পূজার ছুটির পর আবারো প্রাণ ফিরে পেয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। ছুটি শেষে গত ৫ অক্টোবর খুলেছে বিশ্ববিদ্যালয়। আবারো জমে উঠছে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার। প্রার্থীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে একের পর এক ব্যতিক্রমী ও সৃজনশীল কৌশল। নির্বাচন যেন শুধু ভোটযুদ্ধ নয়, রীতিমতো এক উৎসব।

প্রচারে কেউ গাইছেন গান, কেউ সেজেছেন ঐতিহাসিক চরিত্র, আবার কেউ তৈরি করছেন ব্যতিক্রমী ডিজাইনের প্রচারপত্র।

আরো পড়ুন:

রাকসু নির্বাচন: ১৬ দফা ইশতেহার দিল গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ

রাকসু: ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ভোটারদের অর্থ প্রদানের অভিযোগ শিবিরের

ছাত্রদল সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর প্রচারর জন্য বেছে নিয়েছেন প্রজাপ্রতির অনুকরণে ডিজাইন করা লিফলেট। একই প্যানেলের এজিএস প্রার্থী জাহিন বিশ্বাস এষা প্রচারপত্র তৈরি করেছেন হাতের পাঁচ আঙুলের আদলে। একই দলের আরেক সংস্কৃতি সম্পাদক প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কাফী সেজেছেন নবাব সিরাজউদ্দৌলার বেশ।

শিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী জায়িদ হাসান জোহা প্রচারে সেজেছেন কৃষক, আর গাইছেন ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরা গান।

আধিপত্যবিরোধী ঐক্য প্যানেলের জিএস প্রার্থী সালাউদ্দিন আম্মার তৈরি করেছেন দৈত্যরূপী প্রচার পোস্টার। সাথে থাকছে ব্যঙ্গাত্মক প্রচারপত্র, যাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির আদলে ব্যঙ্গচিত্র ব্যবহার করা হয়েছে।

সহ-মিডিয়া সম্পাদক প্রার্থী নূর-নবী প্রচারপত্রে এনেছেন আবেগের ছোঁয়া মাকে সঙ্গে নিয়ে করছেন গণসংযোগ।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও নজর কেড়েছেন কাজী সফিউল কালাম (কেএসকে হৃদয়)। তিনি গান গেয়ে গেয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রচার চালাচ্ছেন।

এ বিষয়ে ছাত্রদল সমর্থিত এজিএস পদপ্রার্থী জাহিন বিশ্বাস এষা বলেন, “নির্বাচনে আমাদের অনেক ব্যালট নম্বর মনে রাখতে হবে। সেই ক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে ইউনিক কিছু একটা করি। যেন শিক্ষার্থীরা মনে রাখতে পারে। আমার ব্যালট নম্বর যেহেতু পাঁচ, সেক্ষেত্রে আমি হাতের আদলে লিফলেট বানিয়েছি। সেখানে পাঁচটি আঙ্গুলের উপর আমি ইশতেহার দিয়েছি। অন্য পাশে বাসের সিডিউল দিয়েছি যেন শিক্ষার্থীদের উপকারে আসে। এটা শিক্ষার্থীরা অনেক ভালোভাবে নিচ্ছে।”

কৃষক বেশে প্রচার চালানো শিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক জায়িদ হাসান জোহা বলেন, “আমি যেহেতু সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক পদে নির্বাচন করছি তাই ভেবেছি প্রচারে একটু বৈচিত্র্য আনার। বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক যে বৈচিত্র্যগুলো রয়েছে, সেগুলো যেন আমার প্রচারের মধ্যে উঠে আসে। এটাকে একইসঙ্গে অনেক মানুষের মধ্যে রিচ করা যাবে এবং সংস্কৃতিও ফুটে উঠবে।”

নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাজে প্রচার চালানোর কারণ জানতে চাইলে ছাত্রদল সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্মের সংস্কৃতি সম্পাদক পদপ্রার্থী কাফী বলেন, “নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন বাংলার স্বাধীনতা রক্ষা করতে। কিন্তু নানা ষড়যন্ত্রের কারণে পরাজিত হন। আজ আমি তার সাজে শুধুই প্রচার চালাতে আসিনি, এসেছি এক ধরনের প্রতিবাদের জায়গা থেকে।”

তিনি আরো বলেন, “মনে হচ্ছে, আমাদের বর্তমান সংস্কৃতির উপর আবারো কোনো লর্ড ক্লাইভের আক্রমণ নেমে এসেছে। সেই প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবেই আমি ভোটারদের কাছে এসেছি। যেন পলাশীর যুদ্ধে নবাব হেরে গেলেও, এই নির্বাচনে আমায় যেন তারা হারতে না দেন। নির্বাচিত হতে পারলে আমি ক্যাম্পাসে মুক্ত ও প্রগতিশীল সংস্কৃতির চর্চা আবারো জোরদার করতে চাই।”

প্রায় তিন যুগ পর আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতিক্ষিত রাকসু নির্বাচন।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সমর থ ত ছ ত রদল

এছাড়াও পড়ুন:

হামাস–ইসরায়েলের সংলাপকে স্বাগত জানাল বাংলাদেশ

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংলাপকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে কূটনীতি এবং সংলাপই যেকোনো সংঘাত সমাধানের একমাত্র উপায়। এই মর্মান্তিক সংকটের অবসান ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক উদ্যোগকে সহজতর করার জন্য অংশীদারদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে ঢাকা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশ আশা করে, এই প্রক্রিয়াটি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, মানবিক সহায়তা প্রবেশ পুনরায় শুরু এবং গাজার জনগণের দুর্ভোগের অবসান ঘটাবে। বাংলাদেশ আরও আশা করে, সংলাপের মাধ্যমে গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে এই কূটনৈতিক প্রক্রিয়া একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত করবে।

গাজায় শান্তি বজায় রাখতে এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ প্রস্তুত বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্তের অনুসরণে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রতি অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে ঢাকা। আর পূর্ব জেরুজালেম হবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময়ে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় পাস হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে বলে সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ