স্রেফ সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান যতক্ষণ থাকলেন ততক্ষণ মিরপুর উন্মাতাল থাকল। ২২ গজে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটল। এরপর যা হলো তা চিরচেনা মিরপুরের উইকেটের প্রতিচ্ছবি। চলুন পরিসংখ্যানটায় চোখ বুলনো যাক।
টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে, ১৫১ বলে সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান ১৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়লেন। তাতে বেশ কিছু অর্জন যুক্ত হয় তাদের নামের পাশে। সেঞ্চুরির সুযোগ ছিল দুজনেরই। কিন্তু কেউই পারেননি তিন অঙ্ক ছুঁতে।
আরো পড়ুন:
টেস্ট অধিনায়কের শর্ট লিস্টে চারজন!
লিটন ফিরলেন টি-টোয়েন্টিতে, সৌম্য-সাইফ উদ্দিন নেই
সেখান থেকে ম্যাচের বাকি ১৮ উইকেটে মাত্র ২৩৭ রান যোগ হলো। ৩৩০ বলেই ম্যাচের নিষ্পত্তি! ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ২৯৬ রান করে তাদেরকে ১১৭ রানে আটকে দেয় বাংলাদেশ। ৩০.
টানা চার ওয়ানডে সিরিজ হারের পর বাংলাদেশ পেল সিরিজ জয়ের স্বাদ। যা নিঃসন্দেহেই ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পায়ের নিজের জমিন শক্ত করবে। অধিনায়ক মিরাজেরও প্রোফাইল ভারী হলো। ১৩ ম্যাচে ৩টি জয় তার নামের পাশে।
মিরপুরে পারফরম্যান্স উঠা-নামার চিত্র নতুন নয় একেবারেই। সৌম্য ও সাইফ দিনের শুরুতে যেটা করলেন তা কল্পনাকেও হার মানায়। সাইফ ফর্মে ছিলেন। তার থেকে বাড়তি প্রত্যাশা ছিল। সৌম্যর জন্য ছিল পরীক্ষার মঞ্চ। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সেই পরীক্ষায় শুধু পাশ করলেন না, ম্যাচের নায়কও তিনি।
উইকেটে বল স্পিন করছিল। বল ছোবল দিচ্ছিল এদিক-সেদিক। কিন্তু সৌম্য ও সাইফ পরিস্থিতি সামলে যেভাবে প্রতি আক্রমণ চালিয়েছেন তা মুগ্ধ করেছে সবাইকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের নাকানিচুবানি খাইয়ে চার-ছক্কার জোয়ার বইয়ে দেন। যেভাবে রান করেছেন, যে প্রক্রিয়ায় তাদের ব্যাটিং এগিয়েছে তা মন জয় করে নিয়েছে ক্রিকেটপ্রেমিদের।
বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ২৫.২ ওভারে ১৭৬ রান করেন তারা। সাইফ হাসান রোস্টন চেজকে উড়াতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন ৭২ বলে ৮০ রানে। তার ইনিংসে ছিল ৬টি করে চার ও ছক্কা। যা ছিল তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি।
১৪তম ফিফটি পাওয়া সৌম্য সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। কিন্তু ৯ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয় তাকে। ৮৬ বলে ৯১ রান করেন ৭ চার ও ৩ ছক্কায়। জোড়া সেঞ্চুরির সূবর্ণ সুযোগ ছিল দুই ওপেনারের। কিন্তু দুজনই হাতছাড়া করেছেন। তাতে এক আকাশ হতাশা নিয়ে দুজনই ফেরেন ড্রেসিংরুমে।
তবে বেশ কিছু অর্জনে তারা নিজেদেরকে যুক্ত করেছেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে ৪৫ ইনিংস পর উদ্বোধনী জুটিতে শতরানের দেখা পায় বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এটিই সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি। এছাড়া উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। মিরপুরে যেকোনো উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি।
এতো অর্জনের পর হুট করে আবার মিরপুর চেনা রূপে। নতুন ব্যাটসম্যানদের জন্য স্পিনাররা দৈত্য রূপে হাজির হলেন। আকিল, রোস্টন, আথানজে ও খাইরে পিয়েরা বল করলেন দুর্দান্ত। তাতে একটা সময় মনে হচ্ছিল দলের রান আড়াইশও যাবে না। শেষে দলকে বাঁচান সোহান (১৬) ও মিরাজ (১৭)। মাঝে তিনবার সুযোগ পেয়ে শান্ত ৪৪ ও তাওহীদ ২৮ রান করে রাখেন অবদান।
গত ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোনো পেসারকে বল করাননি। আজ অবশ্য গ্রেভস হাত ঘুরিয়েছেন ৭ ওভার। তাদের সেরা বোলার ছিলেন ৪ উইকেট নিয়ে আকিল হোসেন।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের স্পিনারদের দাপটে স্রেফ অসহায় ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। থিতু হওয়ার আগেই শেষ তাদের লড়াই। একাদশে মোস্তাফিজুর রহমান থাকলেও তাকে বোলিংয়ে আনার প্রয়োজন অনুভব করেননি মিরাজ। প্রথমবারের মতো কোনো পেসার বোলিং করা ছাড়া প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট পেল বাংলাদেশ। নাসুম ও রিশাদ ৩টি করে এবং তানভীর ও মিরাজ ২টি করে উইকেট নেন। ১৭৯ রানে জয় বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়।
২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে ৩৬তম সিরিজ জয়ের আনন্দ পেয়েছে বাংলাদেশ। ১-১ ব্যবধানে সমতায় থাকা সিরিজের পর ফাইনাল ম্যাচ জিতে এর আগে সিরিজ জিতেছে পাঁচবার। অর্জনের পাতায় আজ নতুন অধ্যায় শুরু হলো। বোলিংয়ে ১২ উইকেট ও ব্যাটিংয়ে ৬৮ রান করে সিরিজ সেরা রিশাদ হোসেন।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর উইক ট যবধ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিক হেনস্তা: একজনকে শাস্তি দিল বিএনপি
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার প্রতিবেদক জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর হামলা, সংঘর্ষ ও হেনস্তার ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ের আইটি সেকশনের সদস্য বিল্লাল হোসেন ফয়সলের এক মাসের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে এক সদস্যের তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বিল্লালের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ডিভি লটারিতে বাংলাদেশের নাম না থাকা নিয়ে বিভ্রান্তির অপচেষ্টা
ডিজিটাল সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষণ দিল পিআইবি
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ১৯ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আমার দেশ পত্রিকার প্রতিবেদক জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর হামলা, সংঘর্ষ ও হেনস্তার ঘটনা ঘটে। ঘটনাটির তদন্তের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ের আইটি সেকশনের সদস্য বিল্লাল হোসেন এক মাসের জন্য তার সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। উক্ত সময়ের মধ্যে তিনি বিএনপির কোনো কার্যালয়ে কর্মরত থাকবেন না বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি