৯৯৯—পরপর দুই বিশ্বকাপের দুই সেমিফাইনাল।

সতীর্থদের সঙ্গে ফ্লেমিংয়ের উইকেট উদযাপন।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ডিপো থেকে তেল চুরি তদন্তে কমিটি করেছে জ্বালানি বিভাগ

রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি যমুনা অয়েলের ফতুল্লা ডিপো থেকে তেল চুরির ঘটনা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এর আগে ‘সরকারি ডিপো থেকে পৌনে ৪ লাখ লিটার ডিজেল গায়েব’ শিরোনামে ১ অক্টোবর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল প্রথম আলো।

একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রস্তাবিত কমিটি করে গতকাল সোমবার অফিস আদেশ জারি করেছে জ্বালানি বিভাগ। এতে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থার প্রধানকে একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি মনোনয়নের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অফিস আদেশে বলা হয়, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ফতুল্লা ডিপো থেকে তেল চুরি–সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর সঙ্গে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনের অনুলিপিও যুক্ত করা হয়েছে।

কমিটির কার্যপরিধিতে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে দায় নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ রোধকল্পে সুপারিশ প্রদান করবে কমিটি। এতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি), যমুনা অয়েল কোম্পানি, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে একজন করে প্রতিনিধি রাখার কথা বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, জ্বালানি তেল চুরি ও অপচয় রোধে ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন নির্মাণ করেছে সরকার। এ পাইপলাইনে তেল সরবরাহ চালু হয়েছে গত জুনে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় মূল টার্মিনাল থেকে সরাসরি তেল আসছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়। এর মধ্যেও যমুনা অয়েল কোম্পানির ফতুল্লা ডিপোয় দুই দফায় গায়েব হয়ে গেছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার লিটার ডিজেল।

তেল গায়েবের বিষয়টি ইতিমধ্যে আমলে নিয়ে ফতুল্লা ডিপোর ২২ ও ২৩ নম্বর ট্যাংকের সক্ষমতা পুনরায় যাচাই করতে নির্দেশনা দিয়েছে যমুনা অয়েল কোম্পানি। একই সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করতে একটি কমিটি করা হয়েছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর যমুনার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো অপারেশন বিভাগের এক চিঠি বলছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইনের মাধ্যমে ২৪ জুন তেল সরবরাহ শুরু হয়। ফতুল্লা ডিপোতে তেল গ্রহণ সমাপ্ত হয় ৪ জুলাই। এতে ২ লাখ ৬২ হাজার ৮০৪ লিটার তেল ক্ষতি হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ১৪ সেপ্টেম্বর তেল আসা শুরু হয়, যা শেষ হয় ২২ সেপ্টেম্বর। এবার ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৬১৪ লিটার।

যমুনার চিঠিতে আরও বলা হয়, ট্যাংকে গভীরতা অনুযায়ী তেলের পরিমাণগত পার্থক্য রয়েছে। তাই পুনরায় সক্ষমতা যাচাই করতে ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর আরেকটি চিঠিতে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এতে পাইপলাইন কোম্পানির একজনকেও রাখা হয়েছে। কমিটি ইতিমধ্যে ফতুল্লা পরিদর্শন করেছে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে দেখছে। এ সপ্তাহের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে যমুনার ফতুল্লা ডিপোয় তেল চুরির ঘটনা তদন্তে ২ অক্টোবর মহাব্যবস্থাপককে (বণ্টন ও বিপণন) প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে বিপিসি। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা তাদের।

আজ মঙ্গলবার বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, জ্বালানি তেল চুরি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত মোটামুটি শেষের দিকে। শিগগিরই এ নিয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

আরও পড়ুনসরকারি তেলের ডিপো থেকে পৌনে ৪ লাখ লিটার ডিজেল গায়েব০১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হামজাকে আটকাতে কী কৌশল হংকং কোচের
  • চট্টগ্রাম চেম্বার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন ৫ প্রার্থী
  • বগুড়ায় বিষাক্ত মদ্যপানে অসুস্থ একজনের মৃত্যু, চারজন চিকিৎসাধীন
  • টিভির লাইসেন্স নিয়ে সারজিস ও আজাদ মজুমদারের বক্তব্যে যে বিষয় নেই
  • চিত্রনায়ক জসিমকে হারানোর ২৭ বছর
  • দেশে ৫০টি মিডিয়া থাকলে ৪০টিতেই প্রভাব খাটাচ্ছে বিএনপি: সারজিস
  • বাংলাদেশের মেসি—প্রশংসা শুনে হামজা বললেন, ফুটবল একজনের খেলা নয়
  • ডিপো থেকে তেল চুরি তদন্তে কমিটি করেছে জ্বালানি বিভাগ
  • ফিফপ্রোর প্রতিবেদন: অতিরিক্ত খেলার চাপ খেলোয়াড়দের শেষ করে দিচ্ছে